একাত্তরে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিশ্বব্যাপী গবেষণা

৪৮৩ পঠিত ... ১৩:৫০, জানুয়ারি ০৬, ২০২৫

5 (5)

লেখা: আরিফ রহমান 

নিচের ছবিটাতে দেখেন, গত সত্তুর বছরে সবচেয়ে বেশি ডেথরেট ১৯৭১ সালে। কোনো চেতনার কথা বলতে আসি নাই, বিশ্বব্যাপী গণহত্যা গবেষকদের মতে ১৯৭১ সালে হতাহত মানুষের সংখ্যা আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাইছি।

১. ‘সেন্টার ফর সিস্টেমেটিক পিস’-এর ডিরেক্টর ড. মার্শাল জোবি, ‘মেজর এপিসোডস অব পলিটিক্যাল ভায়োলেন্স ১৯৪৬-২০১৪’ প্রবন্ধে দেখিয়েছেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ১০ লাখ মানুষ নিহত হয়েছে।

২. ড. টেড রবার্ট গার এবং ড. বারবারা হার্ফ দুজন গণহত্যা গবেষক। এদের মাঝে ড. টেড রবার্ট গার বর্তমানে ম্যারিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আর ড. বারবারা হার্ফ ইউএস নেভি একাডেমিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক। তারা দুজনই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের দিকপাল হিসেবে পরিচিত। তাদের বিখ্যাত গবেষণা, যেটা পরবর্তী সময়ে পুস্তক হিসেবেও সমাদৃত হয়, টুয়ার্ড অ্যাম্পিরিক্যাল থিওরি অব জেনোসাইডস অ্যান্ড পলিটিসাইডস, প্রকাশিত হয় ১৯৮৮ সালে। সেই বইতে উল্লেখ করা হয়েছে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে ১২,৫০,০০০ থেকে ৩০,০০,০০০ মানুষ নিহত হয়েছে।

৩. মিল্টন লিটেনবার্গের গবেষণাপত্র, যেটা প্রকাশিত হয় কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, ‘ডেথস ইন ওয়ারস অ্যান্ড কনফ্লিক্টস ইন দ্য ২০ সেনচুরি’ শীর্ষক সেই প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ১.৫ মিলিয়ন অর্থাৎ ১৫ লাখ।

৪. ড. জ্যাক নুস্যান পোর্টার একজন লেখক, গবেষক, সমাজকর্মী এবং যিনি ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব জেনোসাইড স্কলার্সের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট, তার সাড়া জাগানো বই জেনোসাইড অ্যান্ড হিউমেন রাইটস। এই বইতে গুরুত্ব সহকারে উল্লেখ করা হয়েছে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে শহীদের সংখ্যা ১০ থেকে ২০ লাখ।

 

৫. ১৯৪৫ থেকে ১৯৯৫ সালের মধ্যে ৩০০টি আন্তর্জাতিক সংঘাত সম্পর্কে বলা হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল কনফ্লিক্ট: আ ক্রোনোলজিক্যাল এনসাইক্লোপিডিয়া অব কনফ্লিক্টস অ্যান্ড দেয়ার ম্যানেজমেন্ট, ১৯৪৫-১৯৯৫ বইটিতে। লেখকদ্বয় জ্যাকব বারকোভিচ এবং রিচার্ড জ্যাকসন দুজনেই আন্তর্জাতিক সংঘাত বিশেষজ্ঞ। এখানেও সংখ্যাটা মিলিয়নের উপরে।

৬. গণহত্যা গবেষক টম হার্টম্যান এবং জন মিচেল তাদের লেখা আ ওয়ার্ল্ড অ্যাটলাস অব মিলিটারি হিস্টিরি, ১৯৪৫-১৯৮৪ বইতে বলেছেন একাত্তরের যুদ্ধে দশ লাখ মানুষ মারা যায়।

৭. ওয়ার্ল্ড অ্যালামন্যাক, যাদের বলা হয়ে থাকে তথ্যপঞ্জির জগতে সর্বশ্রেষ্ঠ, তারা তাদের ১৯৮৪ সালের সংখ্যায় বলেছে, ১৯৭১ সালের সংঘাতে নিহতের সংখ্যা ১০ লাখ।

৮. কম্পটনস এনসাইক্লোপিডিয়া তাদের গণহত্যা পরিচ্ছদে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা লিখেছে ৩০ লাখ।

৯. এনসাইক্লোপিডিয়া অ্যামেরিকানা তাদের ২০০৩ সালের সংস্করণে বাংলাদেশ নামক অধ্যায়ে একাত্তরে নিহত মানুষের সংখ্যা উল্লেখ করেছে ত্রিশ লাখ।

১০. গণহত্যা গবেষক লিও কুপার তার বিখ্যাত জেনোসাইড বইতে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছে।

১১. পুলিত্জার পুরস্কার বিজয়ী আ প্রোবলেম ফ্রম হেল: অ্যামেরিকা অ্যান্ড দ্য এইজ অব জেনোসাইড গ্রন্থের লেখিকা সামান্তা পাওয়ার পৃথিবীর বিভিন্ন গণহত্যার খতিয়ান বের করেছেন। বেস্ট সেলার এই বইটিতে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে নিহত মানুষের সংখ্যা বলা হয়েছে ১০ থেকে ৩০ লাখ।

১২. বিশিষ্ট রাজনীতিবিজ্ঞানী রুডল্ফ জোসেফ রুমেলের স্ট্যাটিসটিকস অব ডেমোসাইড বইটিকে দাবি করা হয়ে থাকে বিশ্বে গণহত্যা নিয়ে সংখ্যাগতভাবে অন্যতম কমপ্রিহেনসিভ বই। বইটির অষ্টম অধ্যায়ে স্ট্যাটিসটিকস অব পাকিস্তান’স ডেমোসাইড এস্টিমেইটস, ক্যালকুলেশনস অ্যান্ড সোর্সেস নিবন্ধে তিনি দেখিয়েছেন বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের মুক্তির সংগ্রামে নিম্ন সম্ভাবনায় তিন লাখ, মধ্যম সম্ভাবনায় ১৫,০৩,০০০ থেকে সর্বোচ্চ সম্ভাবনায় ঘরে ৩০,০৩,০০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে বলে উল্লেখ করেন। বিভিন্ন প্রবন্ধে তিনি বিভিন্ন সময় সংখ্যাটা ১৫ লাখ বলেই উল্লেখ করেছেন।

-

অনেকের মনে খটকা লেগে থাকতে পারে যে বেশির ভাগ গবেষকের মতে, সংখ্যাটা ১০ থেকে ১৫ লাখের ভেতরে ঘুরপাক খাচ্ছে।

তাদের উদ্দেশে বলছি, গল্পটা এখানেই শেষ হয়নি। শরণার্থী শিবিরে নিহত মানুষের বেশিরভাগ গবেষক গণনায় আনেননি। এক কোটি বিশ লাখ মানুষের স্থানান্তরে প্রচুর মানুষের মৃত্যু অনিবার্য। আমাদের ধারণা অনুসারে কেবল শরণার্থী শিবিরে নিহত মানুষের সংখ্যাই ৬ থেকে ১২ লাখ হতে পারে।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য এবং জনসংখ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. রিচার্ড ক্যাস বলেছেন:

‘আমরা পাবলিক হেলথের লোক হিসাবে যুদ্ধের সরাসরি প্রাণহানি ছাড়াও কোল্যাটারাল ড্যামেজের দিকে নজর রাখতে চাই এবং এই যুদ্ধের ফলে প্রায় দশ মিলিয়ন মানুষকে ঘরছাড়া হয়ে ভারতে পালাতে হয়েছিল, পাঁচ লাখ মানুষ যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে মারা গিয়েছিল’। এই সব অতিরিক্ত প্রাণহানির দায় কার, সবই ঈশ্বরের লীলা? নাকি যারা এই যুদ্ধ এনেছিল তাদের?’

-

১৯৭১ সালের জুন মাসে লাইফ ম্যাগাজিনের সাংবাদিক জন সার কোলকাতায় এসেছিলেন। সঙ্গে ছিলেন ফটোগ্রাফার মার্ক গডফেরি। তারা দুজনে একটি গাড়িতে করে ঘুরে ঘুরে দেখেছেন শরণার্থীদের চিত্র। সময়টা জুন মাসের মাঝামাঝি। জন সার গিয়েছেন করিমপুরে। বৈষ্ণব ভক্তিবাদের প্রবক্তা চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মস্থান পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরের এই গ্রামটি পাকিস্তান সীমান্ত থেকে মাত্র তিন মাইল দূরে। এখানে রাস্তা দিয়ে সীমান্ত পার হয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ আসছে পূর্ব পাকিস্তান থেকে। পাক হানাদার বাহিনীর বর্বর গণহত্যার শিকার হয়ে এরা হারিয়েছেন এদের স্বজন, গবাদিপশু, ঘরবাড়ি, সহায়সম্পদ। ধারাবাহিক মৃত্যুর তাড়া খেয়ে এইসব ভয়ার্ত মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ভারতে ছুটে আসছে। সরাসরি গুলির হাত থেকে ঈশ্বরের দয়ায় এরা বেঁচে এসেছে। কিন্তু নতুন করে পড়েছে নতুন নতুন মৃত্যুর ফাঁদে। এদের পেছনে মৃত্যু। সামনে মৃত্যু। বায়ে মৃত্যু। ডানে মৃত্যু। সর্বত্রই মৃত্যুর ভয়ঙ্কর থাবা এদের তাড়া করে ফিরছে।

সাংবাদিক জন বলছেন, করিমপুরের মধ্যে দিয়ে যে রাস্তাটি চলে গেছে কোলকাতা বরাবর, তার বামদিকে শরণার্থী শিবির। এখানে আশ্রয় নিয়েছে ১৫,০০০ মানুষ। এই শরণার্থী শিবিরে কলেরা নির্মমভাবে হানা দিয়েছে। ৭০০ জন ইতিমধ্যে মারা গিয়েছে। বাকীরা শিবির ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পালাবে কোথায়? কলেরাও তাদের সঙ্গে চলেছে। খোলা জায়গায় পড়ে আছে মরা মানুষ।

জন সার দেখতে পাচ্ছেন ঝাঁকে ঝাঁকে শকুন নেমে এসেছে। তীক্ষ� ঠোঁট দিয়ে ছিঁড়ে খুঁড়ে খাচ্ছে মরা মানুষের দেহ। তাদের চোখ চক চক করছে। কিন্তু মৃত মানুষের সংখ্যা এত বেশী যে শকুনেরা খেয়ে শেষ করতে পারছে না। শকুনদেরও খাওয়ায় অরুচি এসে গেছে। মরা মানুষের গা থেকে ছিঁড়ে খুঁড়ে ফেলেছে জামা কাপড়। তাদের অনেকের তখনো গা গরম। সবেমাত্র মরেছে। পথে ঘাটে নালা নর্দমায় সর্বত্রই কলেরায় মরা মানুষ পড়ে আছে। জন সার দেখতে পেয়েছেন একটি শিশুর মৃতদেহ। শিশুটির গায়ে একটি শাড়ির অংশ পেঁচানো। তাঁর হতভাগী মা পেঁচিয়ে পুটুলি বানিয়েছে। ট্রাকের চলার সময় অসুস্থ শিশুটি মারা গেছে। চলন্ত ট্রাক থামেনি। মৃত ছেলের জন্য ট্রাক থামানো কোনো মানেই হয় না। আরও অনেক মৃতপ্রায় মানুষ এই ট্রাকেই ধুঁকছে। আগে পৌঁছাতে পারলে হয়তো কোনো হাসপাতাল পাওয়া যেতে পারে। তাদের সুযোগ মিলতে পারে চিকিত্সার। বেঁচেও যেতে পারে। এই আশায় সময় নষ্ট করতে কেউ চায় না। শিশুটির পুটুলী করা মৃতদেহটিকে ট্রাক থেকে রাস্তার পাশে ধান ক্ষেতে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

সাংবাদিক জন সার একটি সাত বছরের ফুটফুটে মেয়ে শিশুকে তুলে আনেন রাস্তা থেকে। তার চোখ বড় করে খোলা। তার হাত ঝুলে পড়েছে। নার্স এক পলক দেখেই বলছে, সব শেষ। কিছু করার নেই। মেয়েটি মরে গেছে।

একজন ক্লান্ত ডাক্তার বলছেন, এর চেয়ে কুকুর-বিড়ালেরাও ভালো করে মরে। কিছুটা হলেও তারা চেষ্টা তদ্বির পায়। আর এই শরণার্থী মানুষদের কলে পড়া ইঁদুরের মত মরা ছাড়া কপালে আর কিছু লেখা নেই।

দ্য ল্যানসেটকে বলা হয়ে থাকে পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সবচেয়ে পুরোনো মেডিকেল জার্নাল। এটাকে পৃথিবীর সবচেয়ে সম্মানজনক মেডিকেল জার্নালও বলা হয়ে থাকে। তাদের রিসার্চ জার্নালে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা নিয়েও সচেতনতা তৈরি করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে শরণার্থী শিবির নিয়ে একটা প্রবন্ধ প্রকাশ করেছে তারা তাদের একটি জার্নালে।

তাদের ভাষ্য কলকাতার একটি স্বেচ্ছাসেবক গ্রুপকে নিয়ে, যারা একাত্তরের জুনের শেষ থেকে বাহাত্তরের ফেব্রুয়ারির শুরু পর্যন্ত পাঁচ মাস চালু থাকা একটা শরণার্থী শিবিরের ওপর সার্ভে চালায় এবং তাদের সার্ভেটি খুবই বিশ্বাসযোগ্য, কারণ সেই সব ডেটা প্রতিটি ঘর থেকে আলাদাভাবে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই সার্ভের উদ্দেশ্য ছিল ক্যাম্পের জনসংখ্যা, সেখানকার মানুষের বয়সের ধরন আর মৃত্যুহার নিয়ে।

তাদের ভাষ্যমতে, ১ লাখ ৭০ হাজার শরণার্থীর ওই আশ্রয় শিবিরে কম করে হলেও ৪ হাজার মানুষ মারা যায়। তারা বলেছে, সংখ্যাটা আরও অনেক বেশি হতে পারে, স্বাভাবিক মৃত্যুকে তারা বিবেচনা করেনি এবং নিহতদের বড় অংশই ছিল শিশু।

১ লাখ ৭০ হাজার মানুষের মধ্যে কমপক্ষে মৃত ৪ হাজার, তাহলে এক কোটি মানুষের মাঝে পাঁচ মাসে ন্যূনতম নিহতের সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ।

আমাদের দেখতে হবে ৬০ লাখ জনগোষ্ঠী দেশ ছাড়ার পর এই হিসাব করা হয়েছে। পুরো হিসাবটা আরও ভয়াবহ, হয়তো এই সংখ্যাটার দ্বিগুণ কিংবা তিন গুণ।

কারণ বলা হয়েছে এটা পাঁচ মাসের হিসাব আর ক্যাম্পটা কলকাতার সেরা ক্যাম্প, যেখানে ছিল পর্যাপ্ত ডাক্তার, খাদ্য আর থাকার জায়গা আর জন সারের হিসাবে ১৫ হাজার মানুষের মাঝে মৃত ৭০০, তাহলে; এক কোটি মানুষের জন্য হিসাবটা হয় প্রায় পাঁচ লাখ।

এখানে আমরা দেখেছি, এটা জুন মাসের হিসাব। যদি ধরেও নিই এই শিবিরটা প্রথম থেকেই ছিল অর্থাত্ মার্চের শেষ দিক থেকে তাহলে মাত্র তিন মাসের মৃত্যুর হার এটা। এই ক্যাম্প যদি ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে থাকে, তাহলে সম্ভবত আপনারা সংখ্যাটা আঁচ করতে পারছেন। এরপর শরণার্থী শিবিরে জুন মাসেই ৫০ লাখের ৬ লাখ মারা যায়, এমন একটা নিউজ করেছিল ওয়াশিংটন ডেইলি নিউজ (২২ জুন)।

মনে রাখবেন, জুন যুদ্ধ শুরুর ৪ মাস। ডিসেম্বরের আগেই শরণার্থীর সংখ্যা ছিল এক কোটির ওপরে। সেই হিসেবে শরণার্থী সিবিরে হতাহতের সংখ্যা হতে পারে এমনকি ১২ লাখের ওপরে।

-

এবার একটু জনসংখ্যাতত্ত্বের দিকে দৃষ্টি দেই।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মৃত্যুহার নাটকীয়ভাবে বেড়ে যায়। বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের ওপর জাতিসংঘের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ১৯৫০-৫৫ সালে আমাদের দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ১৪.৬, ১৯৫৫-৬০ সালে ১৫.৩, ১৯৬০-৬৫ সালে ১৫.৩, ১৯৭০-৭৫ সালে হঠাৎ এটা কমে হয়ে যায় ৫.৫*, আবার ১৯৭৫-৮০ সালে বেড়ে হয় ১৪.২, ১৯৮০-৮৫ সালে ১৪.৫ এভাবে চলছে।

সত্তর থেকে পঁচাত্তরের ভেতর স্বাভাবিক জন্মহার বিবেচনায় তাহলে হারিয়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় ৬৫ লাখ!

চুয়ত্তরের দুর্ভিক্ষ, বিহারি হত্যাকাণ্ড আর তত্কালীন রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের সর্বোচ্চ সীমা ধরে হিসাব করে দেখুন সবকিছুর বিবেচনায় শহীদের সংখ্যা কত হয়? যেকোনো সোর্স থেকে মুক্তিযুদ্ধ ছাড়া বাদবাকি প্যারামিটারে সর্বোচ্চ মানগুলো গ্রহণ করলে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা ত্রিশ লাখের চেয়ে অনেক বেশিই হবে।

-

দেখেন, ফাইন লাইন হচ্ছে আমরা এই বিষয়ে একটা চূড়ান্ত নাম্বারে কখনোই পৌঁছুতে পারব না। কিন্তু ১৯৭১ সালের গণহত্যার পরিসরটা যে অনেক বিশাল- সেইটাকে যেনো আমরা ছোটো না করি।

৪৮৩ পঠিত ... ১৩:৫০, জানুয়ারি ০৬, ২০২৫

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top