মুফতি আমির হামজাকে হয়ত অনেকেই ওয়াজ-মাহফিলের বাইরে চিনেন না, তবে কিছুদিনের মধ্যেই হয়ত তিনি বিজ্ঞাপনের জগতে পরিচিত মুখ হয়ে উঠবেন। বাংলাদেশের এক শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞাপনী সংস্থা সম্প্রতি তাকে স্ক্রিপ্ট রাইটার হিসেবে যোগদানের প্রস্তাব দিয়েছে। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর জানিয়েছেন, মুফতি সাহেবের এক ওয়াজে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর উপদেষ্টা পদ চলে যাওয়া নিয়ে এত ক্রিয়েটিভ একটা বক্তব্য দিয়েছেন যে সরাসরি তাকে দলে ভেড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।
এজেন্সির এমডি হামজা সাহেবের ভিডিও দেখার সাথে সাথে একটা মিটিং কল করে অন্য সবাইকে দেখানোর পর সবাই নিজেদের দুর্বল স্ক্রিপ্ট নিয়ে হতাশা ও লজ্জা স্বীকার করেই বলেছেন, বাংলাদেশের বিজ্ঞাপন শিল্প বর্তমানে যে টালমাটাল সিচুয়েশনে আছে সেখান থেকে টেনে তোলার জন্য মুফতি আমির হামজা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।
বর্তমান বাংলাদেশে সব কিছুর বিকল্প থাকলেও মুফতি আমির হামজার ক্রিয়েটিভিটির বিকল্প হতেই পারে না। কুষ্টিয়া থেকে বিশেষ খাবার খেয়েই অনেকে স্ক্রিপ্ট লিখতে হিমশিম খাচ্ছে, গল্পের আগা থাকলেও মাঝে ঝুলে যাচ্ছে, আর অন্যদিকে মুফতি সাহেব কী অবলিলায় গল্প বলে যাচ্ছেন। আমরা আমাদের এজেন্সিতে এজন্যই মুফতি সাহেবকে চাচ্ছি।—ফেসবুক স্ট্যাটাসে এজেন্সির ক্রিয়েটিভ হেড।
মুফতি সাহেবের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি জানিয়েছেন, ছোটো থেকেই তিনি শাক সবজি খেতেন নিয়মিত। ছোটো থাকতে সবজি না খেলে মা অনেক মন খারাপ করতেন, মাঝে মাঝে খুব উদাস কণ্ঠে বলতেন, খোকা সবজি খা, সবজি না খেলে বড় হতে পারবি না, দেখ পাশের বাসার রুস্তম প্রতিদিন সবজি খায়, ওর সাথে কথা বললে তুই দেখিস নিয়মিতই সবজি খাবি। মায়ের সেই কথা ফেলতে পারিনি। আজ হয়ত সেটার ফল পাচ্ছি।
এদিকে বাংলাদেশের অন্য সব এজেন্সির কপিরাইটার, স্ক্রিপ্ট রাইটার ও ক্রিয়েটিভ হেডের মাথায় দুশ্চিন্তার বিশাল এক রেখা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। আমির হামজা যদি একট বিশেষ এজেন্সিতে যোগ দেয় আর নিজের ক্রিয়েটিভিটির সঠিক প্রয়োগ করতে শুরু করে তাহলে তাদের ভাতের টানাটানি শুরু হয়ে যাবে।
‘এজেন্সি বাঁচাও, আমির হামজা ঠেকাও’ নামে একটি ফেসবুক ইভেন্ট খুলে তারা মুফতি সাহেবকে এজেন্সিতে যোগদান থেকে বিরত রাখতে উদ্যোগ নিচ্ছে। তাদের দাবি, মুফতি সাহেব যদি ওয়াজের দুনিয়া ছেড়ে বিজ্ঞাপনে পা রাখেন, তবে তাদের পেশাগত জীবন হুমকির মুখে পড়বে।