বেলারুশে রাশিয়ার রেলসংযোগ কি তেলসংযোগ!

১১৭ পঠিত ... ১৮:০২, জুন ২৭, ২০২৪

20 (16)

বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকেশেংকো একই সপ্তাহে দ্বিতীয়বার মস্কো সফরে গিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বেশ কিছু চুক্তি স্বাক্ষর করেন। সাবেক সোভিয়েত আমলে রাশিয়া থেকে বেলারুশের মাঝ দিয়ে যে রেলসংযোগগুলো ছিলো সেগুলো আবার চালু করার সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়।

এই খবরে বেলারুশের সাধারণ মানুষ যথারীতি নাখোশ হয়। ফেসবুকের ক্যান্ডল লাইট পার্টি বেলারুশের মানচিত্রের মধ্যে রেলপথে সাপের মিম বানিয়ে প্রতিবাদ জানায়।

মস্কো সফর থেকে ফিরে লুকেশেংকো সংবাদ সম্মেলন করেন যা ‘প্রশ্ন নয় প্রশংসা করতে এসেছি’ নামেই জনপ্রিয়। লুকেশেংকোর ভক্ত এক সাংবাদিক তেলাঞ্জলি দেবার ছলে একটি কঠিন প্রশ্ন করে বসে, মাননীয় নয়নের মণি, ফেসবুকে বেলারুশের শত্রুরা বলছে, এটি রেলসংযোগ নাকি তেলসংযোগ!

লুকেশেংকো বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নে জার্মানির ট্রেন যে নেদারল্যান্ডসে যায়; ডাচরা কী বলে যে এটা তেল সংযোগ!

ফেসবুকে লোকজন প্রশ্ন তোলে, জার্মানি কি ঠিক করে দেয় যে নেদারল্যান্ডসে ক্ষমতায় কোন দল থাকবে!

লুকেশেংকোর ভক্তরা উত্তর দেয়, বেলারুশের স্বাধীনতা অর্জনে রাশিয়ার যে অবদান রয়েছে; সে ঋণ কি যা-তা কথা! এতো অকৃতজ্ঞ হন কি করে মশয়!

ক্যান্ডল লাইট পার্টির লোকেরা বলে, ঋণ স্বীকার মানে কী বেলারুশের সার্বভৌমত্ব রাশিয়ার হাতে সমর্পণ। সে ইউক্রেনের ওপর প্রভাব বজায় রাখতে বেলারুশের রেলপথ ব্যবহার করবে। বেলারুশের এতে কী লাভ?

লুকি তেলাঞ্জলি পরিষদের সভাপতি বলে, আপনারা দেখছি সি আই এ, মোসাদ হয়ে গেস্টাপোর মতো কথা বলছেন। আচ্ছা এই যে আপনারা বলেন, পুতিন লুকেশেংকোকে ক্ষমতায় বসিয়ে রেখেছে; এর প্রমাণ কী! আজব তো!

ক্যান্ডল লাইট পার্টির মুখপাত্র বলে, সাবেক সোভিয়েত নেতা বরিস ইয়েলেতসিন তার আত্মজীবনীতে লিখে গেছেন, ‘বেলারুশের সঙ্গে বন্ধুত্বচুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গে সুপারন্যাচারাল ফেডারেশন বা ইউনিয়নে বেঁধে রাখার শুভ সূচনা করে গেলাম।’ এই যে বেলারুশের প্রতিটি নির্বাচনের আগে পুতিন বলেন, বেলারুশের নেতৃত্বে বারবার লুকেশেংকোকেই দেখতে চাই। বেলারুশের রাজধানী মিনস্কে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত দৌড়ঝাঁপ করে বেড়ান নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখাতে দুর্বল বিরোধী দল জোগাড়ে; লাইলাতুল ইলেকশনের ভোরে তিনি ফুল নিয়ে দৌড়ে যান লুকেশেংকোর কাছে বিজয়ী অভিনন্দন জানাতে! আর কতো প্রমাণ চাই রুশ আগ্রাসনের! আপনারা যে দৌড়ে দৌড়ে মস্কো যান, বেলারুশের জমিদারির চিরস্থায়ী বন্দোবস্তী ধরে রাখতে! তৈলাক্ত করে তোলেন ক্রেমলিনের মেঝে!

বেলারুশ-রুশ সম্প্রীতি সংঘের প্রেসিডেন্ট কুঁচকুঁচ বলে, পরিষ্কার করে বললেই হয় আপনারা ন্যাটোর দালাল; তা বাপের দেশ আম্রিকায় বা ক্যানাডায় চইলা গেলেই পারেন! চুপ থাহেন, আমরা অখন ট্রেনে চইড়া সাইবেরিয়া যামু; ভালো চিকিতসা করাইতে লেনিনগ্রাদ যামু; পুটুশ কইরা যামু আর আমু! অযথা হিংসা কইরেন না!

লুকেশেংকো ‘প্রশ্ন নয় প্রশংসা করতে এসেছি’-র আসরে বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে শান্তিরেলচুক্তি স্বাক্ষরের জন্য আসলে আমার নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার কথা। কিন্তু নোবেল কমিটি চলে ন্যাটোর হুকুমে! তাই চাই না নোবেল; আমার সমর্থকদের তেলই আমার জন্য যথেষ্ট; এতো তেল নোবেল পুরস্কার বিজয়ীরা কখনো চোখেও দেখেনি!

১১৭ পঠিত ... ১৮:০২, জুন ২৭, ২০২৪

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

রম্য

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি


Top