আয়নাঘরের ছোট চুল সুঠাম দেহী খান সদলবলে উপস্থিত হয় দেবর-ভাবি থিয়েটার কেন্দ্রে। শেষ মুহূর্তে তারা বেঁকে বসেছিলো, আমগো দিয়া আর বিরোধী দলের অভিনয় হইব না; আমরা আর পারতেছি না।
সুঠাম দেহী খান বিরক্ত হয় থিয়েটার নির্দেশক অগ্নিহোত্রী বাবুর ওপর। এই একটা কাজ ঠিক মতো করে দিলেন না তিনি। এতটা সময় পেলেন দেবর ভাবি থিয়েটার গ্রুপটিকে বিরোধীদলের অভিনয় শেখানোর। অথচ এরা যে অভিনয় করছে; দেখে মনে হচ্ছে সরকারি দল।
: কখনও দেখেছেন নাকি যে বিরোধীদল এসে সরকারি দলের কাছে আবদার করছে; সম্পর্কটা যে প্রতিপক্ষতার তা তো মনে রাখবেন নাকি!
: আমরা দশবছর ধরে সহমত ভাইয়ের চরিত্রে অভিনয় করে চলেছি; আজ হঠাত ভিন্নমত ভাই হতে বললে কী চলবে!
: ঠিক আছে আপনি আর আপনার স্ত্রী; আপনারা দুজনেই থাকছেন; তবু বেঁকে বসবেন না; যতটা পারুন বিরোধী দলের অভিনয় করুন।
: ২৬ টাকা পারিশ্রমিকে ২৬ জন বিরোধীদলের অভিনেতা; এই কী হয় নাকি মশায়! আমরা আশা করেছিলাম কমপক্ষে ৭০ টাকা দিবেন!
: ভোটানন্দের বরাদ্দ এক টাকার বিরোধী দলীয় অভিনেতা। ২৬ টাকা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকেন। মনে রাখবেন, ভাত ছিটালে কাকের অভাব নাই। আধুলিতেও তৃণখড়ের বিরোধী দল পাওয়া যাচ্ছে।
গাঁইগুঁই করে রাজি হয়ে যায় দেবর-ভাবি থিয়েটার; যেটা ক্রমেই স্বামী-স্ত্রী থিয়েটার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে।
সাধারণ মানুষ হাসাহাসি করতে থাকে, এ আবার কেমন বিরোধীদল! সরকারি দলের কাছে আসন চায়। হাসির রোল বাড়তে থাকলে একেবারে বুকে লেগে যায় বুদ্ধিজীবী চেয়ারের, মুনতাসির ফ্যান্টাসি তাই সেমিনারে আক্ষেপ করে বলে, এত নির্লজ্জ এই শরিক আর বিরোধীদল; ভোটে দাঁড়ানোর সামর্থ্য নেই; চেয়ে-চিন্তে আসন নেয়।
এক দর্শক সামনের সারি থেকে বলে, যেইখানে বুদ্ধিজীবীই এত নির্লজ্জ সেইখানে রাজনৈতিক নেতা আর এমন সলজ্জ হইবো কই থিকা!
দেবর-ভাবি থিয়েটার দেন-দরবার করে এক টাকার বিরোধীদল হয়ে যাবার পর তৃণখড়ের ন্যাশনালিস্ট মোরগেরা ভাতের হোটেলে গিয়ে জিজ্ঞেস করে, আপনারা না কইছিলেন, এইবার আমরা এক টাকার বিরোধীদল; তো কী হইলো সে কথার! আমরা তো দেখতেছি গাইহারা বাছুর হইয়া থাইকা গেলাম!
: আপনারা কইছিলেন, অভিজ্ঞ সব ন্যাশনালিস্ট নিয়া আসবেন; পারলেন কই! যে দুই চারজন জোগাড় করছেন; ঐদিয়া কী হয় নাকি!
: কন যে আপনারা কক ট্রেডিংটা পারেন না; ন্যাশনালিস্ট মোরগ ইধার-উধার করা তো শেখেন নাই; খালি বড় বড় ধমক আপনেগো!
এক সরকারি নেতা আক্ষেপ করেন, নাহ ঠিক মতো জমতেছে না কিছুই! প্রধান বিরোধীদের এতো যে বুঝাইলাম, ভোটানন্দে চইলা আসেন; এক রাইতের মধ্যে জেল থিকা মুক্তি নিয়া নেন; কিন্তু রাজি হইলো কৈ!
সাংবাদিক জিজ্ঞেস করে, অগো সব জেলে ভরলেন কেন! দেইখাই তো মনে হয় এইখানে আর গণতন্ত্র নাই!
: ওরে বাবা; অগো আটকাইয়া না রাখলে ভালোয় ভালোয় ভোটানন্দ হইতে পারবে কী কইরা!
: তার মানে আটকাইয়া রাখার মালিক আপনেরাই!
জিভ কাটেন নেতা। তখন সরকারি বিবেক এসে বলেন, এইটা উনার ব্যক্তিগত বক্তব্য। অফিশিয়াল বক্তব্য হচ্ছে, এইসব জেল টেল কী কইরা হয়; আমরা তার কিছুই জানি না।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন