ঢাবির সমাজ-বিজ্ঞান অনুষদের যত বর্ণ সমাচার

৪২১ পঠিত ... ১৭:২৩, এপ্রিল ২০, ২০২৪

34 (3)

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জনের মাঠে হাঁটলেও নাকি কার্জনের ঘাস থেকে জ্ঞান বের হয়। সেই জ্ঞান গর্বে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝে কার্জন হলে ক্লাস করা বিজ্ঞান অনুষদের বিভাগগুলোকেই ধরা হয় সর্বোচ্চ মেধাবী বিভাগ, অন্তত লোকোমুখে তো তাই শোনা যায়! তাই মেধার বিচারে তাদের ব্রাহ্মন ধরা যেতেই পারে।

লোকমুখে আরও প্রচলিত আছে, কলাভবন ও টিএসসিতে সারাদিন তাফালিং করে বেড়ানো বিভাগগুলোর ছাত্র-ছাত্রীদের বেশ তাচ্ছিল্যের চোখেই দেখা হয়। তাই সেই হিসাবে তারা শূদ্র সমান। এতো গেল, ঢাবি কাল্পনিক বর্ন সমাচার।

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান আর কলা অনুষদের বিভাগগুলোর মাঝেও ‘শ্রেণি বিভাজন’ করেছেন ‘লাল বাস; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’নামের একটি ফেসবুক পেইজ। 

সমাজবিজ্ঞান ও কলা অনুষদের ডিপার্টমেন্টগুলোর মাঝে শ্রেণিবিভাজন করে তারা ভগবানের জায়গা দিয়েছেন আইন এবং অর্থনীতিকে। রয়্যাল ডিস্ট্রিক্ট নোয়াখালীর পর ঢাবির সমাজবিজ্ঞান অনুষদে কান পাতলেও শুনতে পাবেন ‘রয়্যাল ডিপার্টমেন্ট, রয়্যাল ডিপার্টমেন্ট বিজিএম।

ডিপার্টমেন্টের ‘কোয়ালিটি’ যেমনই হোক, ঢাবি যেমন তার ঐতিহ্যের জোরে আজও সেরা, তেমনি তার রয়্যাল ডিপার্টমেন্টরাও সেরা। অন্তত আকাশ, বাতাশ তো তাই বলে। রাজপথের দিকে তাকালেও বিষয়টা অনুমান করা যায়। এছাড়াও চাকরির বাজারে এই দুই বিভাগের শিক্ষার্থীর ডিমান্ডও বেশি। তাই এদের ভগবান তো মানা যেতেই পারে। অন্য ডিপার্টমেন্টের সবার উচিৎ প্রতিদিন ক্যাম্পাসে ঢোকার সময় আইন ও অর্থনীতি বিভাগকে প্রণাম করে যাওয়া। 

এরপরেই ব্রাহ্মণ সিল পেয়েছে ইংরেজি, লোকপ্রশাসন, আন্তর্জাতিক সম্পর্কসহ আরও কিছু বিভাগ। সমাজের উচু স্তরেই তো তাদের বসবাস। ভগমানের ঠিক পরে। কেউ কেউ তো বলেন, দেশটা বোধহয় তারাই চালান। যদিও এমন কথা শুনে আইবিএ-র ব্যবসায়িরা মুচকি মুচকি হাসে।

সমাজবিজ্ঞান, সাংবাদিকতা আর উইমেন ও জেন্ডার স্টাডিজ যে একটু নিচু স্তরে থাকবে তা তো তাদের প্রতি অবহেলা দেখলেই বোঝা যায়। কেন এমন অবহেলা বলেন তো?

এরপরেই বৈশ্য ও শূদ্র সিল পেয়েছে যেসব বিভাগ সেগুলোর নামে আপনি প্রায়ই শুনবেন ‘এইসব ডিপার্টমেন্টে আবার কে পড়ে!’ কিংবা ‘এগুলায় মনেহয় ভর্তি হয়ে মানুষ বিসিএসের প্রিপারেশন নেয়’ মূলক কথা।

শেষমেশ সমাজকল্যাণ, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটগুলোকে দেওয়া হয়েছে ভিনদেশি ট্যাগ। এ বিষয়ে চন্দ্রবিন্দু বহু আগেই বলে গিয়েছেন, আমার ভিনদেশি তারা, একা রাতেরই আকাশে, তুমি বাজালে এক তারা আমার চিলেকোঠার পাশে…

অন্যদিকে ইতিহাসকে বলা হয়েছে ‘অস্পৃশ্য’ । টিএসসির বাতাসে কান পেতে জানা যায়, ইতিহাস বিভাগে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার এমন যাঁতাকলে পিষ্ট করা হয় যে এই বিভাগকে স্পর্শ করলেও আপনার জাত চলে যেতে পারে।

৪২১ পঠিত ... ১৭:২৩, এপ্রিল ২০, ২০২৪

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি

স্যাটায়ার


Top