ট্রাম্পের সঙ্গে মোদির বৈঠকের চাঁদ

৬৩ পঠিত ... ৩ ঘন্টা ৩০ মিনিট আগে

WhatsApp Image 2025-02-08 at 16.25.48_bb92e9fa

শবে বরাতের চাঁদ দেখা গেছে। ঐদিন ট্রাম্পের সঙ্গে মোদির বৈঠক হবে। দিল্লি ও কলকাতার পলাতক আওয়ামী শিবিরে আশার আলোক লতা অঙ্গ বেয়ে বিজেপির শরীরে যেতে চায়। গদি মিডিয়া বাংলাদেশে হিজবুত তাহিরের গল্পের বাঘটাকে হামাসের গাছে চড়িয়ে ইজরায়েলের হস্তক্ষেপ কামনা করে দুরন্ত কামভাবে আকুলি বিকুলি। আজতকের বিগত যৌবনার দেহবল্লরীতে শেষ মুজরার ছলনা। শর্মা তার পালকিতে চড়ে ঠুমরি গাইছে হোয়াইট হাউজের জলসাঘরে।

বীণা সিক্রি এক হাত মাথায় রেখে বেগম আখতারের ঢঙ্গে জোছনা করেছে আড়ির মুদ্রায় বাংলাদেশে জঙ্গী এসেছে বাড়ির টপ্পা জুড়েছেন। বিবিসি বাংলার শিবব্রত দাদা বাংলাদেশ কি তিউনিসিয়ার খাদে বলে কান্না জুড়েছে। ডয়চেভেলে বাংলার ললিতাদি বাংলা ভাই ফিরে এল বলে লাস্য করছে। ভয়েস অফ এমেরিকা বাংলার সহমত ভাই আনারকলির গলা জড়িয়ে ধরে কাঁদছে কলকাতা-দিল্লির আওয়ামী জেলে পল্লীতে ঈশ্বর আসবেন কবে এই অপেক্ষায়।

একটা বৈঠকে বদলে যেতে পারে পাশার দান এই স্বপ্নের ঘোরে শেখ হাসিনা এতিমখানায় শিয়ালদের কাঙ্গালি ভোজের আয়োজন করছেন। এতিমখানার ঝুমঝুম বাজনদার আজতকদিদির দুয়ারে মাথা ঠুকছে, কেন ঐ জঙ্গী-নরকে জন্ম হলো আমার; কলকাতার কাঙ্গালি সংস্কৃতি কেন আমার হলো না! আজতকদিদি ঢপের চপ বানিয়ে পরিবেশন করে, জানো ঝুমঝুম জঙ্গী নরকে প্লেন ভর্তি করে পাপীস্তানের সৈনিক নেমেছে।

বেনজির আশ্বস্ত করে, নাতসি রক্ত পরীক্ষা করে পুলিশে নিয়োগ দিয়েছি; আর কটা দিন সবুর করো রসুন বুনেছি। হারুন স্যান্ডো গেঞ্জি পরে রসুন ক্ষেতে নিড়ানি দিতে দিতে বলে, জাহাঙ্গীর তুই লাইগা থাক; এইবার রসুনের বাম্পার ফলন হইব। জাহাঙ্গির ঘেউ দিয়ে ওঠে, যে শহরে দিনে আমগো ঘুরাফিরার অধিকার নাই, সেইখানে রাইতে ঘুমাইতে দিমুনা কাউরে; মরলে শহীদ, বাঁচলে গাজিপুর, কোপাও স্টুডেন্ট।

রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনে ফুলদানিতে ফুল সাজিয়ে চব্বিশের জুলাই মাসে মেট্রোরেল নিয়ে যেমন করে কেঁদেছিল গেরুয়া প্রগতিশীলেরা; ঠিক তেমনি করে পঁচিশের ফেব্রুয়ারিতে আওয়ামীলীগের ফ্যাসিজমের বাড়িগুলো ভাঙার কান্নায় আকুল হয় তারা! জুলাই-আগস্টের তাজা তরুণ রক্ত-প্রাণ নিয়ে একবারও এতটুকু অনুতাপ আসেনি। ফ্যাসিজমের গ্রহণকালে চল ছিল, দাড়ি টুপি থাকলে ক্রসফায়ারে দেওয়া যাবে; জিয়ার অনুসারী হলে গুম করা যাবে; কিন্তু গেরুয়া দিদির টিপ-অধিকার সামান্য ক্ষুণ্ণ হলে টিপ পরে প্রতিবাদ জানাবে লোমশ বুকের মুশকো পুরুষেরা; যারা খসখসে ধুতি ও সবুজ লুঙ্গী খুলে জিনস টিশার্ট পরে বাকশাল টু পয়েন্ট ও-র জাস্টিফিকেশন লীগ হয়েছিল। মুখে তাদের কাল্পনিক আর্যের গালি, যা তারা কাল্পনিক অনার্যদের দিত, শুয়োরের বাচ্চা, ছোটলোক, ইতর, জানোয়ার, বরাহ, সারমেয়, বেজন্মা, জারজ ইত্যাদি।

কৃশ কাঁধ, দুর্বল চিবুক, ছোট মাথার খুলিগুলো আওয়ামী কালচারাল ইন্ডাস্ট্রির প্রডাক্ট হলেই কল্পনায় আর্য চওড়া কাঁধ, প্রশস্ত চিবুক, বড় মাথার খুলি হয়ে অভিজাত বাবু কালচারের বুলবুলি আখড়াই করে। ৫ আগস্টের পরে ছয় মাসে তারা আবার পুনর্মূষিক ভব হয়ে ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নরেন্দ্র দামোদর মোদির বৈঠক থেকে ছুটে আসা সুখবরের অপেক্ষায় লীন। আবার কি আসবে ফিরে গণভবনে ওগো মা বলে ভ্যাড়ভেড়ে আদিখ্যেতার দিনগুলো। টাঙ্গাওয়ালার নাতি প্রাডো হাঁকিয়ে ঘোরার সেইসব বিচিত্র দিন। নায়িকা ও মডেলদের নিয়ে বৌবাজারে বাবুমশাইয়ের ওয়েস্টার্ন ইনের ধারাপাত। কাঠমিস্ত্রির ছেলে খোকন সোনার চুলে জেল দিয়ে সুইমিংপুলে কাতলা মাছের মতো মুখ করে সেলফি তোলার দিন।

আর আছেন লেট ইয়ুথের বিপ্লবী ইউটিউবার; যারা ইন্ডিয়ার প্রোপাগান্ডাকে সত্যি করে তুলতে বুঝে না বুঝে সেইসব নৈরাজ্য তৈরি করে; যার ভিডিও দেখিয়ে মোদি ট্রাম্পের সামনে বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের আকাশকুসুম গপ্পোটা খাওয়াতে পারে। ঠিক যে গপ্পোটা খাইয়ে প্রণব মুখার্জি বাংলাদেশে ওয়ার অন টেররের ছলে টেররিস্ট অর্গানাইজেশন আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় এনেছিলেন বাঁশের কেল্লার খেলনা জঙ্গীদের দমন করতে। তাই তো গরীবের ছেলে মনিরুলকে ফেসবুকে স্ট্রাগলের গল্প বেচে পাশাপাশি মