জুলাইয়ের মেটিকুলাস ডিজাইন

১৮৩ পঠিত ... ১৭:১৩, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৫

31

শেখ হাসিনা দেখছেন প্রতিদিনই রিজার্ভের টাকা কমছে। এ অবস্থা দেখে আরও আগেই লোটাস কামাল পাগলের অভিনয় শুরু করেছেন। ২০১৮-র লাইলাতুল ইলেকশনের পর গোটা পৃথিবীতে দুর্নাম রটে গেছে। বেনজির তার নজিরবিহীন ক্রসফায়ার, মনিরুল তার নজিরবিহীন জঙ্গী অভিযান নাটক, হারুন তার নৃশংস ভাতের হোটেল চালিয়ে পুলিশ লীগের অবস্থা এমন করেছে; ও পুলিশের দিকে আর তাকানো যায় না। এইচটি ইমাম বিসিএস-এ হাসিনাতসি রক্ত দেখে চাকরি দেওয়ায় প্রশাসনে সারি সারি রিটার্নিং অফিসার তৈরি হয়েছে; যারা শতবর্ষ ধরে লাইলাতুল ইলেকশন করতে প্রস্তুত।

টাকা লুটপাটে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, পুলিশ লীগ, প্রশাসন লীগ, ব্যবসায়ী লীগ বিশ্বরেকর্ড করেছে। এরা টাকা লুটপাট করে আর টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে মহানায়কের সমাধিতে ফুল ও অশ্রু দিয়ে ফেরার পথে নৌবাহিনীর প্রমোদ বিহারে সংস্কৃতি লীগকে সঙ্গে নিয়ে ইশকুল খুইলাছেরে ইশকুল খুইলাছে, টেকাটুকা চুরির ইশকুল খুইলাছে গান করে।

ইসকন লীগ ও ওলামা লীগ অযোধ্যা ও মক্কার ধার্মিকদের চেয়ে বেশি ধার্মিক হয়ে উঠেছে। চারিদিকে গেরুয়া-লাল তিলক আর দাড়ি-টুপি মৌ মৌ করছে। শাখা-সিঁদুর ও হিজাবের ফ্যাশান প্যারেড চলছে সর্বত্র।

সেকেন্ড হোম লীগের পুত্র কন্যারা স্পোর্টস কারে ঘুরছে। বিশ্রামে হত আমলা ও রাজনীতিকের স্ত্রীরা বেগম পাড়ার বসন্ত বাহার রচনা করেছে। আর তাদের বিরহী স্বামী লীগেরা গাজিপুরের বাগান বাড়িতে মৌরালা মাছের ঝোল ও যুবতী নারীর কোলে আলুথালু। কাঠমিস্ত্রির ছেলে বাকশালের চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পাতি জমিদার লীগ হয়ে চুলে জেল দিয়ে হাতে রোলেক্স ঘড়ি পরে সানি লিওন নাচাচ্ছে পাঁচ তারা হোটেলে।

সংগীত ও নাটক লীগ গণভবনে ‘ওগো মা’ বলে হাসিনার পায়ে পড়ে যাচ্ছে। বুদ্ধিজীবী লীগ মুজিব শতবর্ষের হাজার হাজার বই এনে হাসিনার করকমলে নিবেদন করছেন। সাড়ে চুয়াত্তর জার্নালের পঞ্চায়েতে গলায় গামছা দিয়ে ভিন্নমতের লোকেদের ধরে এনে তাদের মুখে চুনকালি দিয়ে দিচ্ছে সাংবাদিক লীগ।

জেনারেল আজিজের ক্যালিবারের সেনা কর্মকর্তারা আয়নাঘর লীগ বানিয়ে হিটলারের গ্যাস চেম্বারের আনন্দ নিচ্ছে।

এসব দেখে শুনে বঙ্গাল মুলুকের সুবেদারকে দিল্লির চৌর্য রাজবংশ পিঠ চাপড়ে দিয়ে বলে, আচ্ছে দিন। এতে পুলকিত হয়ে সাড়ে চুয়াত্তর রাউন্ড টেবিলে বাকশালের চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মধ্যস্বত্বভোগী বলে উঠছে, জয় বাংলা জয় হিন্দ; আওয়ামীলীগ ফেলে বিজেপি পিন্দ।

শেখ হাসিনা তখন এমিরেটার প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খানকে জিজ্ঞেস করেন, এই যে পনেরো বছর কেটে গেল; সর্বময় লীগ যে লুটপাট করেছে; তা দিয়ে বাকি জীবন বসে খেতে পারবে কী!

