লেখা: শরিফুল ইসলাম
শাখারী পট্টির এক বাড়ি থেকে অপরূপ সুন্দরী একটি মেয়ের লাশ তুলে আনা হলো। মেয়েটির স্তন ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে! যৌনাঙ্গ সম্পূর্ণ রূপে থেতলান!
মুখ, বাহু, উরুতে জমাট বাঁধা রক্ত! সমস্ত শরীরে কামড়ের চিহ্ন। আরমানিটোলার এক বাড়িতে দশ-এগারো বছরের এক ফুটফুটে মেয়ে। মেয়েটির সম্পূর্ণ শরীর ক্ষতবিক্ষত। মেয়েটিকে ধর্ষণ শেষে দুদিক থেকে পা ধরে নাভি পর্যন্ত ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের কোনো কক্ষেই লাশ ছিল না! কেননা ২৫শে মার্চ রাতেই হলে অবস্থানরত ছাত্রীদের পাকিরা তুলে নিয়ে যায়!
এসময় তারা হলের চারতলার ছাদে গিয়ে দেখতে পান সেখানে অনেকগুলো ছাত্রীর লাশ ছড়ানো ছিটানো! তাদের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। যৌনাঙ্গে বেয়নেট ঢুকিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এদের কারো পরনে কোনো কাপড় ছিল না! তাদের আশেপাশে দু-একটা সেলোয়ার কামিজ পড়ে ছিল।
ঘরে ঢুকে দেখি, একি দৃশ্য। ও আল্লাহ! এমন দৃশ্য দেখার আগে কেনো আমার দুটি চোখ অন্ধ করলে না আল্লাহ। মেয়ের সামনে মাকে ধর্ষণ। কয়েকটি পাগলা কুত্তা আমার মাকে ও বড় বোনটিকে খাচ্ছে কামড়ে কামড়ে। এক পলক তাকানোর পর আর তাকাতেই পারছি না। তখন গায়ের জোরে একটা চিৎকার করলাম। সঙ্গে সঙ্গে আমার হাত মুখ বেঁধে ঘরের এক কোনায় ফেলে রাখলো। তারপর ঠিক আমার পায়ের কাছে মাকে এনে শুইয়ে দিয়ে একেবারে উলঙ্গ করে ফেলে। তারপর আর বলতে পারছি না। এসব দৃশ্য আমাকে দেখতে হচ্ছে। আমি যখনই চোখ বন্ধ করে রাখতাম, তখনই তাদের হাতের ধারালো একটি অস্ত্র দিয়ে চোখের চারপাশে কেটে দিত। এভাবেই চলল মায়ের ওপর সারারাত নির্যাতন। আর কিশোর হয়ে আমাকে তা দেখতে হয়েছে। রাত ভোর হয় হয়—এমন সময় তারা চলে গেছে, মা ততক্ষণে মৃত। যাবার সময় সঙ্গে নিয়ে গেল আমার অর্ধ মৃত রক্তাক্ত বোনটিকেও—কিশোর শফিকুরের নিজের বয়ান।
ধর্ষিত নারীদের প্রায় সবারই ছিল ক্ষত-বিক্ষত যৌনাঙ্গ। বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ছিড়ে ফেলা রক্তাক্ত যোনিপথ, দাঁত দিয়ে ছিড়ে ফেলা স্তন, বেয়োনেট দিয়ে কেটে ফেলা স্তন-উরু এবং পশ্চাৎদেশে ছুরির আঘাত নিয়ে অর্জিত স্বাধীনতা আটকা পড়েছে ২ জন ধর্ষিত মেয়েকে নিয়ে তাচ্ছিল্যভরা হাসিতে।
আমার দশম শ্রেনীর স্টুডেন্ট বলেছে, ৭১ এ আপনিও ছিলেন না আমিও ছিলাম না। সেই হিসাব বাদ। এখন বর্তমান নিয়ে হিসাব হবে।
অভিবাদন নতুন বাংলাদেশ
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন