লেখা: দেবাশিস চক্রবর্তী
একজন শুভাকাঙ্ক্ষী মারফত এই খবরটা পাই জানুয়ারির ৪ তারিখ। এর মধ্যে নানান ব্যস্ততায় এটা নিয়ে কথা বলার সুযোগ এবং রুচি হচ্ছিল না। আমি চাইছিলাম যে, আমার জুলাই-আগস্টের কাজগুলি মোটের উপর বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর সামষ্টিক ভোগের জন্যই থাকুক। কারও ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক মুনাফার জন্য এত পরিশ্রম করি নাই। অনেকেই বিভিন্নভাবে এই কাজগুলি বাজারজাত করতে চেয়েছেন। কিন্তু সকলকেই সম্মানের সাথে প্রত্যাখ্যান করেছি। অনেকে কষ্ট পেয়েছেন, আমার অবস্থানটা বুঝতে পারেননি। এমনকি, আমার অন্য কাজগুলির মতন জুলাই-আগস্টের কাজগুলি ব্যক্তিগত স্টুডিও বা ওয়েবসাইট থেকেও সংগ্রহযোগ্য নয়। আমার অন্য কাজগুলির মতন এদের আর্কাইভাল প্রিন্ট এভেইলেবল না। শুধু তিনজন মানুষকে তাদের গণঅভ্যুত্থানের সাথে সম্পৃক্ততার খাতিরে কিছু প্রিন্ট সংগ্রহ করতে দিয়েছি মাত্র। সকলের জন্য উন্মুক্ত নয়। সম্প্রতি, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির 'ঐ নূতনের কেতন ওড়ে' প্রদর্শনীতে আমার কিছু প্রিন্ট বিক্রি করার অনুমতি দিয়েছি। আর এই বিক্রির পুরো মুনাফা গণঅভ্যুত্থানে শহিদ-আহতদের ফান্ডে ডোনেট করতে অনুরোধ করেছি। আয়োজকরা সেই দায়িত্ব নিয়েছেন।
আমি জুলাই-আগস্টের কাজগুলি উন্মুক্ত করে দিয়েছিলাম প্রচণ্ড অনিশ্চিত সময়ে সামষ্টিক আন্দোলন-সংগ্রামে সামষ্টিক ব্যবহারের খাতিরে। ব্যবসার জন্য নয়। অথচ আমার কাজগুলি নিয়ে ব্যবসা করা হচ্ছে। অনেক ঘটনার খোঁজ আমি পাইও না, খোঁজ নেওয়া সম্ভব না। এসব প্রফেশনাল কালচার আর দীর্ঘমেয়াদী আইনের শাসনের মামলা। যেটা বাংলাদেশে এখনও অনুপস্থিত। আমার অজান্তে এভাবে ব্যবসা করা হচ্ছে। মুনাফা করা হচ্ছে। এটা একই সাথে অপরাধ এবং ইন্টেলকচুয়াল প্রপার্টি চুরি। যারা এই কাজ করছেন, এই ব্যাগ বিক্রি করছেন, তারা আমার কাছে অনুমতি চাইলেও দিতাম না। কিন্তু, এভাবে জনে জনে মানুষকে বোঝানো, নিয়মিত শক্তিক্ষয় করা আমার পক্ষে আর সম্ভব না। আমার সীমিত সাধ্য আর সক্ষমতা বিভিন্ন খাতে ব্যয় করতে হচ্ছে। তবে, এখন আমার ইন্টেলকচুয়াল প্রপার্টি রক্ষার জন্য আমাকে ভিন্ন পথ নিতেই হবে। আমি কোনো ধনী আর্টিস্ট নই, তবুও আমাকে সাহস দেখাতে হয়েছিল। আমি জানি এটা উপলব্ধি করা অনেকের পক্ষে সম্ভব নয়।
ছবিটা ঢাকার বাতিঘর থেকে তোলা।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন