গোটা পৃথিবীতে সাহিত্য সমালোচনা হয় টেক্সট, স্টাইল, ফরমেট, জনরা নিয়ে; মানে সাহিত্যিকের রচনা ঘিরেই আবর্তিত হয় লিটেরেরি ক্রিটিসিজম। সাহিত্য সমালোচনা মানে লেখার ভালো দিক-মন্দ দিক সবই। কিন্তু শ্রীখণ্ডে যেহেতু কেবল সাধু ও সন্ন্যাসীর বসবাস; তাই একজন সাহিত্যিককে সীতার মতো অগ্নিপরীক্ষা দিতে হয়। দেশপ্রেম ও ধর্মপ্রেম অধিদপ্তরের চরিত্র সনদ পেতে হয়। তারপর আসে টেক্সট বা সাহিত্যিক গ্রন্থে কী লিখেছেন সে বিষয়।
এখন আমরা দেখবো পশ্চিমের বিভিন্ন লেখক যদি শ্রীখণ্ডে জন্মাতেন, তাহলে তাদের সাহিত্য নিয়ে সমালোচনার নমুনা কেমন হতো।
ফিওদর দস্তয়েভস্কি: বিরাট রাইটার শুইনা দস্তয়েভস্কির ব্যাপারে আগ্রহ বাড়ছিল। পরে একদিন জার্মানি প্রবাসী কালামানিক ভাই কইলেন, অই তুই কি জানস! দস্তয়েভস্কি একজন জুয়াড়ি শয়তান আছিলো। একবার বাভারিয়ার বাদেন বাদেনে গিয়া দেখি কী, সেইখানে দস্তয়েভস্কির নামে একটা জুয়াঘর আছে। সে ‘গ্রেট গ্যাম্বলার’ নামে একটা উপন্যাস লিখছিলো। বাদেন বাদেনে হালাল মাংসের দোকানের মালিক সগির ভাই কইলো, দস্ত লুকটি মদ খাইয়া মাতাল হইয়া মাইয়াগো বগলদাবা কইরা ঘুরতো ঐখানে; ছ্যা ছ্যা ছ্যা!
শার্ল বদলেয়ার: শার্ল বদলেয়ারের একখান কবিতা পইড়া ভাবলাম, ভালোই তো লেকে। কিন্তু পরে প্যারিসের ধনঞ্জয়দা কইলেন, বদলেয়ার একটা আস্তা বদ ছিল। মুলানরুস নামের সোনাগাছিতে তার বাঁধা মেয়ে মানুষ আছিলো। লুকটা একটা ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টে বাকিতে খাইয়া পরে টেকাটুকা কিছুই দেয় নাই। চিন্তা কইরা দেখলাম কবি সাহিত্যিক হইনাই দেইখা অনেক ভালা আছি। ধনঞ্জয়দার অবসর সময় কাটে মন্দিরে; আর আমার সময় কাটে চিল্লাতে। আমি তো লন্ডন গেছিলাম চিল্লা দিতে।
জা পল সার্তে: জা পল সার্তের বাপে বৃটিশ গো চাকরি নিয়া ইন্ডিয়া গিয়া কী এক ভাইরাসে মরছে জানি। সে ঔপনিবেশিক দালালের পোলা। আর তার পারসোনাল লাইফ; ছি ছি; কী কমু আর! সে আর তার ওয়াইফ ওপেন ম্যারেজে আছিলো। এর বেশি জিগায়েন না আর; ওজু কইরা আইতে হইবো। পলের নানা ভালা লোক আছিলেন না; সুদখোর-রক্তচোষা আছিলেন। আবার বড্ড নাক উঁচা তার। পল যদি স্কুলে গিয়া আমগো মতন গরিবের পোলার লগে মিইশা নষ্ট হইয়া যায়; তাই ছুডুবেলায় বাড়িত রাইখা পড়াইছে। কিন্তু ফলাফল কী হইলো! ওপেন ম্যারেজ ছি! যাই ওজু কইরা আসি।
মিলান কুন্ডেরা: মিলান কুন্ডেরা চেকোশ্লাভাকিয়ার উন্নয়নের সরকারের শত্রু আছিলো। প্রাগে যে প্রাহা সেতু হইলো; সেইটা দেইখাও তার চোখ টাটাইছিলো। আসলে সে চেকোশ্লাভাকিয়ার কাঁচা পায়খানা ফালাইয়া প্যারিসের পাকা পায়খানা পাওয়ার লোভে পলিটিক্যাল এসাইলামের গল্প সাজাইছিলো। তার হিচ হাইকিং গল্প পইড়া মনে হইলো, ব্যাটা পারভার্ট একটা। আরেকটা গল্পে সে এক সুগার মমের গল্প বলছে; সুইজারল্যান্ডের এক অ্যাপার্টমেন্টে কী যে করলো সে; মুখে আনা যায়। আপনারা ক্যান যে এইসব লোকরে এতো পাত্তা দেন!
উইলিয়াম শেক্সপিয়ার: শেক্সপিয়াররে নিয়া এতো লাফাইয়া লাভ নাই। সে ছিলো বৃটিশ রাণীর দালাল; টেমস নদীর ধারে সে একটা প্লট নিয়া বিরাট বাড়ি বানাইছিলো। আচ্ছা কন তো; খালি নাটক লেইখা কী এমন বাড়ি বানান যায়! সেই আমলে তো কুইক রেন্টাল আছিলো নারে ভাই! আরো একটা ব্যাপার শুনছি; একটা নাটকও সে লেখে নাই। ক্রিস্টোফার মার্লোরে মদ খাওয়াইয়া স্ক্রিপ্ট নিয়া নিছে। আর থিয়েটার অভিনয়ের শখে যেইসব দামকুড়া মাইয়া আসতো; তাগো নিয়া কাস্টিং কাউচে টেম্পেস্ট ঝড় তুলতো সে। বাদ দেন ঐসব শেক্সপিয়ার! এখন থিকা সেক্সপিয়ার কইবেন তারে।
গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ: এই লোকটা কলাম্বিয়ার উন্নয়নের সরকারের খালি সমালোচনা করতো। সে আসলে স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি আছিলো। বোগোতা থিয়া পলাইয়া মেক্সিকো সিটিতে গিয়া বড়লোকের মাইয়া বিয়া কইরা থাইকা গেছিলো। সে যে নিজেরে সাংবাদিক পরিচয় দেয়; কীসের সাংবাদিক; সে আছিলো মেক্সিকোর আর্মি ব্যাকড জার্নালিস্ট। ঘর জামাই থাকতো ক্যান্টনমেন্ট এলাকায়! কী আমার ম্যাজিক রিয়ালিজমরে; ল্যাঞ্জা ইজ ভেরি ডিফিকাল্ট টু হাইড। ভালো হইছে ডিমেনশিয়া হইয়া মরছে; পাপের শাস্তি। সে কলাম্বিয়ার মানুষ গো লগে বিট্রে করছে।
জালালউদ্দিন রুমী: আছিলো বড়লোকের পোলা; নোম্যাডগো দাবড়ানি খাইয়া আফগানিস্তান থিকা তেহেরান গিয়া খুব পাট লইছিলো। ঐখানে দাবড়ানি খাইয়া গেছে তুরস্কের আনাতোলিয়ায়। আনাতোলিয়ার রাজার বউয়ের লগে ইটিশ পিটিশ কইরা ইউনিভার্সিটির টিচার হইছিলো। কন রাণীর লগে প্রেম না থাকলে কোনিয়ে শহরে রুমীর কবরস্থান ঘিরে এত কিছু করার কোন ঠ্যাকা পড়ছিলো রাণীর। আবার শুনি এক ছেলে বন্ধুর লগেও প্রেম আছিলো। কুনহানে যে যাই; এ যে দেখতেছি, কাভি খুশি কাভি গাম; আল্লা আর পারিনা দড়ি ফালাউ উইঠা যাই।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন