উনার কথা মতোই কাজ হয়। ট্রাম্প-এর ছবি হাতে নূর হোসেন দিবস পালন করতে গিয়ে পুলিশের কাছে ধরা দেয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ। সে দৃশ্য ভিডিও করে রাঁচি বাংলা টিভির ঢাকা প্রতিনিধি।
শিল্পকলা একাডেমিতে দর্শকের ছুঁড়ে মারা ডিমের কুসুম মুখমণ্ডলে নিয়ে প্রাজ্ঞ সংস্কৃতি মামা এবার অবতীর্ণ হন "কাঁদো নূর হোসেন কাঁদো" যাত্রাপালায় বিবেকের চরিত্রে , এরা নাট্য প্রদর্শনী বন্ধ করেছে; অদ্ভুত উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ। হায় গণতন্ত্র, হায় নূর হোসেন।
কে একজন টিপ্পনী কাটে, পনেরো বছর ধরে গণতন্ত্র হত্যায় স্পিকটি নট হয়ে উন্নয়ন উন্নয়ন করে বেড়ালেন; এখন মাত্র তিনমাসেই হায় হোসেন শুরু করেছেন। নূর হোসেনের গণতন্ত্রের আকাংক্ষার সঙ্গে কেউ যদি বিশ্বাসঘাতকতা করে থাকে, সে তো আপনারা।
ট্রাম্পের ছবি নিয়ে কীর্তন গাইতে গাইতে মঞ্চে প্রবেশ করে ইসকন,
সেই শ্রীট্রাম্পের কিছু শুনহ আখ্যান
খোলার পসার করি রাখ নিজ প্রাণ ।
একবার খোলা ষোড় কিনিয়া আনয়
খানি খানি করি তাহা কাটিয়া বেচয়।
তাহাতে যে কিছু হয় দিবসে উপায়
তার অর্ধ গঙ্গার নৈবেদ্য লাগি যায়।
অর্ধেক সওদায় হয় নিজ প্রাণ রক্ষা
এই মত হয় মোদির ভক্তির পরীক্ষা।
কীর্তন শেষ হতেই ইসলামি গান পরিবেশন করে হেফাজত।
এ কোন মধুর শরাব দিলে মেলানিয়া সাকি
নেশায় হলাম দিওয়ানা যে রঙিন হল আঁখি।।
ট্রাম্পের শিরাজি নিয়ে
ডাকলে সবায় যারে পিয়ে,
নিখিল জগৎ ছুটে এলো রইল না কেউ বাকি।।
উনি এসব ভিডিও হাতে পেয়েই ট্রাম্পকে ফরোয়ার্ড করেন। ট্রাম্প ভিডিও কলে উত্তর দেয়, ওয়াও লাভিং ইট, আই উইশ আই কুড বি দেয়ার।
: দে আর ওয়েটিং ফর ইউ।
: বাই দ্য ওয়ে, থ্যাংক্স ফর ইওর ইলেকশন টিপস; ইউ মেড মি উইন দ্য ইলেকশন।
মোদী তখন কংগনা রানাওতকে বলে, চলো কঙ্গনা হাম নিকাল যাতে। আজকাল উনকি পাস হামারে লিয়ে টাইম কাঁহা। হারওয়াক্ত ট্রাম্প; হারকদমমে ট্রাম্প।
কঙ্গনা উত্তর দেয়, আপ ভি না, হামেশা দেশি হুলিয়া বানা রাকখা; কুচ স্যুট টাই কা বন্দোবস্ত কি যিয়ে; ফ্যাশান বদলানা পড়েগা।
ট্রাম্প বলে, মেলানিয়া ওয়ান্টস টু ভিজিট দ্য এভার বেস্ট কোরাল আইল্যান্ডস, সেন্ট মার্টিনস। এন্ড আই ওয়ান্ট টু ভিজিট টুঙ্গীপাড়া। ইউ নো আই লার্ন্ট বেঙ্গলি ফ্রম আনিসুল হক, বুবু আমি কি টোমার আব্বুকে আব্বু বলে ডাকতে পারি।
একথা শুনে অশ্রুসিক্ত হন উনি। উনার চোখে অশ্রু দেখে অশ্রুসিক্ত হয় ট্রাম্প।
