সম্রাট আকবর দরবারে এক উদ্ভট প্রশ্ন করে বসলেন, ‘বলো দেখি, খোদাতালা বড় না আমি বড়?’
দরবারীরা মনে মনে একটু বিরক্তই হলেন। এ রকম আজব প্রশ্ন করার মানে কি? স্রষ্টার সঙ্গে নিজের তুলনা। এটা তো ঠিক নয়। শেষে কয়েকজন দরবারী বললেন, ‘আসলে জাঁহাপনা, আপনি অনেক বড় ঠিকই, কিন্তু খোদার চেয়ে বড় নন। খোদাই বড়।’
কিন্তু বীরবল বললেন, ‘আজ্ঞে সম্রাট বাহাদুরই খোদার চেয়ে বড়। আপনি যা করতে পারেন খোদা তা করতে পারেন না।‘
বীরবলের কথায় সবাই স্তব্ধ। এতবড় কথা। বীরবল তো খোদাদ্রোহী হয়ে যাচ্ছে। সম্রাট পর্যন্ত ক্ষুদ্ধ হয়ে বললেন, ‘তোমার কি মাথা খারাপ হলো? এমন তোষামদ আমি মোটেও পছন্দ করি না। এসব আবোল-তাবোল কথা কক্ষণও বলবে না।’
বীরবল বললেন, ‘আজ্ঞে, আমি ঠিকই বলেছি।’
এবার ধমকে উঠলেন সম্রাট। কিন্তু বীরবল বললেন, ‘আগে আমার কথাটা শুনুন। সম্রাট ইচ্ছা করলে কোন লোককে নিজ রাজ্য থেকে তাড়িয়ে দিতে পারেন। মেরে ফেলতে পারেন। কিন্তু খোদা? তিনি কি কোন মানুষকে তাঁর রাজ্য থেকে তাড়িয়ে দিতে পারেন? তিনিই তো সব কিছুর প্রভু। জলে স্থলে সর্বত্রই তার আধিপত্য। তাই তো মানুষ মরার পরও খোদার অধীনে থাকে। অন্য কোথাও যাবার জো নাই। এই জন্যেই তো সম্রাট যা পরেন খোদা তা পারেন না।’
সবাই হেসে উঠলেন। হাসতে হাসতে সম্রাট বললেন, ‘তোমার কথা মানলাম বটে, কিন্তু ভবিষ্যতে খোদা নিয়ে এমন কথা আর বলবে না, মস্করা করবে না।’
বীরবল সহাস্যে বললেন, ‘তাহলে আপনিও আর খোদা নিয়ে এমন উদ্ভট প্রশ্ন করবেন না।’
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন