গণতন্ত্র যে ভেড়াদের শাসন করার পদ্ধতি, সেটা বুঝতে পেরে যুগে যুগে নানা স্বৈরাচার এসে পৃথিবীকে নিজেদের মতো শাসন করেছে। তবে, একই সময়ে একাধিক স্বৈরশাসক এক সঙ্গে পৃথিবীতে শাসন করছে, এমনটা আগে আমরা হয়তো দেখিনি। বর্তমান সময়ে পুতিন, হাসিনা, বাশার, কিম জং ও মোদি মিলে ঠিক করেছেন পৃথিবীকে গণতন্ত্রের গ্রাস থেকে মুক্তি দিতে, এবং এজন্য তাদের কোনো বিকল্প নেই।
পুতিন কিংবা হাসিনা, বাশার কিংবা কিম জং, মোদি—সবাই দেশের জন্য চিন্তা করতে করতে অনেক আগেই গদির সঙ্গে এক অদৃশ্য আঠার মতো মিশে গেছেন। দেশের ভাবনায় রাতে ঘুম আসে না, দিনে মুখ দিয়ে খাবার নামে না, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় গেলেও তারা দেশ নিয়ে মুখে ফেনা তুলে ফেলেন, তবে বড় পরিসরে তারা একতা এনে কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন করতে পারেননি। অনেকেই ষড়যন্ত্র করে তাদের দেশ থেকে বের করে দিচ্ছে কিংবা পালিয়ে যেতে বাধ্য করছে।
এমন অবস্থায় ঘোষণা এল আন্তর্জাতিক ঐক্যের। সারা বিশ্বের সব স্বৈরশাসক এক হলে মানবতা মুক্তি পাবে। দুনিয়া হবে মানুষের, উন্নয়ন হবে পৃথিবীর প্রতিটি ইঞ্চিতে, এবং জিডিপির পাখনা গজাবে—এমন চিন্তা থেকেই এই ঐক্যের ডাক। আর প্রবাদ আছে, দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ; তাই একা একা লড়াই না করে, ব্রাদার ইন আর্মসের মতো এক হয়ে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ব নেতারা।
রাশিয়া থেকে খবর এসেছে, একে একে হাসিনা ও আসাদের পতনের পর সবার কপালের ভাজ যেন আরও একটু কুচকে গিয়েছে। বিভিন্ন দেশের মানুষ যদি এমন পাগল হয়ে থাকে, তাহলে দুনিয়ায় ভালো মানুষের আর কোনো দাম থাকবে না। তাই বৃহৎ স্বার্থে সবাই এক হওয়ার পরিকল্পনা বেশ কয়েক মাস ধরেই চলছিল, এবং আসাদের পতনের পর ঘোষণা এল আন্তর্জাতিক ঐক্যের।
মাখন-পনির খাওয়ার ফাঁকে কিম জং উন বলেছেন, সকল স্বৈরাচার ভাই ভাই, স্বৈরাচার বাদে আর কারও ভাত নাই। আমরা এমন এক বিশ্ব কল্পনা করি যেখানে মানুষের কোনো দুঃখ থাকবে না, ইন্টারনেট সুবিধা পাবে, পড়াশোনা হবে মহাকাশ স্তরের। অথচ কিছু স্বার্থন্বেষী মহল চায় দুনিয়া অন্ধকার যুগে ফিরে যাক, তারা কারও ভালো হতে দিতে চায় না। তাদের শক্ত হাতে মোকাবিলার জন্য আমরা আমাদের লড়াই চালিয়ে যাব।
মোদি বেশ ফুর্তিতে আছেন, শেখ হাসিনা বাসায় অতিথি হয়ে আছেন, আসাদের বিমানের গতিপথ ও তার বাসার দিকে, আসাদ পৌঁছালে, কিম জং ও পুতিনের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করে তাদের সংঘের লোগো প্রকাশ করা হবে, এবং থিম সং বানানোর জন্য ইউসুফ সরকার তো আছেই। জীবনটা এত ফুরফুরা লাগে না কখনও।