একাধারে আমেরিকার বিখ্যাত বিজ্ঞানী, আবিষ্কারক ও সফল উদ্যোক্তা টমাস আলভা এডিসন জন্ম নেন ১৮৪৭ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি। বিশ্বখ্যাত এ আবিষ্কারক বৈদ্যুতিক বাতি, সাউন্ড রেকর্ডিং, ভিডিওগ্রাফির মতন নানা প্রযুক্তি আবিষ্কার করেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক টমাস আলভা এডিসনের জীবনের কিছু জানা-অজানা তথ্য।
১# একদম ছোটবেলাতেই লালজ্বরে আক্রান্ত হয়ে টমাসের দুই কানে ইনফেকশন হয় এবং শ্রবণশক্তি কমে যায়। বড় হতে হতে একরকম বধির হয়ে যান তিনি। ছোটবেলায় এটার জন্য নানা সমস্যায় পড়লেও বড় হয়ে সবার কাছে আজগুবি সব গল্প বানিয়ে বলতেন। যেমন ট্রেন দুর্ঘটনায় তিনি একবার পড়ে যাচ্ছিলেন, একজন তাকে কানে ধরে তুলেছিলেন বলে নাকি এই অবস্থা!
২# আধুনিক বৈদ্যুতিক বাতি, সাউন্ড রেকর্ডিং, ভিডিওগ্রাফির মত আবিষ্কারসহ মোট ১০৯৩টি আবিষ্কারের পেটেন্ট রয়েছে তাঁর নামে।
৩# টমাস আলভা এডিসন তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন মোর্স কোডের মাধ্যমে।
৪# সেরা বিজ্ঞানী হলেও গিনিপিগ হিসেবে প্রাণীদের ব্যবহার করার দিক দিয়ে সকলেই দোষী। এডিসন যেন একটু এগিয়েই ছিলেন এদিক দিয়ে। তিনি কারেন্টের বিকল্প ব্যবস্থা ব্যবহার করলে কী ধরণের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে তা প্রমাণ করতে বহুবার বহু প্রাণীর প্রাণ নিয়েছেন। তেমনিভাবে ১৯০৩ সালে টপসি নামের এক সার্কাস হাতিকে তড়িতাঘাত করে মৃত্যু ঘটান এই বিজ্ঞানী।
৫# তেলাপোকার মতো হতচ্ছাড়া উড়ন্ত পতঙ্গ দেখে অনেকে নিজেই ভয়ে লাফিয়ে ওড়া শুরু করেন। বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী এডিসন তেলাপোকাকে ভয় পেতেন কিনা জানা যায়নি, তবে তিনি একটি যন্ত্র তৈরি করেন যা দিয়ে বিদ্যুতের সাহায্যে তেলাপোকা মারা যেত।
৬# ছেলেবেলা থেকেই কৌতূহলী মন নিয়ে বেড়ে উঠেছিলেন আলভা এডিসন। মাত্র পাঁচ-ছয় বছর বয়স থেকেই বিশ্বখ্যাত এই বিজ্ঞানী জন্ম দিয়েছেন মজার সব কাণ্ড-কারখানা। এমন কিছু ঘটনা অনেকেরই জানা। হাঁস যদি ডিম থেকে বাচ্চা ফোটাতে পারে; তবে মানুষ কেন পারে না? এমন কৌতূহল নিয়ে তিনি একবার হাঁসের খাঁচায় ঢুকে বসে ছিলেন চুপচাপ। হাঁস কীভাবে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটায় সেটাই দেখছিলেন নিবিড়ভাবে। সেই শৈশবেই তাঁর অকাট্য যুক্তি ছিল এমন- হাঁসের নিচে ডিম রাখলে তা থেকে বাচ্চা বের হলে আমার পেট থেকে কেন হবে না?
৭# লেখাপড়ায় অনেকটাই দুর্বল ছিলেন এডিসন। স্কুলে পড়াকালীন পরীক্ষায় একবার ফলাফল খারাপ করায় চিঠি দিয়ে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। তিনি যে খারাপ কিছু করেছিলেন তা অনুমান করতে পেরে চিঠিটি দেখিয়েছিলেন তাঁর মার কাছে। চিঠি পেয়ে মা কী জানি ভাবছিলেন সজল দৃষ্টিতে! তারপর এডিসনের সামনেই উচ্চস্বরে পড়তে লাগলেন চিঠিটা। ‘আপনার পুত্র খুব মেধাবী, এই স্কুলটি তার জন্য অনেক ছোটো এবং এখানে তাকে শেখানোর মতো যথেষ্ট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক নেই। দয়া করে আপনি নিজেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করুন’। চিঠির কথা শুনে এডিসনের চোখ ভরে উঠেছিল অশ্রুতে।
এডিসন একজন বড় বিজ্ঞানী হওয়ার পর চিঠিটি খুঁজে পান এবং জানতে পারেন, আদতে সেই চিঠিতে লেখা ছিল- ‘আপনার সন্তান স্থূলবুদ্ধিসম্পন্ন, সে এই স্কুলের উপযুক্ত নয়, আমরা কোনোভাবেই তাকে আমাদের স্কুলে আর আসতে দিতে পারি না’।
৮# ৫। এডিসন তার প্রথম স্ত্রীর সাথে দুই সন্তানের নাম দেন ডট এবং ড্যাশ।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন