লেখা: আরজু আহমেদ
কম্বল বিতরণ করতে এক উপদেষ্টা হেলিকপ্টারে চড়েছিলেন ৬ বার। সে সফর স্থগিত করে তিনি চলে আসেন ঢাকায়।
উপদেষ্টা ফিরে আসায় বাকি যেসব উপজেলায় তার কম্বল বিতরণ করার কথা সেসব উপজেলার বরাদ্দকৃত কম্বল পড়ে ছিল সরকারি গুদামে।
শীত যাচ্ছে, কিন্তু কম্বল বিতরণ হচ্ছে না, কারণ উপদেষ্টা যদি আবার আসেন! সূর্য থেমেছিল প্রফেট ইউশার জন্য। বাইবেলে যাকে জশুয়া বলা হয়েছে। কিন্তু শীত তো উপদেষ্টাদের জন্য থামে না।
এরপর গণমাধ্যমে যখন এটা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়, তখন আবার সেই কম্বল বিতরণ শুরু হয়। মিডিয়ায় আসার আগ পর্যন্ত তা আটকেই ছিল।
এমনিতে শীতে সরকারের বরাদ্দ এত অপ্রতুল! কম্বল কিনতে ৬৪টি জেলার জন্য বরাদ্দ মাত্র পৌনে ৩৪ কোটি টাকা। এই টাকায় সরকার কম্বল কিনবে পৌনে সাত লাখ।
অথচ নানা হিসাবে দেশে শীতার্ত মানুষ প্রায় ৩ কোটি। প্রতি ৪০/৪৫ জন শীতার্তের বিপরীতে মাত্র ১টা কম্বল। জনপ্রতি বরাদ্দ ১০/১১ টাকা।
তাও যে কমদামি নিম্নমানের কম্বল, তাতে একটায় তো শীত ফেরে না। অথচ খোদ সরকারের পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে, দেশে শীত হলে দারিদ্র্য বাড়ে। মানুষ আরও গরিব হয়।
আর এবার সে শীতের সময়ে বাড়ানো হলো ভ্যাট। ১২ হাজার কোটি টাকার ভ্যাট। এই টাকা জনগণের পকেট থেকে সরকার নেবে। কাপড়ের দোকানের ভ্যাট বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।
ফলে মধ্যবিত্ত তার পুরোনো শীতবস্ত্র ধরে রাখবে। এই শীতটাও পার করে দিতে চাইবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মধ্যবিত্তের একটু পুরোনো হয়ে আসা শীতবস্ত্র গরিব মানুষকে দান করে দেয়।
ফলে শেষপর্যন্ত গরিবের শীত বস্ত্রের অভাব আরও প্রকট হতে পারে এবার। এর মধ্যে আবার চালের বাজার উঠতি। সাপ্তাহে কেজিতে বেড়েছে প্রায় ১০ টাকা।
গরিবের শীত কষ্টের। কিন্তু যে রাষ্ট্র কল্যাণ রাষ্ট্র হতে পারে নাই, এতে সে রাষ্ট্রের কিছু আসে যায় না। দরকার মনে হলেই তারা ভ্যাট বসাবেন। আর গরিব ভুগবে।
আইএমএফের অজুহাতে ভ্যাট বাড়ে। কিন্তু আইএমএফ যখন বিশ্ববাজারের সাথে সমন্বয় করে জ্বালানি তেলের দামের কথা বলে, তখন বিশ্ববাজারে দাম কমলেও দেশে সে হারে দাম আর কমে না।
আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম কমেছে প্রায় ২৫ শতাংশ। আর দেশে উল্টো দাম বেড়েছে প্রায় ৮ শতাংশ।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন