কিছুদিন আগে ছাত্র শিবিরের এক নেতা নিজের এক বক্তৃতায় বলেছেন, আপনারা যদি আপনাদের সন্তানকে জান্নাতবাসী করতে চান তাহলে তাদেরকে ছাত্র শিবিরে যোগ দিতে বলুন। ছাত্র শিবিরের অভিভাবক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামিও নানান সময়ে কর্মী সংগ্রহের সময় বলে থাকেন, জামায়াত ইসলাম একমাত্র জান্নাতের সুখবর পাওয়া দল। শুধু এমন ঘটনা না, শিবির ও জামায়াতের রয়েছে আরও কিছু অলৌকিক ঘটনা। দলগুলোতে যোগ দেওয়ার পর অলৌকিকভাবে অনেক মানুষের জীবন বদলে গেছে। তারা পেয়েছেন আলোর দিশা। এমনই কিছু ঘটনা নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন।
১#
কিছুদিন আগের ঘটনা। প্রায় ৩০ বছর ধরে ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন জেনজি প্রজন্মের এক তরুণ। রাতে ঘুমাতে পারতেন না, দিনেও ঘুমাতে পারতেন না, হতাশায় চোখের নিচে কালি পড়ে গিয়েছিল। বন্ধু-বান্ধব সবাই হতাশার রোগী বলে বুলি করত। এই হতাশা কাটানোর জন্য কত কী করেছেন! বিটিএসের গান শুনেছেন, মোটিভেশনাল বই পড়েছেন, ডাক্তারের পেছনে খরচ করেছেন কোটি কোটি টাকা। কিন্তু কিছুতেই কিছু কাজ হচ্ছিল না।
এরপর একদিন তার কাছে অলৌকিকতার বার্তা নিয়ে আসলো বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র শিবিরের এক সাথী। আলোর দিশারি হয়ে তাকে নিয়ে নিল শিবিরে। আশ্চর্য! শিবিরে যোগ দেওয়ার ঠিক একদিন পরেই উধাও হয়ে যায় এই তরুণের ডিপ্রেশন। সে রাতে টানা ১৫ ঘণ্টা ঘুমান তিনি। এখন আর তার কোনো ডিপ্রেশন নাই। জীবনে আছে শুধু আশা আর আশা।
তরুণদের পরামর্শ দিয়ে তরুণ বলছেন, আপনারা শিবিরে আসুন। এখানে ডিপ্রেশন, ইনসোমনিয়া, অ্যাংজাইটিসহ সকল ধরনের মানসিক রোগের চিকিৎসা হয়। এক ফাইলই যথেষ্ট।
২#
দীর্ঘদিন ধরে জন্ডিসে ভুগছিলেন আবদুল আজিজ নামের এক তরুণ। চেহারা থেকে শরীর—সব এতটাই হলুদ হয়ে গিয়েছিল যে, তাকে হুট করে দেখলে মনে হতো হিমু। কোথাও প্রস্রাব করলে আশেপাশের পানির উৎসগুলোর পানিও আর বর্ণহীন থাকত না। ডাক্তার বলেছেন, বেশিদিন বাঁচবে না আজিজ। এই হলুদ একদিন তার হলুদিয়া পাখি নিয়ে উড়ে যাবে সাত-আসমানে। ফকির, কবিরাজ, ওঝা সব দেখিয়েছেন। সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালেও চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছিল না।
