শান্ত হোন দাদা, আপনি শান্ত হোন

৫৫ পঠিত ... ১৯ ঘন্টা ৪১ মিনিট আগে

18

আন্তর্জাতিক মিডিয়ার সামনে আয়নাঘরের নৃশংসতা উন্মোচিত হওয়ায় ও জাতিসংঘ তদন্ত রিপোর্টে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার খুনে দোসরদের মানবতাবিরোধী অপরাধ উন্মোচিত হওয়ায় আনারকলি অজ্ঞান হয়ে যায়। চরাঞ্চলের চর দখলের লড়াইয়ের মরণ সর্দার প্রতিক্রিয়া দিতে চলে আসে ফেসবুকে। চরাঞ্চলের কাশবনের পরিবর্তে ইউরোপের হাইকমোড প্রয়োজন তার। এসাইলামের জন্য তাকে উত্তেজিত জনতার ‘কল্লা কাইটা নিমু’, ‘মাইরালামু-কাইটালামু’ কমেন্টের স্ক্রিনশট জমা দিতে হবে।

তাই চরের মরণ সর্দার এসে ফেসবুকে লিখে, মোস্তফা সরোয়ার ফারুকিরে আরও আগে উপদেষ্টা বানালে, আয়নাঘর নাটকের স্ক্রিপ্ট ও সেট আরও আগে বানাতে পারত।

সহমত ভাই হাহা ইমো দিয়ে লিখে, ঢাকায় থাকলে আপনারে বিরিয়ানি খিলাইতাম মরণ সর্দার ভাই।

ললিতা দিদি এসে লাভ সাইন দিয়ে বলে, ইশ ঢাকায় থাকলে আপনাকে আড়ং-এর পাঞ্জাবি উপহার দিতাম গো মরণদা।

শিবব্রত দাদা বলে, আপনারা আছেন বলেই আজও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাটা জেগে আছে মরণদা।

মরণদা অপেক্ষা করে ‘মাইরালামু কাইটালামু’ কমেন্টের; সে জানে বিরিয়ানি-পাঞ্জাবি দিয়ে বেশি কিছু হয় না; শেষ পর্যন্ত যেতে হয় কাশবনে। তাই তো তোরা যে যা বলিস ভাই, মরণদার ইউরোপের হাই কমোড চাই।

জাতিসংঘের রিপোর্ট ইস্যুতে কথা বলার জন্য আজতক টিভি যুক্ত করে নির্ঘুম জমাদারকে। সে কাশতে কাশতে বলে, ইউএসএইড-এর ফান্ডিং-এ এলজিবিটিকিউ মুভমেন্টের লোক, পথভ্রষ্ট বাম, হিজবুত আর টিকটকারদের সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এই বানোয়াট রিপোর্ট। সি আই এ আর আই এস আই জাতিসংঘকে প্রভাবিত করে এইসব আকাশ কুসুম গল্প ফেঁদেছে।

আজতক দিদি নির্ঘুম জমাদারের বেদনা জাগাতে বলে, একজন বাঙালি হিসেবে আপনার কষ্ট হয় না এমন মিথ্যাচার দেখে।

: দিদি আপনি নিজেকে বাঙালি বলুন, আমি কুর্ণিশ করব। বাংলাদেশের মানুষ খুব খারাপ; তাদের পয়ঃনিষ্কাশন করতে করতে বিরক্ত হয়ে জমাদার থেকে দফাদার হয়েছিলাম। সেটা অনেক বড় ভুল হয়েছে। এবার আমাকে ঘর ওয়াপসি করো দিদি।

: শান্ত হোন দাদা, আপনি শান্ত হোন।

সেন্টার ফর রুথলেস ইন্টেলিজেন্স (ক্রাই)-এর ক্যাশিয়ার হোয়াটস এপ গ্রুপে ঘোষণা দেয়, কোথায় গেলে ওগো হাহা লীগ, আজ আয়নাঘর আর জাতিসংঘের পোস্টে হাহা ইমো দিলে মাথাপিছু ২০০ টাকা করে দেব।

হাসিনার পতনে ১০১ জন বিশিষ্ট নাগরিক বাতিল হয়ে যাবার; এবার বাজারে এল নতুন ১০১ বিশিষ্ট নাগরিক। যারা আয়নাঘর ও জাতিসংঘের রিপোর্ট ইস্যুতে স্পিকটি নট হয়ে থাকে। হাওয়া বুঝে ৩১-৩২ জুলাই প্রোপিক লাল করেছিল যারা, উপদেষ্টা পরিষদ কিংবা সংস্কার কমিশনে ডাক পাবার আশায় যারা ফোনটাকে হাতছাড়া করেনি; তারা ডাক না শুনে এখন অনুবীক্ষণ যন্ত্র নিয়ে বসে পড়েছে। অভ্যুত্থান যেন বার্থ ডে পার্টি; পরদিন সকালে বৈঠকখানা গুছিয়ে ফেললেই হলো। কেন ছয়মাসে দেশটা মালয়েশিয়া হয়ে গেল না সেই আক্ষেপ; আরেকটু এগিয়ে সংশয়বাদ, দেশটা কি আফঘানিস্তান হয়ে গেল। বীণা সিক্রি স্টাইলে বিবৃতি দেওয়াই ভীষণ স্মার্টনেস।

এইভাবে একসময় মূল্যায়ন হলো না রেড প্রোপিক ও রোদ ঝড় বৃষ্টিতে বুবুকে চাই ব্ল্যাক প্রোপিকের এরিয়া অফ কমননেস বাড়তে থাকে। আজ তাই আয়নাঘর কিংবা জাতিসংঘ রিপোর্ট নিয়ে কোনো কথা নয়। কথা হোক, কেন ফরিদা আপা ভ্যালেটাইনস ডে পালনে নিরুৎসাহিত করছেন, কেন রেজওয়ানা বারান্দার টবে সবজি চাষের পরামর্শ রাখছেন। আজ রগড়ে রগড়ে ভীষণ রসিক হয়ে উঠতে হবে। বাংলা একাডেমি পুরস্কার দিল না, একুশে পদক দিল না; আজ আমার বয়েই গেছে হাসিনার আয়নাঘর নিয়ে কথা বলবার।

শিবব্রত দাদা এসে চুকচুক করে বলে, শান্ত হোন দাদা, আপনি শান্ত হোন। আপনারাই তো সমর্থন দিয়ে লালবিপ্লবীদের ক্ষমতায় আনলেন; এখন বুঝুন ঠেলা!

 

৫৫ পঠিত ... ১৯ ঘন্টা ৪১ মিনিট আগে

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

রম্য

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি


Top