১৬ অক্টোবর মুক্তি পেয়েছে হিরো আলম প্রযোজিত ও অভিনীত (এবং আরও কী কী ভূমিকায় ছিলেন আমাদের জানা নেই) সিনেমা 'সাহসী হিরো আলম'। যথেষ্ট সাহসের অভাবে সিনেমাটি আমরা দেখতে পারিনি। তবে পোস্টার দেখে সিনেমা সম্পর্কে কিছু ধারণা করার চেষ্টা করেছি। আপনিও পোস্টারটি ভালো করে দেখুন এবং ভাবতে চেষ্টা করুন, সিনেমাতে আসলে আছে কী?
১# হিরো আলমের গলায় সাপ দেখে মনে হয় তিনি সিনেমায় একজন সর্পবিদ। সিনেমাটি নাগ-নাগিনের গল্প নিয়েও হতে পারে। অথবা হতে পারে এটা বিয়ার গ্রিলসের বায়োপিক, প্রতিকূল পরিবেশে টিকে রাখার জন্য আলম গ্রিলস সিনেমায় সাপের সাথে লড়াই করবেন।
২# এইটা একটা লাইফ লেসন জনরার সিনেমা। বাসে বা লেগুনায় সিট না থাকলে যেমন দরজায় ঝুলতে ঝুলতে যাওয়া যায়, তেমনি হেলিকপ্টারে সিট না পেলেও ঝুলতে ঝুলতে যাওয়া যায়। আলম নানান ধরণের স্ট্যান্ট করে হাতে কলমে দর্শককে তা দেখাবেন। তবে ঝুলন্ত অবস্থায় ভাড়া দিতে হয় কিনা সেটা এখানে ক্লিয়ার না। সিনেমার ক্লাইমেক্সে হয়তো দেখাবেন, কীভাবে ভাড়া না দিয়ে একটু উপর থেকেই নেমে যেতে হয়।
৩# এটি একটি চতুর্ভুজ প্রেমের গল্প। হিরো আলমের সাথে এখানে তিনজন নায়িকাকে দেখা যাচ্ছে। এদের মধ্যে কে আসল নায়িকা, তা বোঝা যাচ্ছে না। কাকে চড় মেরে তিনি 'হায় হায় এ আমি কী কল্যাম' বলবেন অথবা 'আমার একটা কথা তো শুইনবে' বলতে বলতে কার রাগ ভাঙ্গানোর চেষ্টা করবেন, তা বোঝা যায়নি।
৪# হিরো আলম মা কিংবা সিনিয়র মানুষদের পায়ে হাত দিয়ে সালাম করেন। তবে সালাম করার সময় তিনি ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে থাকতে পছন্দ করেন। সালামটাও এমন এংগেলে করেন যেন ক্যামেরায় তার ঠিকঠাক ছবি ওঠে। এখান থেকে মনে হয় তিনি একজন রাজনৈতিক নেতার চরিত্রেও অভিনয় করতে পারেন। কিংবা হতে পারে, মা দিবসে মাকে সালাম করা ছবি কীভাবে তুলবেন তার একটা টিউটোরিয়াল ডকুমেন্ট্রি।
৫# এই মুভিটি আসলে টাইটানিক মুভির সিক্যুয়েল। আলম দুই কোনায় দুইজন নায়িকাকে নিয়ে টাইটানিক পোজে দাঁড়িয়ে আছেন। আবার মাঝের একটা ছবিতে নায়িকাকে বুকে জড়িয়ে ধরে আছেন। এই মুভির মাধ্যমে জ্যাককে একটু বুদ্ধি পরামর্শ দিবেন আলম। কীভাবে মরে না গিয়ে মুভ অন করে নতুন প্রেমে জড়াতে হয়।
৬# এটি কোন সারভাইভিং জনরার মুভিও হতে পারে। একজন চাকরিপ্রার্থী কোট-টাই পরে ইন্টারভিউর জন্য বের হয়। কিন্তু ঢাকার রাস্তায় জ্যাম থাকায় সঠিক সময়ে পৌঁছানো নিয়ে শুরু হয় অনিশ্চয়তা। এরপর কীভাবে গুলিস্তানের ঘোড়ার গাড়ি থেকে ঘোড়া ছিনিয়ে নিয়ে এক যুবক জ্যাম ট্যামকে পাত্তা না দিয়ে চাকরির ইন্টারভিউ দিতে যায়, এই চ্যালেঞ্জিং জার্নিটিই দেখানো হয়েছে মুভিটিতে।
৭# হ্যালিকপ্টার ধরে ঝুলে থাকা আলমের পায়ের দিকে খেয়াল করুন। কি সুন্দর জ্যামিতিক নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট কোন তৈরি করেছে তারা। এটি আসলে এডুকেশনাল জনরার মুভি। সিনেমা সিনেমায় জ্যামিতি শিক্ষা টাইপ শিশুতোষ একটি সিনেমা।
৮# পোস্টারে একজন রাগী পুলিশ দেখা যাচ্ছে। সে থেকে ধারণা করা যায়, স্ত্রীকে নির্যাতনের দায়ে মাঝখানে তার জেল খাটার গল্প নিয়েও এই সিনেমা হতে পারে।
৯# পোস্টারে হিরো আলমকে ঘোড়ার মুখে একটা দড়ি ঢুকিয়ে ঘোড়ায় চড়তে দেখা যাচ্ছে। এতে মনে হয় এটা একটি পিরিয়ড ফিল্ম। তবে যেহেতু আলম আধুনিক কোট পরে ফুলবাবু হয়ে বসে আছেন, এটি অতীত ও বর্তমানের ফিউশন ধারার সিনেমাও হতে পারে।
১০# সর্পবিদ হিরো আলমের দুপায়ের মাঝখানে একটি মাথা দেখতে পাচ্ছেন? সম্ভবত বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম সাইকো সিরিয়াল কিলিং জনরার মুভি হতে পারে এটি। আলম এখানে সাহসী সিরিয়াল কিলার চরিত্রে অভিনয় করবেন। পা দিয়ে চেপে মানুষকে মেরে বিকৃত সুখ পাবেন আলম। এরপর নিজের পোষা অজগরকে মানুষগুলো খাইয়ে দিবেন। আলমেরই ডাবল রোল করা অন্য ভালো আলম কী শেষ পর্যন্ত সাইকো সিরিয়াল কিলার আলমকে থামাতে পারবেন? কেনই বা আলমের মতো একজন এমন সিরিয়াল কিলারে রূপান্তর হয়েছে? জানতে হলে দেখতে হবে মুভিটি।