ভূত চতুর্দশী; বাঙালির নিজস্ব হ্যালোইন

২৩২ পঠিত ... ১৮:০৮, অক্টোবর ৩১, ২০২৪

40

প্রায় ২০০০ বছর আগে কেল্টিক জাতি বর্তমান আয়ারল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও উত্তর ফ্রান্সে 'সাহ-উইন' উৎসব উদযাপন করত, যা পরবর্তীতে হ্যালোইন হিসেবে পরিচত হয়। কেল্টিকদের বিশ্বাস ছিল, অক্টোবরের শেষ রাতে প্রেতাত্মা ও অতৃপ্ত আত্মারা পৃথিবীতে আসে, তাই তারা ভূতের মুখোশ ও কাপড় পরে আত্মাদের ভয় দেখাত।

হ্যালোইনের মতো, আমাদের উপমহাদেশে একটি বিশেষ উৎসব আছে—ভূত চতুর্দশী। এ রাতে বাড়িতে বাড়িতে তিরতির করে জ্বলে ১৪টি প্রদীপ। গ্রামে গ্রামে হিন্দু বাড়িগুলোতে সন্ধ্যার সময় প্রদীপের আলোতে বসে ভূতের গল্প শোনান নানী-দাদিরা। কীভাবে এই রাতে নড়কের দরজা খুলে যায়, ভূত প্রেত মানুষের মাঝে ঘুরতে আসে, ভয় দেখায় কিংবা উপহার দেয়, সেসব নিয়েই জমে ওঠে গল্পগুলো। ছোটো ছোটো ছেলে মেয়ে নিজেদের ভয় দেখায়, কেউ কেউ ভূত হয়ে রাতের রাস্তার পথচারীকে ভয় দেখায়।

ভূত চতুর্দশী শুধু একটি উৎসব নয়, এটা সংস্কৃতিরও একটি অংশ। দেবী কালী এই রাতে চামুণ্ডা রূপে ভূত এবং প্রেতাত্মাদের সঙ্গে নিয়ে ভক্তদের বাড়িতে আসেন। তিনি অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটান। অন্যদিকে, অনেকে বিশ্বাস করেন দৈত্যরাজ বলি পৃথিবীতে পূজা নিতে আসেন, তার সঙ্গে আসে নানা অশুভ শক্তি।

এ রাতে, পূর্বপুরুষদের আত্মার আগমনের জন্য মানুষ ১৪ প্রকার শাক খেতে চায়। ওল, কালকাসুন্দে, সরিষা—এসব শাক খাওয়ার মাধ্যমে অশুভ শক্তির বিনাশের উদ্দেশ্যে স্নান করা হয়। এরপর প্রদীপ জ্বালানো হয়, যেন এই আলো তাদের পথ দেখায়। বাড়ির বাচ্চারা মিষ্টি এবং জল নিবেদন করে তাদের স্মরণে, আর বৃদ্ধারা গল্প করতে থাকেন পুরোনো দিনের।

ভূত চতুর্দশী এবং হ্যালোইন উভয়েই মৃত্যুর পরের জীবন ও অতৃপ্ত আত্মাদের প্রতি সমবেদনা জানায়। তবে, ভিন্ন ভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে।

 

২৩২ পঠিত ... ১৮:০৮, অক্টোবর ৩১, ২০২৪

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top