—চাহিদার কোনো শেষ নাই। তবে হিসাব অনুযায়ী কলকাতা-দিল্লি-দুবাই-এ বসে খাওয়ার মতো সামর্থ্য এদের হয়ে গেছে।

—তাহলে একটা মেটিকুলাস ডিজাইন করো; যাতে এই ঝামেলা থেকে মুক্তি পেয়ে বাকি জীবন একটু শুয়ে-বসে কাটাতে পারি। বুঝতেই পারছ, শীঘ্রই ইকোনমি কলাপস করবে; আবার ৭৪-এর দুর্ভিক্ষ হবে; আবার অমর্ত্য সেন গবেষণা করবে।

এমিরেটাস লেগে পড়েন কাজে। ফারজানা রুপা ও প্রভাষ আমিনকে বলেন, প্রশ্ন নয় প্রশংসা করতে এসেছির আসরে এমন প্রশ্ন করো; যাতে ডমিনো অ্যাফেক্ট হয়। একটা প্যাঁচ লাগাই দেও।

—কী প্যাঁচ দেব!

—প্যাঁচ তো একটাই, স্বাধীনতার পক্ষ ও বিপক্ষ শক্তি। কোটা আন্দোলন নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা বনাম রাজাকারের নাতিপুতি দিয়া এমন প্যাচ দিবা; যাতে প্রমাণ হয়; বাকশালের নাতিপুতি ছাড়া বাকি সবার নাতিপুতি রাজাকার।

কথা অনুযায়ী কাজ হয়ে যায়। প্রথমে রুপা প্রসঙ্গটা তোলে; এরপর প্রভাষ। শেখ হাসিনা মুচকি হেসে ছক্কা মারেন। বাকশালের টাইটানিক জাহাজ গিয়ে হিম শৈলচূড়ায় ঠোক্কর খায়; ডুবে যেতে থাকে। হাসিনা এমিরেটাসকে ফিসফিস করে বলেন, তুমি আত্মগোপনে যাও; বাকিদের কিছু বলার দরকার নাই। এরা সবাই মিলে মানবতাবিরোধী অপরাধ করুক। যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়; আর ফিরে আসতে না পারে।

এরপর শেখ হাসিনা কালো শাড়ি পরে ম্যাকবেথের ডাকিনীর চরিত্রে অভিনয় করেন। মুখে সাদা রুমাল দিয়ে নাটক করেন। আর তোতাপাখির মতো স্বজন হারানোর বেদনার কথা বলেন।

বাহিনীর লোকজনকে ফোন করে বলেন, আগে একবেলা রুটি আর একবেলা ভাত খাইতা; আমি গোপালগঞ্জের পারিবারিক জমির বস্তা বস্তা চাল এনে দুবেলা ভাত খাওয়ালাম। আমাকে তোমরা সেইফ এক্সিট দিবানা! দেখো আমি যদি গাদ্দাফির মতো উন্মত্ত জনতার হাতে মরি; তাহলে আবার হাসিনার মাজার হবে; আবার পুতুল এসে স্বজন হারানোর বেদনার কথা বলে হাসিনা কাল্টের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় যাবে। তারচেয়ে একটা প্লেনে করে আমাকে চৌর্য সাম্রাজ্যের রাজধানী দিল্লিতে পৌঁছে দাও।

দিল্লিতে হাসিনাকে রিসিভ করার সময় গোয়েন্দা প্রতিরক্ষা প্রধান বলেন, ফিরে এসে ভালোই করেছেন হাসিনাজি; ল অফ ডিমিনিশিং রিটার্ন অনুযায়ী আপনার প্রয়োজন আমাদের ফুরিয়ে এসেছিলো। আমরা অন্যান্য দলে আমাদের এসেট সৃষ্টি করেছি, ইলেকশনের মাধ্যমে নতুন সরকার এলেই আমরা রেলগাড়িতে করে আগরতলা যেতে যেতে গান করবো, গদ গদ হুত ত্যাক!

 

১৮৩ পঠিত ... ১৭:১৩, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৫

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

রম্য

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি


Top