লেখা: উমামা ফাতেমা
আজ বইমেলায় স্যানিটারি ন্যাপকিনের স্টল বন্ধের ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদের জবাবে বাংলা একাডেমি একটি বিবৃতি দিয়েছে। যেখানে আজম স্যারের পজিশন ব্যক্ত করা হয়েছে, যা আমার কাছে যথেষ্ট অস্পষ্ট জবাব বলে মনে হয়েছে। তবে এই প্রসঙ্গের ইতি টানা জরুরি। তাই দুটি কথা বলে যাই—
১#
বাংলা একাডেমি বইমেলায় এবার যা হলো তা খুবই দৃষ্টিকটু। মেলায় ঢোকার পথে সারি সারি দোকান। স্যুপ, নুডলস, ড্রিংকস, কফি, হ্যান্ডওয়াশ, চিপস, চানাচুর কী নাই এখানে! আমি বন্ধুর কাছে মজা করে বলছিলাম জাস্ট ক্রোকারিজের দোকান বাদ পড়ছে। এটা থাকলে বাণিজ্য মেলাই হয়ে যেত। বাংলা একাডেমির আর্থিক সক্ষমতা কম থাকতে পারে ভেবে এ বিষয়ে চুপ ছিলাম। কিন্তু বইমেলার ১৫ দিন পর বাকিসব স্টল বাদ দিয়ে স্যানিটারি ন্যাপকিনের স্টল নিয়ে প্রশ্ন ওঠাটা নারীদের মনে সন্দেহ তৈরি করে। যেভাবে আশেপাশের পরিবেশ মেয়েদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে যাচ্ছে এই প্রশ্ন ওঠা কোনোভাবেই অস্বাভাবিক না। সাধারণ মেয়েরা যার যার জায়গা থেকে এই কনসার্ন শো করেছে।
২#
মোহাম্মদ আজম স্যার আমার অত্যন্ত প্রিয় শিক্ষক। বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর থেকে আজম স্যারের কাছে যেভাবে এক্সেস ছিল তা অন্য কোনো শিক্ষকের কাছে ছিল না। পাঠচক্র বলি বা প্রশাসনিক সমস্যা, স্যারের কাছে সাহায্য খুঁজেছি সবসময়। তাই আজম স্যারের ব্যাপারে যেকোনো মন্তব্য করার আগে আমি দুইবার ভাবি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে মেয়েদের মধ্যে কমিউনিটি আকারে একটা আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে। যেকোনো ইস্যুর সেনসেটিভিটিতে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নেওয়ার সক্ষমতা স্যারের আছে বলে বিশ্বাস রাখি। আশা করি, আজম স্যার বাংলা একাডেমিতে থাকাকালীন তার মর্যাদাসম্পন্ন ও ছাত্রবান্ধব চরিত্রের প্রতি ন্যায়বিচার করে যেতে পারবেন।
অভ্যুত্থানের পরে মেয়েদের সার্বিকভাবে ইনসিকিউরড হওয়া কোনো ভালো লক্ষণ না। অভ্যুত্থানে মেয়েদের যে ধরনের অ্যাক্টিভ পর্টিসিপেশন ছিল এটা বর্তমানে নীতি নির্ধারকদের মানসপট থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। এখন জনে জনে ধরে বোঝাতে হয়—
'মেয়েরাও তো ছিল'
অথচ এই আন্দোলনে এমনও দিন ছিল যেদিন মিছিল দেখে মনে হতো—
'মেয়েরাই তো ছিল'
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন