বাংলাদেশ সফরে এমেরিকার যেসব ডেমোক্র্যাট নেতৃবৃন্দ এসেছিলেন; তারা ফিরে গিয়ে সবাই মিলে দেখা করেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে। একে একে জানান তাদের অভিজ্ঞতার কথা। ঢাকা থেকে রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে ডেকে নেয়া হয় তার অভিজ্ঞতা জানাতে।
বাইডেন পিটার হাসকে জিজ্ঞেস করেন, ‘আমরা তাহলে কী শিখলাম ঢাকা থেকে?’
হাস উত্তর দেন, ‘আমরা শিখেছি কী করে উন্নয়ন ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে হয়। উন্নয়নের প্রধান অন্তরায় যেহেতু বিরোধী দল; তাকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে সবার আগে।‘
ডোনাল্ড লু বলেন, ‘এই কাজে প্রথমেই প্রয়োজন একটি দেশপ্রেমের ফিল্টার তৈরি। যেহেতু ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে রাশিয়ার প্রত্যক্ষ যোগাযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে; তাই দেশপ্রেমের ছাকনিতে অনায়াসে রিপাবলিকানদের রাশিয়া পন্থী হিসেবে চিহ্নিত করে খারিজ করে দেয়া যাবে।‘
আজরা জিয়া গম্ভীর মুখে বলেন, ‘এই ফিল্টারের ব্যাপারটা আমরা না বলে বুদ্ধিজীবী নোয়াম চমস্কিকে দিয়ে বলাতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়। সুশীলের মুখ থেকে দেশপ্রেমের ছাকনির গল্প শুনলে দেশের লোক তা বিশ্বাস করবে।‘
ব্লিংকেন গম্ভীর মুখে বলেন, ‘আমাদের ক্ষমতাকে নিশ্চিত করতে ইজরায়েলের সমর্থন প্রয়োজন হবে। কয়েকজন ডেমোক্র্যাট নেতা তেল আভিভে গিয়ে লিকুদ পার্টির নেতাদের সঙ্গে দেখা করা প্রয়োজন। ডেমোক্র্যাট ও লিকুদ পার্টির একসঙ্গে কাজ করা আবশ্যক।‘
আইরিন আখতার বলেন, ‘প্রত্যেক রবিবার হোয়াইট হাউজে "প্রশ্ন নয় প্রশংসা করতে এসেছি" অনুষ্ঠান আয়োজন করতে হবে। সেখানে মি বাইডেন যদি পারেন ট্রাম্পের গুষ্টিকে ডিফেম করে দিতে; তাহলেই কেল্লাফতে। সাংবাদিক আমানপোর আর হালা গোরানিকে যদি নিয়োগ করা যায় তেলাঞ্জলি দিয়ে উস্কানিমূলক প্রশ্ন করতে তাহলে রিপাবলিকানদের দ্রুতই একটি সন্ত্রাসী দল হিসেবে চিত্রিত করা যাবে।‘
জো বাইডেন এতক্ষণ শুনে তারপর মন্তব্য করেন, ‘বিচারবিভাগে স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে ছাত্রজীবনে ডেমোক্র্যাট পার্টি করত; এমন লোকেদের বিচারকের আসনে চাই।‘
ব্লিংকেন বলেন, ‘অসাম্প্রদায়িকতা বাস্তবায়নে পুলিশ ও প্রশাসনে ইজরায়েলের লিকুদ পার্টির সুপ্ত সমর্থকদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে দিতে হবে। শত্রু চিহ্নিত করতে ও তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনায় এরা নিশ্চয়ই দক্ষ হবে।‘
ডোনাল্ড লু পরামর্শ রাখেন, ‘জর্জ ক্লুনি ও কেইট উইন্সলেটের মতো হলিউড তারকাদের সেনেটর ও কংগ্রেসম্যান করতে হবে ধীরে ধীরে। হলিউডের সাংস্কৃতিক জোটটিকে ডেমোক্র্যাট পার্টিঘন করতে পারলে; ওরাই প্রগতিশীলতার গান গেয়ে গেয়ে রিপাবলিকানদের অজনপ্রিয় করে তুলতে পারবে।‘
আজরা জিয়া উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘ক্যাপিটাল হিলের সেই নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ইস্যুটি ধরে রিপাবলিকান নেতা-কর্মীদের ধরপাকড় করতে হবে। আগামী নির্বাচনের আগেই সব কটাকে জেলে চাই।‘
বাইডেন গম্ভীর হয়ে ওঠেন, ‘তাই বলে আমি বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় আবারও নির্বাচিত হতে চাই না। আমার বিরুদ্ধে ডামি প্রার্থী হিসেবে হিলারি কিংবা আলগোরকে চাই। এতে নবগণতন্ত্রের নবসূচনা হবে।‘
গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকের আলোকে কাজ শুরু হয়ে যায়। হার্ভাডের শিক্ষকেরা বিবৃতি দেন, এমেরিকায় কোনো রুশপন্থী দেখতে চাই না। এখানে সরকারি দল ও বিরোধীদল উভয়কেই হতে হবে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি।
আইভি লীগ ও প্রিন্সটনের শিক্ষকেরা দল বেঁধে নাসায় গিয়ে স্পেস শাটলে উঠে বাইডেনের উন্নয়নের অকুন্ঠ প্রশংসা করে বলেন, মঙ্গলগ্রহে স্পেস শাটল চালু করতে, বাইডেনের সরকার বারবার দরকার।
তেল আভিভ থেকে উড়ে এসে বুদ্ধিজীবী ইউভাল নোয়াহ হারারি ডেমোক্র্যাটদের আয়োজিত সেমিনারে অংশ নিয়ে বলেন, ‘আপনি যদি প্রগতিশীল এমেরিকা দেখতে চান, তাহলে বাইডেনকেই আবার ক্ষমতায় আনতে হবে।‘
মোসাদের সহযোগিতায় এফবি আই এমন সব আড়ি পাতার প্রযুক্তি আমদানি করে, যা দিয়ে উন্নয়নের ও স্বাধীনতার শত্রু চিহ্নিত করা শুরু হয়।
নিউইয়র্কের পুলিশ প্রধান তার দপ্তরে রিপাবলিকান নেতাদের ডেকে এনে বারগার ও কোক খাইয়ে প্রস্তাব দেন, ‘ইউক্যালিপটাসমূল রিপাবলিকান হিসেবে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করা যায় কীনা!’
হোয়াইট হাউজের প্রশ্ন নয় প্রশংসা করতে এসেছি অনুষ্ঠানে আমানপোর বলেন, ‘ট্রাম্পের পরিবারে জুয়া খেলার অভ্যাস আছে বলে মনে হয়, আপনি কী কিছু জানেন মি প্রেসিডেন্ট।‘
বাইডেন শুরু করেন গল্প দাদুর আসর, ‘প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি হত্যায় রিপাবলিকানদের হাত আছে। জুয়া খেলা ও মদ খাওয়া তো সামান্য ব্যাপার।‘
ডোনাল্ড লু আমিষ খ্রিস্টান গোত্রের এক সমাবেশে অংশ নিয়ে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন আরেকবার ক্ষমতায় এলে সারা দেশে ৫০০টি মডেল চার্চ নির্মাণ করা হবে।‘
নোয়াম চমস্কি বাইডেনের উপস্থিতিতে এক সভায় উপস্থিত হয়ে বলেন, ‘সবার আগে এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, এমেরিকার স্বাধীনতার শত্রু যারা; সেই রুশপন্থী কাল্টটির এমেরিকায় রাজনীতি করার অধিকার আছে কীনা!’
চমস্কির মুখে এই কথা শুনেই এফবিআই একে একে রিপাবলিকান নেতাদের জেলে ঢোকাতে শুরু করে।
এমন সময় ওয়াশিংটন সফরে আসেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি ব্লিংকেনের সঙ্গে দেখা করে বলেন, ‘আমরা এমেরিকায় একটি অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চাই। আশা করছি এমেরিকা গণতন্ত্রের প্রতি তাদের অঙ্গীকার ধরে রাখবে। তাছাড়া এমেরিকায় শ্রম অধিকার পূরণ হচ্ছে কীনা সে দিকে আমাদের দৃষ্টি রয়েছে।‘
ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আলাদা আলাদা ভাবে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান নেতাদের সঙ্গে দেখা করে তাদের বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করেন।
এক ঘরোয়া বৈঠকে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বাইডেন, ‘বিদেশী হস্তক্ষেপকে আমরা পরোয়া করি না।‘
কেউ কেউ হাসাহাসি করে, ‘বাংলাদেশের হস্তক্ষেপ হারাম আর ইজরায়েলের হস্তক্ষেপে আরাম।‘
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন