সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে নেই প্রায় তিন মাস ধরে। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকেই তিনি নিরুদ্দেশ। তিনি কোথায় আছেন, কেমন আছেন এ নিয়ে আগ্রহের অন্ত নেই মানুষেরও।
ভারতে আশ্রয়লাভ করেছেন এর বাইরে তার সম্বন্ধে আর কিছু জানা যায়নি। তবে এবার ভারতের ডিজিটাল নিউজ প্ল্যাটফর্ম দ্য প্রিন্ট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে দিল্লির লুটিয়েন্স বাংলো এলাকার একটি সুরক্ষিত বাড়িতে প্রায় দুই মাস ধরে বসবাস করছেন।
এই লুটিয়েন্স বাংলো এলাকাটি দিল্লির অন্যতম অভিজাত একটি এলাকা। এখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও অনেক বেশি উন্নত ও সুরক্ষিত। এলাকাটি স্থাপত্যগতভাবেও অনেক আধুনিক ও নান্দনিক।
কারা বসবাস করেন লুটিয়েন্স বাংলোতে
সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং বিচারপতিরা এই লুটিয়েন্স বাংলো এলাকায় থাকেন। ফলে ভারতের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দিক থেকেও এই এলাকাটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাববিস্তারকারি।
কতটা অভিজাত এই লুটিয়েন্স বাংলো এলাকা
২০১৬ সালে এই এলাকার একটি বাড়ি কেনেন ভারতের ডিএলএফ চেয়ারম্যান কেপি সিং-এর মেয়ে রেনুকা তালওয়ার। সেই সময়ে বাড়িটির মূল্য নির্ধারণ হয় প্রায় ৫৭৪ কোটি টাকা।
এখানকার বাড়িগুলো কেউ চাইলে ভাড়াও নিতে পারে। এক্ষেত্রে এক রাতের জন্য এক রুম নিলে ভাড়া পরিশোধ করতে হবে ৮ হাজার টাকা থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত।
মাসিক হিসেবেও এখানকার বাড়িগুলো ভাড়া দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে ১১ হাজার স্কয়ার ফুটের একটা বাড়ি ১ মাসের জন্য ভাড়া নিলে পরিশোধ করতে হবে প্রায় ২০-২৫ লক্ষ টাকা।
দ্য প্রিন্ট থেকে জানা যায়, ভারত সরকার এ বাড়িটি দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে হাসিনার জন্য প্রস্তুত করেছে। শুধু তাই নয়, এখানে শেখ হাসিনার জন্য কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে এবং মাঝে মাঝে তাকে দিল্লির বিখ্যাত লোধি গার্ডেনে হাঁটতেও দেখা যায়।
দেশে একটা গণহত্যা চালিয়ে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা যখন ভারত পালিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন সাথে করে তিনি কিছুই নিতে পারেননি। নিতে পেরেছেন শুধু একটা লাগেজ। এখন উনি বসবাস করছেন ভারতের অন্যতম অভিজাত একটি এলাকায়। এটি কীভাবে সম্ভব হয়েছে?
দুটি কারণ দাঁড় করানো যেতে পারে। হাসিনা দেশ থেকে এত পরিমাণ টাকা সরিয়ে নিতে পেরেছেন যে, ওনার জীবন থেকে আভিজাত্য আর কখনও যাবে না। অনেক টাকা আয় করলে মানুষ সেটির পরিমাণ বুঝানোর জন্য একটি কথা বলে—লোকটি এত টাকা কামাইছে যে, কয়েক প্রজন্ম রাজার হালে থাকলেও এই টাকা শেষ হবে না। শেখ হাসিনাও দেশ থেকে হয়ত এমন টাকাই সরিয়েছেন।
কিংবা হতে পারে শেখ হাসিনার এমন কোনো লোভই ছিল না। সে আসলে ফুঁটা পাই নিয়েই দেশ থেকে পালিয়েছেন। ছিল না বিষ খাওয়ার টাকাও। তাও তিনি ভারতে এমন অভিজাত এলাকায় থাকতে পারছেন, কারণ স্বৈরশাসক ও গণহত্যাকারীর প্রতি ভারতের অকৃত্রিম ভালোবাসা। এমন স্বর্গীয় ভালোবাসা স্বরূপই ভারত সরকার শেখ হাসিনাকে এই অভিজাত এলাকায় নিজেদের মেহমান হিসেবে রেখেছেন। আরও রাখবেন।
আজ হিটলার বেঁচে থাকলে কোথায় থাকতেন তা নিয়ে লোকটাকে একদমই চিন্তা করতে হতো না। করতে হতো না আত্মহত্যাও। কোনোভাবে জার্মানি থেকে পালিয়ে ভারত আসতে পারলেই আতিথেয়তা পেতেন দিল্লির লুটিয়েন্স বাংলোতে। অবসরে গল্প করতে পারতেন আরেক গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার সাথে।
তথ্যসূত্র: দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, 99acres.com, southdelhiprime.com, agoda.com
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন