পতিত স্বৈরাচারী অধিকার রক্ষা পরিষদ (পস্বৈঅরপ) বা Fallen Fascist Rights Protection Council. (FFRPC) নামে একটি সংগঠন যাত্রা শুরু করেছে। এ রকম সংগঠনের আত্মপ্রকাশ পৃথিবীর ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো ঘটেছে। এর আগে কেউ কখনো ফ্যাসিস্টাধিকার বিষয়টি নিয়ে ভাবেনি।
গত ৫ অগাস্ট (৩৬ জুলাই) জুলাই বিপ্লবের ফলে শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট শাসন অবসানের সঙ্গে সঙ্গে এফ এফ আর পিসি যাত্রা শুরু করে। ময়ূখরন্জন ঘোষকে প্রধান উপদেষ্টা করে সভাপতি রাহুল মাল্লা ও সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্র বিশ্বাসের নেতৃত্বে এই অধিকার সংগঠন সক্রিয় রয়েছে।
সম্প্রতি কলকাতার কলেজ স্ট্রিটে এফ এফ আর পিসি একটি মানবন্ধন আয়োজন করে। ময়ূখরঞ্জন ঘোষ সেখানে ড ইউনুসকে মৌলবাদী তকমা দিয়ে বলেন, ভারতকে আমরা যেমন মোদির উদারপন্থার আলোয় গড়েছি; বাংলাদেশও অমন হয়ে উঠেছিলো। কিন্তু কোথা থেকে কখন যে কী হয়ে গেল, সাজানো ফুলের বনে ঝড় বয়ে গেল। খাব না ইলিশ। সিরিয়ার ইলিশ আমি খাই না।
সভাপতি রাহুল মাল্লা তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, জিন্নাহর বাচ্চাগুলোর সাহস দেখলে ইচ্ছা করে আদিত্য যোগীকে বলি বুলডোজার নিয়ে চলো চলো ঢাকা চলো।
অদূরে দাঁড়ানো কয়েকজন জেন জি উত্তর ছুঁড়ে দেয়, ও দাদু আপনি কি মোদির বাচ্চা নাকি সাভারকারের বাচ্চা!
মাল্লা তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বলে, এই যে কতগুলো সেকুলাঙ্গার এসে জুটেছে; আরে তোরা পাকিস্তান চলে যাসনা কেন!
এক তরুণ বলে, সবাইকে পাকিস্তানে চলে যেতে বলে হাসিনা দেখলাম সভাসদ নিয়ে ভারতে এসে পৌঁছেছে; এমন ঘটলে আপনারা কোন দেশে যাবেন, স্থির করেছেন কিছু!
: দূর মুডটাই অফ করে দিলো দেশের শত্রুগুলো।
পরিস্থিতি ভালো নয় দেখে সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্র বিশ্বাস বলেন, প্লিজ আমাদের কথাগুলো বলতে দিন। এই তরুণ ঘোষ তুমি ওদের এক ভাঁড় করে চা দাও দেকি!
ইন্দ্র বলেন, ফ্যাসিস্ট কি মানুষ নয়! তাদেরকে পুলিশ, প্রশাসন, সেনাবাহিনীতে পুনর্বাসিত করতে হবে। ফ্যাসিস্টের মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় সম্মান দিতে হবে। বারো মাসে তেরটি দিবস অক্ষুণ্ণ রেখে ফ্যাসিস্টের দোসরদের বাসায় বিরিয়ানির প্যাকেট পৌঁছে দিতে হবে। সহমত ভাইয়ের কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে; শিবব্রত দাদাকে ছাগে ছুঁলে হনুমান লেলিয়ে দেবো থরে থরে। ললিতাদি'র মিম হলে দেব না ডিম ঘরে ঘরে।
জেন জি'রা হাহা করে হেসে বলে, ইউনুসকে মামা বলে ডাকুন কাকু; উনি আপনাদের সব আবদার পূরণ করবেন।
তরুণ ঘোষ তাদের কাছে গিয়ে ভাঁড়ের চায়ে সুড়ুত করে চুমুক দিয়ে রহস্যময় হাসিতে বাঁকা ঠোটে বলেন, ভারতের বিরাট প্ল্যান হাশিনাকে নিয়ে। জয় শংকর শ্যার শফরনামা সব ঠিক করে রেখেছেন। হাশিনা সুইজারল্যান্ড-ফিনল্যান্ডে গিয়ে ৫ আগশটের পরের খুনোখুনির সব প্রমাণ তুলে ধরবেন পৃথিবীর সামনে। দেখবেন ফট করে হাওয়া ঘুরে যাবে। একটু সময় লাগবে হয়তো; কিন্তু অজিত দোভাল ঠিকই দেখবেন হাশিনাকে আবার সিং হাসনে বসিয়ে দিয়ে আসবেন। আরে ওটা তো হাশিনার বাবার দেশ। ইউনুশ, আশিফ নজরুল এরা কারা! অপেক্ষা করুন; এতো উতলা হবেন না। শুনুন হাশিনা তার প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের দলিল নিয়ে এসেছেন শুটকেশে করে। বাংলাদেশের মানুষগুলোর জন্য মায়াই লাগে। আহারে হাশিনার আমলে যে মানুষগুলো পোলাও কোর্মা খেতো; তারা এখন না খেয়ে আছে; দুর্ভিক্ষ শুরু হলো বলে। বুঝলি নারে বুঝলি না, হাশিনা কি ধন বুঝলি না!
এক জেনজি বলে, দিনে দুপুরে ক'পাত্তর মেরে এসেছেন বলুন তো!
আরেকজন বলে, নারে কাকু আজ দেড় ইঞ্চি ফুঁকে এসেছেন।
আসর জমছে না দেখে ময়ূখ ঘোষ তরুণ ঘোষের কাছে বিদ্যুৎ বেগে দৌড়ে এসে বলে, ছেড়ে দাও দাদা; তোমার এসব গল্প রিপাবলিক বাংলায় বলবে চলো। তুমি তো বাংলাদেশে শিবব্রত দাদাদের হার্ট থ্রব হয়ে পড়েছো এরি মাঝে।
তরুণ ঘোষ বিগলিত হয়ে বলেন, আমি ছোট খাট সামান্য মানুষ; সারাদিন খেটে খুটে আসল খবর বের করে আনি। আমাকে সাবস্ক্রাইব করুন; নইলে বন্ধ করে দেবো ভিডিও করা।
হঠাৎ টাবু এসে উপস্থিত হয়। চিৎকার করে বলে, প্যাক আপ, প্যাক আপ। যাদবপুরের ছেলেরা প্যাঁদানি দিলে তখন বুঝবে। যা করার ইউটিউবে আর টিভিতে করো গিয়ে। এভাবে পাবলিক প্লেসে জটলা কোরোনা।
তরুণ ঘোষ একটা কাগজ আর কলম এগিয়ে দিয়ে বলে, অধমকে একটা অটোগ্রাফ নেবার আর শেলফি তোলার চানশ দেবেন দিদি! জাস্ট টেন সেকেন্ডস প্লিজ।
টাবু তাকে গেট লস্ট বলে একটা কালো গাড়িতে উঠে সাঁই করে চলে যায়।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন