ব্যবসা করেন অথচ চাঁদা দিতে চান না? বাংলাদেশে ব্যবসা করতে গেলে ব্যবসার স্বার্থেই চাঁদা দিতে হবে। এখানে ব্যবসা ও চাঁদা একে অন্যের পরিপূরক। তারপরও অনেকেই চাঁদা দিতে চান না। নানান সমালোচনা করেন। চলুন জেনে আসা যাক, কেন চাঁদা দেবেন?
১। ব্যবসার নিরাপত্তার জন্য
আপনি নিয়মিত চাঁদা না দিলে আপনার ব্যবসার নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পরতে পারে। হঠাৎ করেই দেখতে পাবেন অস্ত্র হাতে কারা যেন কোথা থেকে এসে আপনার ক্যাশ কাউন্টার খালি করে নিয়ে যাচ্ছে। আপনার প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা যেহেতু সরকার দিতে পারছে না, আপনিই না হয় চাঁদা দিয়ে নিজেকে নিরাপদ রাখুন।
২। সামগ্রিক অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য
আপনার চাঁদাই বদলে দিতে পারে দেশের অর্থনীতি। চাঁদাবাজরা টাকা নিয়ে সেটা পাতি নেতাকে দিচ্ছে। পাতি নেতা থেকে মধ্যম পর্যায়ের নেতার হাত হয়ে বড় বড় নেতাদের কাছে পৌঁছে যাবে এই টাকা। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র টাকাই এক সময় হাজার কোটির ঘরে পৌঁছবে, যেটা দিয়ে অসংখ্য বড় বড় প্রতিষ্ঠান খোলা যাবে। দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য নিয়মিত চাঁদা দিন।
৩। চাঁদাবাজদের অর্থনৈতিক অবস্থা চিন্তা করে
চাঁদাবাজদের আর্থিক অবস্থা হয়ত কোনোদিন চিন্তাও করেননি আপনারা। বিভিন্ন দোকান থেকে ওরা ৫০০/১০০০ টাকা না তুলতে পারলে সারাদিন না খেয়ে চলতে হয় তাদের। চাঁদার অভাবে পথে বসে থেকে পাগলামি করার চাইতে একটু চাঁদা দিয়ে তাদের জীবনকে সহজ করা গেলে কেন চাঁদা দেবেন না?
৪। নিজের মন ভালো রাখতে
নিজে মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হলেও আপনার চাঁদা দেওয়া দরকার। চাঁদা না পেলেই আপনাকে দলবল নিয়ে শাসিয়ে যাবে অচেনা বিভিন্ন মানুষ। আপনার পরিবারকে অপহরণ করার হুমকি পাবেন। রাতে বাসার সামনে ককটেল ফোটানোর শব্দে ঘুম না এলে আপনি নিজেও পাগল হয়ে যেতে পারেন। এত এত সমস্যা যদি সামান্য কিছু টাকা দিলেই সলভ হয়ে যায়, তাহলে কেন চাঁদা দেবেন না?
৫। নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে
বর্তমান প্রেক্ষাপটে ১৫ বছরের অভুক্ত সব চাঁদাবাজদের খেয়ে পরে বাঁচার জন্য হলেও আপনার উচিত তাদের চাঁদা দেওয়া। আপনি চাঁদা না দিলে কত কত পরিবার না খেয়ে বসে থাকবে তার হয়ত কোনো খবরও পাবেন না আপনি। মানুষকে সাহায্য করে আপনি আপনার নৈতিক দায়িত্ব এড়িয়ে গেলে আপনার নিজেরই খারাপ লাগবে।
৬। বন্ধু বানাতে
চাঁদা দিলে অনেকেই আপনার বন্ধু হয়ে যাবে। আপনার সাথে খোশগল্প করতে করতে কিছু টাকা নিয়ে যাবে। পরিবারের সবাই ভালো আছে কিনা খোঁজখবর নেবে। হাসিমুখে সুন্দর একটা সালাম দিয়ে কথা শুরু করবে। এমন বন্ধু এই সময়ে পাওয়া খুবই মুশকিলের। কেন বানাবেন না এমন বন্ধু?
৭। চাঁদা শিল্প বাচিয়ে রাখার জন্য
যুগ যুগ ধরে এদেশে চাঁদার এক অদ্ভুত শিল্প গড়ে উঠেছে। পাড়া মহল্লায় চাঁদাবাজদের কারণে যেমন অদ্ভুত সুন্দর এক আবহ তৈরি হয়, মারামারি গ্যাঞ্জাম হয়, সেটাকে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব তো আপনারই। আপনার চাঁদায় বাঁচবে বাংলার ঐতিহ্য। এরপরও কি বলবেন, চাঁদা দিতে চাই না।
৮। ট্রেন্ডকে ফলো করার জন্য
চাঁদা দেওয়ার নেওয়ার মতো ফ্যাশনেবল একটা ট্রেন্ডে আপনি নাম লেখাচ্ছেন না দেখে আপনার আশেপাশের মানুষরা আপনাকে লজ্জা দিতে পারে। তারা আপনাকে নিয়ে ঠাট্টা-মস্করা করার সুযোগ পাবে। আপনি শুধু শুধুই কেন নিজের ইজ্জতের ফালুদা বানাতে চাইবেন? তারথেকে কিছু চাঁদাই দিন বরং।