ট্রুডোর পতনে কে দায়ী; জয় শ্রীট্রাম্প না কি জয় শ্রীরাম

৩৬ পঠিত ... ১৮ ঘন্টা ৫৫ মিনিট আগে

30

ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী ও লিবেরেল দলের প্রধান হিসেবে জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের পেছনে জয় শ্রীট্রাম্প নিজেকে মাস্টারমাইন্ড বলে ঘোষণা করেছেন। ক্যানাডাকে আমেরিকার অঙ্গরাজ্য বলে ঘোষণা করে ট্রাম্প অখণ্ড আমেরিকার মানচিত্র প্রকাশ করে বলেন, ক্যানাডার অধিকাংশ মানুষ আমেরিকার সঙ্গে যুক্ত হতে চায় বলে তারা ট্রুডোকে প্রত্যাখ্যান করেছে। ক্যানাডায় এক জরিপে দেখা গেছে সেখানে ১৪ শতাংশ জয় শ্রীট্রাম্প জনতা রয়েছে যারা দীর্ঘদিন ধরে অখণ্ড আমেরিকার স্বপ্নে মশগুল।

কিন্তু ভারতের জয় শ্রীরাম মিডিয়া দাবি করছে, ট্রুডোর পতনের মাস্টারমাইন্ড নরেন্দ্র দামোদর মোদি। ভারতের খুফিয়া অপারেশনে ক্যানাডায় একজন শিখ নেতা হত্যার ঘটনায় ট্রুডো ক্রুদ্ধ হয়ে নরেন্দ্র মোদিকে দুষলে; খুফিয়া অপারেটরেরা এর প্রতিশোধ নিয়ে কাজ করতে শুরু করে।

২০১২ সালে জাস্টিন ট্রুডোর সাবেক স্ত্রী সোফি ইয়োগা শেখেন। পরে নরেন্দ্র মোদি তার বিশ্ব ইয়োগা আন্দোলন শুরু করলে; অটোয়ার জয় শ্রীরাম বৌদিরা সোফিকে এর সঙ্গে যুক্ত করে। গল্পে গল্পে তারা বলে, অটোয়ায় তাদের সেকেন্ড হোম রয়েছে। সোফি একদিন তাদের সেকেন্ড হোম দেখতে গিয়ে লক্ষ্য করে সেখানে ভারতের বৌদি আর বাংলাদেশের ভাবিদের সুখের জীবন।

ভাড়া বাসায় ফিরে ট্রুডোকে সোফি বড্ড অভিমান করে বলেন, ২০০৫ সাল থেকে তোমার সংসার করছি। একটা বাড়ি কিনে দিতে পারলে না। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে বলে তোমাকে বিয়ে করেছিলাম; চাল চুলো নেই তোমার। অথচ দেখো ভারত-বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীদের পার্টি পুত্ররা কী সুন্দর সেকেন্ডহোম কিনেছে ক্যানাডায়। লেটেস্ট মডেলের গাড়িতে চড়ে তাদের স্ত্রীরা। গলায় ডায়ামন্ডের মালা পরে ইয়োগা করে তারা। তুমি একটা কী গো!

ইয়োগা ক্লাসে সোফির কাছে ট্রেনিং করতে এসে প্রতিদিন তাদের সুখের গল্প করে শ্রীমতি ও বেগমেরা। শেষে ইয়োগা-টিয়োগা বাদ দিয়ে সোফি পুজো আর ইদের দাওয়াত খেয়ে বেড়াতে থাকে। তাদের কাছ থেকে স্বামীকে চাপ দিয়ে সেকেন্ডহোম, গাড়ি, গয়না বাগানোর কলাকৈবল্য শিখতে থাকে। তারা বুদ্ধি দেয়, পুরুষ মানুষের দুর্বলতা তার বাচ্চা-কাচ্চা। এই বাচ্চা-কাচ্চাকে রিভলভারের মতো স্বামীর মাথার কাছে ধরলেই সে বশ হয়ে যায়। আর হাবি কাজ থেকে ফিরলে কিচেনে বাসনপত্র ফেলে দিলে ঝন ঝন করে ওঠবে। ডাইনিং টেবিলে প্লেট গ্লাস জোরে জোরে রাখলে শব্দ হবে। রাতে ঘনিষ্ট হতে এলে মাথাব্যথা বলে পেছন দিকে ঘুরে শুয়ে থাকতে হবে। বিফলে মূল্য ফেরত, ট্রুডো আপনাকে ভিলা কিনে দেবেই। কিনে দিলে তখন ষোল সিঙ্গার কি করে দেখাতে হবে সে বুদ্ধি পরে দেব। আগে বাড়িটা কিনুক ব্যাটা।

ওদিকে শিখ নেতার হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে ট্রুডো আর মোদির সম্পর্কে তিক্ততা তৈরি হয়। উভয় দেশের কূটনীতিক বহিষ্কারের ঘটনা ঘটতে থাকে। গদি মিডিয়ায় অগ্নিবীণা সিক্রি খ্যাস খ্যাস করে বলে, মহাপরাক্রমশালী ভারতের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে ক্যানাডা ভুল করল।

এসময় প্রতিদিন সোফির অত্যাচারে তিক্ত হয়ে ট্রুডো বলে, প্রতিদিন ডোমেস্টিক পলিটিকস সামলাতে সামলাতে আমি দেশ ও দলের নেতৃত্বে একদম সময় দিতে পারছি না। তুমি তো জানোই আমি কত বেতন পাই। তা থেকে বাঁচিয়ে ভিলা কেনা অসম্ভব। আরে বাবা এটা তো ভারত-পাকিস্তান বা বাংলাদেশ নয়; যে উন্নয়ন প্রকল্পের কমিশন খেয়ে সুইস ব্যাংকে টাকা জমাব। এখানে প্রতিটি পাই পয়সার হিসাব দিতে হয়। ক্যানাডা তো কারও বাপের নয়।

সেকেন্ডহোমের ভাবি ও বৌদিদের পরামর্শে সোফি আলাদা হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সেকেন্ডহোমার ওয়াইভস ক্লাব বুদ্ধি দেয়, বাচ্চাদের বাপের কাছে যাইতে দেবেন না; ফোনে কথা বলতে দেবেন না। দেখবেন সে চিতা ও দোজখের আগুনে পুড়বে। ভাবি ও বৌদিরা আরও বুদ্ধি দেয়, আমরা মোদির সমর্থন পেতে যেরকম অখণ্ড ভারতের স্বপ্ন দেখি; ট্রাম্পের সমর্থন পেতে আপনাকে তেমনি অখণ্ড আমেরিকার স্বপ্নে মশগুল হতে হবে।

ট্রুডো সোফির সঙ্গে সেপারেশন আর বাচ্চাদের সময় কাটানোর জন্য সোফির কাছে ছয়বার আবেদন করলে একবার অনুমতি পাবার যন্ত্রণায় নির্ঘুম রাত কাটাতে শুরু করে।

অখণ্ড আমেরিকার স্বপ্নে বিভোর ১৪ শতাংশ নারী-পুরুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় বেগুনের দাম আগুন, শসার দাম কষা, মাছের দাম গাছে উঠেছে, ট্রুডো পারতেছে না, আইজ ট্রাম স্টেশনে আমার গলার মালা ছিঁড়ে নিয়ে গেল ছিনতাইকারী, ফোন করলেও পুলিশ আসেনি ইত্যাদি অভিযোগ করে বলে, আমরা কি এই ক্যানাডা চেয়েছিলাম।

ট্রাম্প একজন পরমা সুন্দরী মডেলকে ক্যানাডায় পাঠায় ট্রুডোকে হানি ট্র্যাপ করতে। বিজিত দোভাল এক পরমা সুন্দরী মডেলকে অটোয়া পাঠায় ট্রুডোর হৃদয় হরণ করতে। দুজনেই হোয়াটস অ্যাপে বন্ধুত্ব জমায় ট্রুডোর সঙ্গে। অফিস থেকে ফিরে একাকীত্বে ধূসর ট্রুডো প্রথমে জয় শ্রীট্রাম্প সুন্দরীকে আমন্ত্রণ জানায়। সে এসে গল্প করে, জোকস বলে, দাবা খেলে। এরপর সুন্দরভাবে বিদায় নিয়ে চলে যায়।

পরদিন দোভালের পরমা সুন্দরী আসে। সে রান্না করে। ডিনার পরিবেশন করে। ডিনারের পর পোয়েট্রি ও কালচার নিয়ে আলাপ করে। এরপর কথক নাচ দেখায়। শাহজাদা সেলিমের আনারকলির জন্য দিওয়ানা হয়ে যাবার গল্প বলে। যোধাকে ভালোবেসে আকবরের আত্মসমর্পণের গল্প বলে। এইসব গল্প শুনে ট্রুডো সুন্দরীর হাত ধরতে চাইলে সে গেয়ে ওঠে, নেহি নেহি আভি নেহি থোড়া করো ইন্তেজার।

ট্রুডো ভেতরে ভেতরে সিদ্ধান্ত নেয়; কী হবে প্রেমহীন সিংহাসনে প্রতিদিন নিঃসঙ্গতার আগুনে পুড়ে। সে বাড়ির সামনে সাংবাদিকদের ডেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়। এরপর ঘরে ফিরে এসে সেই পরমা সুন্দরীর হাতে হাত রাখতে চাইলে, সে গেয়ে ওঠে, নাহি নাহি আভি নেহি, থোড়া করো ইন্তেজার।

৩৬ পঠিত ... ১৮ ঘন্টা ৫৫ মিনিট আগে

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

রম্য

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি


Top