ট্রাম্প সিদ্ধান্ত নেয় শপথ গ্রহণের আগেই টুঙ্গীপাড়া ঘুরে আসবে আর মেলানিয়াকে সেন্ট মার্টিনস ঘুরিয়ে আনবে।
ট্রাম্প টুঙ্গীপাড়া পৌঁছে দেখে, লোকজন তার ছবি সামনে নিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খিঁচুড়ি খেয়ে তার বিজয় উদযাপন করছে। মেলানিয়া বলে, তোমরা দাঁড়িয়ে কেন! বসে খাও।
ট্রাম্পভক্তরা উত্তর দেয়, ৫ অগাস্টের পর প্রাণপ্রিয় নেত্রীর পক্ষে মিছিল করায়; আমাদের এমন অবস্থা করেছে; আর বসতে পারিনা; দাঁড়িয়েই কাটাই-খাই-ঘুমাই।
ট্রাম্প তাদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করে। ট্রাম্পভক্তরা জোরে জোরে বলে, আল্লাহ ট্রাম্প ভাইকে আম্রিকার হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ প্রেসিডেন্ট কর; যাতে আমরা আবার আলীমার নেতৃত্বে বলিষ্ঠ চল্লিশ চোর হইয়া উঠতে পারি তার বন্দোবস্ত করার তৌফিক উনাকে দাও।
টুঙ্গীপাড়া সফর শেষে মেলানিয়াকে নিয়ে ট্রাম্প সেন্ট মার্টিনস-এ গিয়ে পৌঁছান। মার্কিন মেরিনেরা তাকে গার্ড অফ অনার দেয়। মেলানিয়া চিতকার করে বলে, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ এই দ্বীপ; এর চেয়ে সুন্দর আর বৃহত্তম প্রবাল দ্বীপ আর দেখি নাই।
ইসকনের কয়েকজন প্রতিনিধি নারকেল ভেঙ্গে স্তবসংকীর্তনে ট্রাম্প ও মেলানিয়ার সেন্ট মার্টিনস সফরকে স্বাগত জানায়। শ্লোগান দেয়, জয় শ্রীট্রাম্প।
হেফাজতের কয়েকজন প্রতিনিধি ট্রাম্পের শানে শোকরানা মেহেফিল করে। তাকে কওমি পিতা উপাধি দিয়ে শ্লোগান তোলে, খলিফা ট্রাম্পের আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম।
ট্রাম্পলীগের লোকেরা নূর হোসেন দিবসের কুম্ভীরাশ্রু বর্ষণের জিরো পয়েন্ট ইভেন্টে জিরো ফলাফল পেয়ে; মানবাধিকার লংঘনের দায়ে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করার আবেদন জানায় পলাতক চল্লিশ চোরের কাছে। রাত ঝুমঝুম ঘন্টা আশ্বস্ত করে, অলরেডি ডান।
আপা শীঘ্রই ফিরছেন এমন আশা ললিতার মনে চনমনিয়ে ওঠে। তারমানে হারানো জমিদারি ফিরে পাওয়া যাবে। স্বপ্ন সুপারশপে বাজার করতে গিয়ে ম্যানেজার পারবেন আপাকে বলে, আজ আর চার টুকরা রুই, এক টুকরা আলু, এক টুকরা বেগুন না; কেজিতে কিনবো আবার। শুনছো তো আপা ফিরতেছেন। ট্রাম্পের সঙ্গে উনার যোগাযোগ হইতেছে।
আপা ফিরতেছেন, এই আশাটুকু সহমত ভাই ও শিবব্রত দাদার বুকে তোলপাড় তোলে। তারা স্বপ্নের ক্ষুদ্র প্যাকেজ না কিনে আজ ঈদুল ট্রাম্পের বাজার করতে শুরু করে।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন