এক তরুণ টুরিস্ট গেছে চীন দেশ বেড়াতে। একদিন সে ঘুরতে ঘুরতে শহর ছেড়ে একেবারে গ্রাম এলাকায় চলে এলো। এটা ওটা দেখতে দেখতে কখন যে দিন গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলো সে টেরই পেল না। যখন তার খেয়াল হলো, ততক্ষণে শহরে ফেরার সব যানবাহন বন্ধ হয়ে গেছে। রাতটা কোথায় কাটাবে, কোথায় ঘুমাবে এসব ভাবতে ভাবতে একটু সামনে এগিয়ে দেখতে পেল এক সুপ্রাচীন দূর্গের মতো বাড়ি। সেখানে গিয়ে দরজায় নক করলো সে।
দরজা খুলল এক বৃদ্ধ। লোকটার লম্বা ঝুটি বাধা চুল, থুতনিতে লম্বা এক গোছা দাড়ি, নাকের নীচে পাতলা গোঁফ, চোখের উপর মোটা ভুরু, সব পেকে একেবারে ধবধবে শাদা। তরুণ তাকে অনেক করে বোঝাল যে এই রাতটা কাটানোর মতো একটু আশ্রয় চায়। বৃদ্ধ জানাল, কোন সমস্যা নেই, অবশ্যই সে এই রাতটা আশ্রয় পাবে। শুধু তাই না রাতের খাবারটাও বিনে পয়সায় পাবে। তবে একটাই শর্ত, ঘরে তার এক সুন্দরী যুবতি মেয়ে আছে। তার সাথে তরুন কোন ইটিশ পিটিশ করতে পারবে না। যদি সে তেমন কিছু করে তবে তাকে ভয়াবহ তিনটি চৈনিক শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
তরুণ বৃদ্ধকে আশ্বস্ত করলো, কোন ধরণের অনৈতিক কাজ সে করবে না। ভয়ের কোন কারণ নেই। কিন্তু রাতের বেলা খাবার টেবিলে বৃদ্ধের মেয়েকে দেখে সেই তরুণের তো মাথা খারাপ। মেয়ের একেবারে আগুন ধরানো রূপ। কী চমৎকার লাল টুকটুকে চেহারা, কী অনন্য তার ফিগার। এমন মেয়ে দেখলে যে কোন পুরুষেরই মন টলে উঠতে বাধ্য। সে কিছুতের চোখ ফিরাতে পারছিল না তার দিক থেকে। আবার বৃদ্ধের সেই ভয়াবহ শাস্তির কথা মনে করে সে কিছু করতেও পারছিল না।
রাতে তরুণের ঘুমানোর জায়গা হলো দুইতলার একটা ঘরে। সেই ঘরের বিছানার পাশে বিরাট বড় জানালা। গরাদ বিহীন সেই জানালা দিয়ে হু হু করে বাতায় বয়। সেই বাতাসের আরামে তরুণ বিছানায় শোয়া মাত্রই ঘুমিয়ে পড়ল। অনেক রাতে তার ঘুম ভেঙ্গে গেল শরীরের উপর প্রচন্ড এক চাপ অনুভব করায়। আবছা আলোতে সে চোখ মেলে তাকাতেই দেখতে পেল, বৃদ্ধের সেই রূপসী মেয়ে তার শরীরের উপর জেঁকে বসেছে।
তরুণ কিছু বুঝে উঠার আগেই মেয়েটি স্বতস্ফূর্তভাবে তার কাজ করা শুরু করলো। যেন মেয়েটি প্রধান সেতার বাদক আর তরুণ তার তবলচি। সেতারের সঙ্গে সঙ্গ দিয়ে যাওয়াই তার কাজ। তরুণ আনন্দিত মনে সঙ্গ দিয়ে যেতে লাগল। আহা! এমন স্বর্গসুখ কেবল হাজার পূণ্য করলে তবেই পাওয়া যায়!
যদিও তরুণের মনে প্রথম দিকে সেই বৃদ্ধের শাস্তির কথা উঁকি দিচ্ছিল। কিন্তু এমন বুড়ো তার কীই বা এমন করতে পারবে ভেবে তরুণ সেই ভাবনাকে আর পাত্তা দিল না। ভেসে যেতে লাগল স্বর্গসুখে। ঢেউয়ের তালে তাল দিয়ে উন্মত্ত সাগরে হারিয়ে গেল দুজন। সাগর শান্ত হওয়ার পর মেয়েটি যেমন নীরবে এসেছিল ঠিক তেমনি নীরবে চলে গেল। আর তরুণটিও মনের ভেতর এক অপূর্ব আবেশ নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল।
সকালে তরুণের ঘুম ভাঙল বুকের উপর আবার হালকা চাপ অনুভব করায়। চোখ মেলে দেখল, তার বুকের উপর একটি মাঝারি মাপের পাথর। তাতে একটি সাদা কাগজ সাঁটা। আর তাতে লেখা--নিয়ম ভঙ্গের কারণে চৈনিক শাস্তি ০১: বুকের ওপর দশ কেজি ওজনের পাথর।
তরুণের ঠোট তাচ্ছিল্যের হাসিতে বেঁকে গেল--হুহ! এই তবে চৈনিক শাস্তির নমুনা! সে পাথরটি তুলে সামনের জানালা দিয়ে ছুড়ে মারলো। সাথে সাথে সে দেখতে পেল, বুকের যেখানে পাথর ছিল ঠিক সেখানে আরেকটি সাদা কাগজের টুকরো রাখা। সেখানে লেখা--চৈনিক শাস্তি ০২: বাম টেস্টিকল শক্ত সুতা দিয়ে পাথরের সাথে বাঁধা।
নিজের বিশেষ অঙ্গ বাঁচাতে তরুণ মুহূর্তমাত্র দেরী না করে জানালা দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ল পাথরের সাথে সাথে। ঝাঁপিয়ে জানালা পার হওয়ার সময় সে দেখতে পেল, জানালার বাইরের দেয়ালে আরেকটি বড় শক্ত কাগজ সাঁটানো। সেখানে লেখা--চৈনিক শাস্তি ০৩: ডান টেস্টিকলটি শক্ত সুঁতো দিয়ে খাটের পায়ার সাথে বাঁধা।
পাঠকের মন্তব্য ( ১ )
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন