বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে হয়ে গেল বাতাসশুমারী।
আশঙ্কাজনকভাবে সেখানে সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে বিশুদ্ধ বাতাসের হার। বিপুলমাত্রায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে আনন্দে দ্বিগুণ মাত্রায় ছিটিয়ে পড়ে মব উদযাপন করতে মানুষের নাকে নাকে ঢুকে পড়ে দূষিত বাতাসের কণা। ঢাকার বায়ুমান সূচক এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ৫০০ অতিক্রম করায় জাতীয় দূষিত বায়ু কণা কমিটি নিজেদের কমিউনিটিতে ধুলো উড়িয়ে উৎসব করে।
গুলিস্তানের দূষিত কণা কমিটি নিজেদের এই অর্জন নিয়ে এয়ারবুকে লিখেছে, অতীত ইতিহাসে এমন দৃষ্টান্ত খুব একটা দেখা যায়নি, এ এক অভিনব আনন্দ উদযাপনের সময়-ফিলিং ডেভিল! এদিকে পক্ষীকুল গ্রুপের এক পোস্টে কয়েকটি পাখির অজ্ঞান হয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদেরকে নিকটবর্তী গাছের ডালে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এসময় প্রায় ছাই বর্ণে রূপান্তরিত হওয়া এক মেহগনি গাছ কাঁদতে কাঁদতে জানায়, আমার গাছের নিচেই গতকাল পর্যন্ত পাঁচটা পাখি অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর মধ্যে একটা বাচ্চাও ছিল। আমি বয়স্ক গাছ। তার উপর শীতকাল। অনেক পাতা ঝড়ে গেছে। নইলে পাতার নিচে ওদেরকে আগলে রাখতাম।
রাস্তার পাশের এক সারি গাছ অক্সিজেন দিতে দিতে নাভিশ্বাস উঠে যাবার অবস্থা বর্ণনা দিয়ে তাদের সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং গ্রুপ ট্রিবুকে লিখেছে যে, অনেকে একটু বুক ভরে নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য তাদের গাছের নিচে দাঁড়ায়। কিন্তু গাছ থেকে নিঃসৃত অক্সিজেন প্রয়োজনের তুলনায় এতটাই নগণ্য যে তাদের নিজেদেরও মাঝে মাঝে শ্বাসকষ্ট হয়। আরও কিছু গাছ পাশে থাকলে তাদের কষ্ট সামান্য হলেও লাঘব হতে পারে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করে। সেখানে কৃষ্ণচূড়া গাছ কমেন্ট করে জানায়, আমার সারা গায়ে বৈদ্যুতিক সংযোগের তার জড়ানো। গায়ের ধূলো জোরে ঝাড়া দিয়ে ফেলতে পারি না, নড়াচড়ার শক্তি চলে গেছে ক্যাবলের জন্য। আমার একটা বাচ্চা হয়েছে শেকড়ের পাশে। একটু পানি পাওয়া তো দূরে থাক, ওর সবুজ চেহারা দুদিনেই ছাই রংয়ের হয়ে গেছে।
আমারও তো অবরোধ করতে ইচ্ছে করে শাহবাগ। কিন্তু নড়তে পারি না।
এমন সময় পাশ থেকে একটা শিউলির চারা গাছকে বলতে শোনা যায়, চারিদিকে এত গন্ধ কেন? হেনা কোথায় চাচা?
কৃষ্ণচূড়া তখন কেঁদে জানায়, সকালেই হাসনাহেনার গাছটা উপড়ে কেউ নিয়ে গেছে।
গাছেরা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের এমন তীব্র দূষিত বায়ুর সাথে পেরে ওঠা অসম্ভব। প্রয়োজন আরও সহযোদ্ধার, সহযোগিতার।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শাহবাগে তারা পাতা ঝড়া কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। তাদের দাবি মেনে না নেওয়া হলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি হিসেবে নিজেদের ডাল ফেলে দেবে বলে হুঁশিয়ারি জানিয়েছে।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন