শেখ হাসিনা, যিনি শুধু একজন রাজনীতিবিদ নন, তিনি একাধারে ১৬ কোটি মানুষের ত্রাণকর্তা, পথপ্রদর্শক, এবং অনেকের মতে, দুর্নীতির নতুন সংজ্ঞা তিনি আবিষ্কার করেছেন। তার জীবন, কর্ম, এবং ত্যাগ এতটাই অনন্য যে তা বাংলার ইতিহাসে একটি আলাদা অধ্যায় দাবি করে।
তিনি এমন এক অনন্য নেত্রী, যেখানেই হাত দিয়েছেন, সেখানে রেখে গেছেন নিজের অদ্বিতীয়তার ছাপ। শুরুতে আমরা জানতাম, তিনি ১৬ কোটি মানুষকে খাদ্য সরবরাহে সব সময় অগ্রগামী। এরপর জানতে পারলাম, তিনি ভোরে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে তার দিন শুরু করেন। আবার শোনা গেল, দেশের অস্থিতিশীলতায় তার রাতে ঘুম আসে না, তিনি নির্ঘুম রাত কাটান। দিন যতই এগিয়েছে, তার অনন্য সব গুণের কথা আমরা জানতে পেরেছি।
সবশেষে জানা গেল, তিনি বাংলার ইতিহাসে সেই শাসক যিনি প্রায় ৮০০ বছর পর দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। এই বিশেষ অর্জনের জন্য তাকে এককভাবে আলাদা উচ্চতায় রাখা যায়। শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা এশিয়া জুড়ে হারিকেন দিয়ে খুঁজলেও তার মতো আর কেউ আছেন কি না, সেটা নিয়েই বিতর্ক হতে পারে। এবং অনুমান করা যায়, সেখানেও হয়তো তিনি সবার ওপরে থাকবেন।
গত ১৫ বছরে দেশের জন্য তিনি যা করেছেন, তা ভোলার মতো নয়। তবে তিনি শুধু দেশের জন্যই কাজ করেননি। নিজের পরিবারের প্রতি তার ভালোবাসাও ছিল অতুলনীয়। দুই সন্তান, জয় এবং পুতুলের জন্য তিনি যা করেছেন, তা যেন পৃথিবীর আর কোনো মা করতে পারেননি। তাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার জন্য দেশের কোষাগার থেকে যে পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাঠানো হয়েছে, তা দিয়ে টাকার পাহাড় বানানো যেত।
নিজের সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে তিনি এতটাই চিন্তিত ছিলেন যে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাঠিয়ে তাদের জন্য স্বপ্নের জীবন নিশ্চিত করেছেন। যে কোনো মা চান তার সন্তানের জীবন হীরের মতো উজ্জ্বল হোক। শেখ হাসিনাও তার সামর্থ অনুযায়ী সেটাই করেছেন।
শুধু নিজের সন্তানদের জন্যই নয়, নিজের বোন এবং তার পরিবারের ভবিষ্যত নিয়েও তার সমান উদার মনোভাব ছিল। বিদেশে টাকা পাঠানোর এই ঐতিহাসিক নজির, অনেকেই হাতেম তাইয়ের উদারতার সঙ্গে তুলনা করতে পারেন।
শেখ হাসিনা যে একজন প্রকৃত মা, সেই উদাহরণ ইতিহাসের পাতায় আজীবন লেখা থাকবে। সন্তানদের যেন কষ্ট করে জীবন কাটাতে না হয় সেজন্য যা করার তিনি তাই করেছেন। শুধু যে নিজের সন্তানদের জীবনের কথা চিন্তা করেছেন সেটা না, নিজের বোনের পরিবারকেও তিনি আরামের জীবন উপহার দিয়ে গেছেন।
তার এই মমত্ববোধ শুধুমাত্র পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। তার আশপাশের নেতা-কর্মীদের প্রতিও ছিল বিশেষ দৃষ্টি। কেউ তার কাছ থেকে খালি হাতে ফেরেনি। দেশের বড় বড় ব্যবসায়ী তার মাধ্যমে বিশেষ সুবিধা পেয়েছেন, এমনকি ঋণ নিয়ে তা ফেরত দেওয়ার প্রয়োজন হয়নি।
এমনকি নিজের পিয়নকেও তিনি অবহেলা করেননি। তার ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে তাকে ৪০০ কোটি টাকার মালিক বানিয়েছেন। শেখ হাসিনা কখনো নিজের কথা চিন্তা করেননি।
শেখ হাসিনা যে শুধু নিজের পরিবারের জন্য কাজ করে গেছেন সেটা কিন্তু না, নিজের আশপাশের মানুষজনকেও তিনি পরিবারের মত স্নেহ করে গেছেন। আপন মানুষদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ ই রাখেন না শেখ হাসিনা সেটা যে কেউ তার আশপাশে থাকলেই বুঝতে পারতেন।
দেশ থেকে চলে যাওয়ার সময় মাত্র কয়েকটি লাগেজ নিয়ে যাওয়া এই নেত্রী গত ১৫ বছরে যা করেছেন, তা পুরো পরিবার এবং তার আশপাশের মানুষের জন্য, নিজের জন্য কিছুই রাখেননি। তার মতো মমতাময়ী মা কি এই দেশ ভবিষ্যতে আবার পাবে?
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন