দেশের বাড়ি থেকে একজন মেহমান এসেছেন। শুনলাম তিনি নাকি অসুস্থ। তবে তাঁর ভাবসাব দেখে তেমন কিছু বোঝা যাচ্ছে না।
দুপুরে খাবারের সময় বললাম, চাচা কেমন আছেন?
চাচাজান মাথার টুপি ঠিক করতে করতে বললেন, আলহামদুলিল্লাহ্ ভাল।
আমি বললাম, শুনলাম আপনি অসুস্থ। কী সমস্যা! কিডনি, গ্লুকোজ নাকি হার্ট?
: আরে না ঐগুলা সব ঠিক আছে, খালি মুখে রুচি নাই।
মুখে রুচি নাই শুনলাম কিন্তু দুই পিস পাঙ্গাস মাছ নিল।
আমি বললাম, চাচা আরেকটা দেই?
চাচা বললেন, দিলে দাও। তবে মুখে রুচি নাই, তেমন খাইতে পারি না।
: আচ্ছা নেন, দিলাম আরেক পিস পাঙ্গাস মাছ।
এরপর গরুর মাংস খেলেন তিন পিস। আমি নিজে নেওয়ার সময় তাকে বললাম, চাচা আরেক পিস দিব?
চাচা বলেন, দিলে দাও তবে মুখে রুচি নাই।
বড় এক পিস দিলাম, কিন্তু বুঝতে পারলাম না মুখে রুচির সমস্যাটা কোথায়!
চাচা একটু পর বলে, একটু কাঁচা লবন দাও। সেটাও দিলাম। ভাল কথা মুখে রুচি নাই কিন্তু মাছ মাংস খাওয়ার আগে ছোট মাছ, কচু তরকারী এইগুলাও সব খেয়েছিলেন।
যাক , গ্রাম থেকে এসেছেন, আরাম করে খাক। গ্রাম থেকে আসলেও তার আর্থিক অবস্থা বেশ ভাল, ছেলে থাকে সৌদি আরব।
ভাত খাওয়ার পর তিনি আমার চানাচুরের ডিব্বা দেখে বললেন, এইটা কি চানাচুর নাকি?
: জ্বি চাচা, কিন্তু আপনার তো রুচি নাই!
: তাও দাও দেখি, যদি রুচি ফিরে আসে।
এই কথা বলে ৬২ টাকার প্যাকেটের বাষট্টি ভাগের একষট্টি ভাগ চানাচুর খেয়ে ফেললেন।
আমি বললাম, চা খাবেন?
: দিতে পার, যদিও রুচি নাই! লেবু চা দিও, না না দুধ চা ই দাও, দুধ বেশি দিও, রুচি নাই।
অবশেষে মেহমান বিদায় নিছেন। আমার বউ এসে বলল, চানাচুরের ডিব্বায় চানাচুর কই?
আমি বললাম, কোন চানাচুর?
বউ বলল, ওই যে রুচি ঝাল চানাচুর।
আমি বললাম, রুচি নাই।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন