অনেকেই বলে থাকেন, যথাযথ পরিকল্পনা ও রিসাক্লিংয়ের অভাবের কারণে আমরা আমাদের সম্পদের যথাযথ ব্যবহার করতে পারছি না। তারা রিসাইক্লিংয়ের ক্ষেত্রে জাপান, কোরিয়া এসব দেশের দিকে তাকাতে বলেন। ভাই থামেন, রিসাইক্লিংয়ে আমরাও কম যাই না! ঝটপট দেখে নিন বাঙালির কয়েকটি অনবদ্য রিসাইক্লিং-প্রতিভা এবং এরপর নিজেই বলুন, আমরা কি কম নাকি?
ড্যানিশের কৌটা দিয়ে চাল মাপা
মাছে-ভাতে বাঙালি বটে, তবে ভাতের পরিমাণ মাপার জন্য নেই কোনো নির্ধারিত সরঞ্জাম! তাই 'ড্যানিশ চা-প্রিয় বাঙালি' ড্যানিশের কৌটাকে তৈরি করে নিয়েছে চালের পরিমাপক হিসেবে।
কোক-সেভেন আপের বোতলে পানি
ভোজন শেষে কিংবা মধ্য গগনে সূর্য উঠলে ঢকঢক করে কোক-সেভেন আপ সাবাড় করে ফেলি আমরা। এরপর বোতলগুলোতে পানি ভরে ফ্রিজে সংরক্ষণ করি। 'পানির বোতল' মানেই আমাদের কাছে কোক-সেভেনআপের খালি বোতল!
বিছানার তোষকের নিচে শপিং ব্যাগ ও পলিথিনের গোডাউন
মা-নানুদের উপর আমরা যতই বিরক্ত হই না কেন, খাটকে দুই ইঞ্চি উঁচু হয়ে দেওয়া এই শপিং ব্যাগের গোডাউন কিন্তু ইমার্জেন্সি ব্যাগের সন্ধান করতে গেলে বেশ কাজের!
কাপড় ধোয়া পানি দিয়ে বাথরুম পরিষ্কার
আমাদের কোনোদিন বাথরুম ধোয়ার জন্য আলাদা পানি লাগে না, গোসল করার সময়ই কাজ হয়ে যায়। যদিও এরপরও হেটার্সরা বলবে বাঙালি পানি অপচয় করে!
পুরোনো টি-শার্ট দিয়ে ঘর মোছা
জীবনের কোন না কোন সময়ে আমরা সকলেই শখের কেনা টি-শার্ট বা জামাকে ঘরের ময়লা পানির মধ্যে ধ্বংস হতে দেখেছি। ন্যাকড়া কিংবা পাপোশ হওয়ার ভবিতব্য এড়াতে পারে না পুরোনো কামিজ, প্যান্ট, শার্ট এমনকি জাঙ্গিয়াও!
খাটের নিচটাই আমাদের স্টোররুম
বাঙালির বাড়িতে খালি জায়গা থাকা মানে বুলেটের গতিতে সেখানে স্টোররুম তৈরি হয়ে যাওয়া। তবে খাটের তলা নাগালের মধ্যে থাকে বলে খাটের তলাই স্টোররুম হিসেবে আমাদের প্রথম পছন্দ!
আলমারিতে সাজানো প্লেটের সারি
শোকেসের কাচের প্লেট-পিরিচগুলো আসলে সংরক্ষণ করা হয়, যেন মানবসভ্যতা শেষ হয়ে গেলেও ভিনদেশি প্রাণীরা এসে বাঙালির নিদর্শন দেখতে পারে।
আইসক্রিমের বক্সে মশলা, হরলিক্সের বয়ামে আচার
শুধু শুধু মশলার বাক্স কিনে প্লাস্টিকের ব্যবহার না বাড়িয়ে আইসক্রিমের বাক্সের পুনরায় ব্যবহার এখন আমাদের ঘরগেরস্তের ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। হাজার বছর ধরে হরলিক্স-মালটোভার বয়ামে আচার রেখে আসছে আমার দাদী, তাঁর দাদী, তাঁর দাদি...
পুরোনো ক্যালেন্ডার দিয়ে বই বাঁধাই
বছর শেষে সবচেয়ে অপ্রয়োজনীয় জিনিসটিকেও এভাবে কাজে লাগিয়ে ফেলতে পারে বাঙালিরাই।
কনডমকে বেলুন বানিয়ে খেলা
যে জিনিস শিশুদের জন্মানোতেই বাঁধা দেয়, সেটাকেই বানানো শিশুদের খেলনা... এ যে বিষে বিষক্ষয়! তবে বেলুনের টাকা বাঁচানোর চেয়ে শিশুদের 'এটা কী' প্রশ্নের সহজ ব্যাখ্যা দিতেই মূলত কনডমকে বেলুন হিসেবে বেশি ব্যবহার করা হয়।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন