জয় শ্রীট্রাম্প

১৮৫ পঠিত ... ১৮:৩২, নভেম্বর ০৩, ২০২৪

27

এমেরিকার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জিততে মরিয়া ট্রাম্প। ঘন ঘন নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করে টিপস নেয়। মোদী ট্রাম্পকে পরামর্শ দেয় হাসিনাকে একটা ভিডিও কল দিয়ে ইলেকশনে জেতার ১০১টি কৌশল শিখে নিতে। ট্রাম্প দেরি না করে দিল্লির লুটিয়েন্স প্যালেসে ফোন করে। তিনি এসময় আরেকটা ফোনে ব্যস্ত ছিলেন, এই কলটা ভাইরাল করতে হবে। কাজেই ইউসুফ সরকারকে ভয় দেখাতে বিগ মাউথিং করছেন।

পুতুল এ সময় টাবুর কাছে এক্সারসাইজ করার প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল। টাবুর ওয়াকিটকিতে নির্দেশ আসে, জয় শ্রীট্রাম্প উনাকে ফোন করার চেষ্টা করছেন; বিজি পাচ্ছেন বারবার। উনাকে ফোনটা ফ্রি রাখতে বলো।

টাবু উনার রুমে ঢুকে ট্রাম্পের ভিডিও কল ট্রান্সফার করে বড় স্ক্রিনে দিয়ে দেয়। ট্রাম্প বলেন, নমস্তে হাসিনাজি।

হাসিনা বলেন, আদাব।

: আপনার পরামর্শ ছাড়া ইলেকশন অচল আজ; প্লিজ বলুন কী করে ইলেকশন জেতা যায়।

: রিপাবলিকান পার্টিকে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি দাবি করে ডেমোক্র্যাটদের স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি বানিয়ে দিতে হবে। আপনার দাদাকে গণমুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করুন। কমলা হ্যারিসের দাদা বৃটিশ কুইনের কোলাবরেটর হিসেবে এমেরিকার সান অফ দ্য সয়েলের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিল; এই গুজবটা ফেসবুকে-টুইটারে ছড়িয়ে দিন। তারপর বলুন এমেরিকার গণমুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতি প্রেসিডেন্ট হবে না তো বৃটিশ রাণীকারের নাতিপুতি প্রেসিডেন্ট হবে। ব্যাস, এতেই অর্ধেক কাজ হয়ে যাবে।

ট্রাম্পের প্রচারণা টিম তার দাদার ছবিতে হাতে বন্দুক ধরিয়ে দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়, সিভিল রাইটস মুভমেন্টে গ্র্যাণ্ড ট্রাম্প।

ভিডিও কলে ট্রাম্পের পাশ থেকে উঁকি দেয় প্রিয়া সাহা। হাসিনা তাকে বলেন, এই প্রিয়া তুমি কাঁদো বাঙালি কাঁদো ক্যাম্পেইন চালু করো। লিখবে, বাংলাদেশে হিন্দু বাঁচাও, ট্রাম্পকে ভোট দাও।

প্রিয়া অভিযোগ করে, আমাদের ছেলে-মেয়েরা ট্রাম্পকে ভোট দিতে চায় না; কী করি দিদি!

: এই জেনজি সবজায়গাতেই ঝামেলা করছে; তুমি বরং আফসোস লীগের সংস্কৃতি মামা ও খালাদের ডোর টু ডোর ক্যাম্পেইন করো। লিখবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাঁচাও ট্রাম্পকে ভোট দাও।

প্রিয়া সাহা জয় শ্রীট্রাম্প বলে নির্বাচনী প্রচারণায় বেরিয়ে যায়।

ট্রাম্প জিজ্ঞেস করে, আর কিছু কী বাদ পড়ল ম্যাডাম।

: ম্যাডাম নয়, স্যার বলুন। ম্যাডাম স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তির ডাক। আপনার তো পুতিনের সঙ্গে ভালো বন্ধুত্ব। রাশিয়ার দূতাবাসের মাধ্যমে চারটি হাতি উপহার দিন পেন্টাগনকে। পেন্টাগনকে বোঝান, কমলা হ্যারিস জিতে গেলে; বাংলাদেশ জঙ্গীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে পুরোপুরি। আর আপনি জিতলে মোদি প্রগতিশীলতায় মৌ মৌ করবে সেথা।

: কপি দ্যাট স্যার।

: যেসব অঙ্গরাজ্যে রিপাবলিকানদের ভোট বেশি সেখানে লাইলাতুল ইলেকশন করে ফেলতে হবে। দিনের ভোট সব্বোনেশে। আর যেখানে ডেমোক্র্যাটদের ভোট বেশি, সেখানে সাইনবোর্ড স্থাপন করুন, এইখানে কলকারখানা হবে; চাকরি পাবে বেকার যুবারা!

: কিন্তু কলকারখানা বানাবে কে!

: বানানোর দরকার নাই; এ হচ্ছে ইলেকশন প্রমিজ; যা কখনও বাস্তবায়নের প্রয়োজন পড়ে না।

: যদি গতবারের মতো আমাকে জোর করে হারিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়।

হাসিনা সোফায় মন খারাপ করে বসে থাকা নওফেলকে ডাকেন, এই বলো তো তোমার আব্বা কীভাবে নির্বাচন কর্মকর্তার অফিস ঘেরাও করত।

নওফেল ট্রাম্পকে বলে, শুধু স্কিন হেড শ্বেতাঙ্গেরা এ কাজ পারবে না। এমেরিকার সেকেন্ড হোমগুলোতে যুবলীগের অনেক কর্মী বসবাস করে। তারা হেলমেট পরে গিয়ে হোয়াইট হাউজে ঢুকে পড়বে। তাদের সামনে থাকবে ইসকনের সংস্কৃতি কর্মীরা; তারা ভক্তিমূলক গান গেয়ে মার্কিন সেনা-পুলিশের মন আর্দ্র করে ফেল

হাসিনা বলেন, হোমলেসদের একশো ডলারের নোট গুজে দিতে হবে; নির্বাচনের আগের রাতে ড্রামে করে বিয়ার পৌঁছে দিন সেখানে। ওরা নেশায় চুর হয়ে আপনাকে ভোট দিয়ে আসবে।

: মুসলিম ভোটারদের কী করি!

: তাদেরকে খাস জমি বরাদ্দের অংগীকার করুন। মডেল মসজিদ নির্মাণের ঘোষণা দিন। আপনাকে নারা-এ তাকবির, আল্লাহু আকবার আর জয় শ্রীরাম; এই দুটি স্লোগান একসঙ্গে নিয়ে ঘুরতে হবে। শোকরানা মেহেফিল ও জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠান দুটোতেই যেতে হবে আগামীর ফ্যাসিজম সুদৃঢ় করতে।

ট্রাম্প খুশিতে পাগলের মতো হয়ে যায়। জিজ্ঞেস করে, ব্যবসায়ীদের কী বলব!

: বলুন, ট্রাম্পের নীতি হবে, লুট করো, লুট করতে দাও, ঝামেলা হলে লুটিয়েন্স প্যালেসে পালাও।

ট্রাম্প তখন চোখ টিপ দিয়ে বলে, যদি ভোটে জিততে পারি, আপনি এসে আপনার ছেলের সঙ্গে থাকতে পারবেন। আপনার মতো পলিটিক্যাল অ্যাডভাইজার ছাড়া পাওয়ারের পারমানেন্ট সেটলমেন্ট করা কঠিন। আপনি আসবেন তো!

: এখানে মোদিজিকেও পরামর্শ দিতে হয়, পুতিনও অনেক কিছু শিখতে চান, বেলারুশের লুকাশেংকো, উত্তর কোরিয়ার কিম জং উন; অনেক ছাত্র আমার ক্ষমতা মাদ্রাসায়। তবু আসব একবার আপনার ট্রাম্প-রাজত্ব দেখতে। অল দ্য বেস্ট, জয় শ্রীট্রাম্প।

নওফেল ও পুতুল সমস্বরে বলে, জয় শ্রীট্রাম্প।

টাবু এসে ধরে নিয়ে যায় পুতুলকে। চলুন আপনাকে আরও পনেরো মিনিট এক্সারসাইজ করতে হবে। রাজত্ব ফিরে পেতে হলে ফিজিক্যাল ফিটনেস খুবই জরুরি।

১৮৫ পঠিত ... ১৮:৩২, নভেম্বর ০৩, ২০২৪

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

রম্য

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি


Top