শেষমেষ উনি শরণাপন্ন হলেন শিবিরের। বিষয়টি এত তড়িৎ গতিতে কাজ করল যে, শিবিরে যোগদানের মনস্থির যেদিন করেছেন সেদিনই আজিজের জীবন হলুদ থেকে হয়ে যায় ফকফকে সাদা। সেরে যায় জন্ডিস। আজিজ ফিরে পান তার সুন্দর জীবন।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আজিজ বলেন, আমার তো জন্ডিস ভালো হয়ে গেছে। আমার চাচাতো ভাইয়ের ছিল কিডনিতে পাথর। শিবিরে যোগ দেওয়ার পরেরদিন প্রস্রাবের সাথে সেই ফুটবলের সমান পাথর বের হয়ে গেছে।
৩#
আশিকের প্রেম হয় না। দেখতে সুন্দর, স্মার্ট আবার সিক্সপ্যাকও আছে। তাও প্রেম হয় না। কোনো এক অদ্ভূত কারণে কোনো নারীই আশিকের সাথে প্রেম করে না। কিছুদিন সিচুয়েশনশিপে থাকলেও হুট করে গোস্টিং করে, হারিয়ে যায়। আশিক ভেবেছিল একটা প্রেমের জন্য হাহাকার করতে করতেই শেষ হবে আশিকের জীবন। কিন্তু আশিক জানত না, কেউ প্রেম না করলেও তার জন্য আছে শিবির। না, শিবিরের কেউ তার সাথে প্রেম করেনি। কিন্তু অদ্ভূতভাবে শিবিরে যোগ দেওয়ার পরই জীবনে প্রেম আসে আশিকের। একটা-দুইটা না। চারটা। আশিক এখন ভালো আছে। দিনের বেলা সাথী আড্ডায় সাংগঠনিক কাজ করে। আর রাতের বেলা গ্রুপ কলে চার প্রেমিকার সাথে প্রেম করে।
৪#
ক্যান্সারের নাকি চিকিৎসা নাই! অনেকেই এমন বলে থাকেন। কোথাও চিকিৎসা না থাকলেও চিকিৎসা আছে শিবিরে। অবাক হওয়ার কিছু নেই, শিবির একই সাথে অর্থোপেডিক, গ্যাস্ট্রোলজি, চর্ম ও যৌন চিকিৎসা প্রদানের পাশাপাশি ক্যান্সারের চিকিৎসাও প্রদান করেন। অনেক যে টাকা-পয়সা খরচ করতে হয় তাও না—জাস্ট শিবিরে যোগদানের ফরম পূরণ করতে হয়। যেদিন পূরণ করবেন সেদিনই রোগ থেকে চিরমুক্তি। একদম গ্যারান্টিসহ।
শিবিরে যোগ দান করে ক্যান্সারের চিকিৎসা নেওয়া মোহাম্মদ কামরুজ্জামান নামের বর্তমান শিবির কর্মী বলেন, শিবির করলে কেমোথেরাপি লাগে না। কর্মী ও সমর্থক ফোরামই আমাদের কেমোথেরাপি।
৫#
বাচ্চা হচ্ছিল না রোকেয়া-শফিক দম্পতির। বিয়ে করেছেন প্রায় ৩০ বছর। অনেক চেষ্টা করেছেন একটা বাচ্চার জন্য। মিশনারি চার্চে গিয়ে প্রার্থনা করেছেন, ডগি আসনে ইয়োগা করেছেন, কাউ বয়দের দোয়া নিয়েছেন, হর্স রাইডিং করেছেন। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না।
ডাক্তার, কবিরাজ, টাকা-পয়সা তো গেছেই অগণিত। ভারত থেকে ইরান, ইরাক থেকে সোমালিয়া—ঘুরেছেন বিভিন্ন দেশের মাজারে মাজারে। কেউ যদি দয়া করে একটা বাচ্চা দেয়। কেউ এই দম্পতিকে একটা বাচ্চা দিতে পারেনি।
সবার হেডম যেখানে শেষ, সেখান থেকেই শিবিরের অলৌকিকতা শুরু। শেষমেষ ৩০ বছর পর এই দম্পতিকে বাচ্চা দিয়েছে শিবির। দুজনই একসাথে শিবিরে যোগদান করেন। যোগদান করার ২০ মিনিটের মধ্যে তাদের কোল জুড়ে আসে এক ফুটফুটে বাচ্চা।
রোকেয়া-শফিক দম্পতি জানিয়েছেন, বড় হয়ে তাদের সন্তানও শিবির করবে।