ধানমন্ডির জাভেদ, এলাকার পরিচিত বেনসনখোর, তার প্রতিদিনের সঙ্গী এক প্যাকেট বেনসন ছাড়া সকাল শুরুই হয় না। কিন্তু মাঝে মাঝেই একটা বিষয় তাকে তীব্র বিরক্ত করে—সিগারেটের বাট নরম, স্বাদ কেমন যেন পানসে, আর তামাক খসে পড়ে। তার প্রিয় ব্র্যান্ড বেনসন কীভাবে এমন মানহীন হতে পারে, এই প্রশ্নে তার মাথা গরম হয়ে যেত প্রায়ই।
যতবারই নকল বেনসনের ফাঁদে পড়েছেন, ততবার দোকানদার থেকে শুরু করে সিগারেট কোম্পানি, এমনকি তাদের পুরো জাতি পর্যন্ত ধুয়ে দিয়েছেন। তিনি মনে মনে শপথ নিয়েছেন, যেই এই নকল সিগারেটের পেছনে আছে, তাদের এমন শিক্ষা দেবেন, যেন তারা সারাজীবন সিগারেট দেখলেই ভয়ে কেঁপে ওঠে।
সম্প্রতি, জাভেদের মনের আশা পূরণ হতে চলেছে। একটি স্ক্যান্ডালে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের নাম উঠে এসেছে। নকল সিগারেটের ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনি কিছু কোম্পানির কাছ থেকে প্রায় তিন কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন। খবরটি জানতে পেরে জাভেদের রাগ যেন আগ্নেয়গিরি হয়ে বিস্ফোরিত হলো।
এই সংবাদটি ফেসবুকে শেয়ার করে জাভেদ লিখেছেন, লাখ লাখ যুবকের প্রাণের সঙ্গী সিগারেটে যে ভেজাল মেশায়, তার ছাপায় আগুন ধরায় দেওনই উচিত। ওরে আমি দেখে রাখব। সামনে পাইলেই এক বছরের শাস্তি দেব। দৈনিক দুই প্যাকেট নকল বেনসন খাওয়াইয়া এর আসল শিক্ষা দিমু।
জাভেদের এই পোস্টে কমেন্ট পড়তে থাকে। একজন লিখেছেন,ভাই, এই লোক নিজে খাইতো এডভান্স গোল্ড, আর আমাদের খাওয়াইসে নকল বেনসন! এরে এমনে এমনে ছাড়লে চলবে না।
জবাবে জাভেদ লিখেছেন,ভাই, এরে আমি এমন এমন ছিদ্র দিয়ে সিগারেট খাওয়াব, যে জীবনে আর নকল বেনসন বানানোর সাহস পাবে না। ওরে এমন শিক্ষা দেব যে, নিজের নাক দিয়ে ধোঁয়া বের করে চিৎকার করবে।
নওফেলকে এক বছরের জন্য দৈনিক দুই প্যাকেট নকল বেনসন খাওয়ানো তার প্রধান পরিকল্পনা। তবে এখানেই শেষ নয়। জাভেদ ঠিক করেছেন, নওফেলকে প্রতিদিন নিজের হাতে সিগারেট ধরিয়ে দেবেন। কোনো দিন মুখে, কোনো দিন নাকে, কোনো দিন হয়তো কান দিয়ে। প্রতিদিনের ডোজ শেষে নওফেলকে জোর করে বলতে বাধ্য করবেন,
বেনসন নকল করব না, করব না, করব না!
জাভেদ আরও বলেছেন,এই লোক আমাদের ভেজাল বেনসন খাওয়াইছে। তাই আমি ওর জন্য একটা ‘বেনসন রিহ্যাব প্রোগ্রাম’ চালু করব। সেখানে শুধু নকল বেনসন থাকবে। বুঝুক জীবনটা কেমন লাগে।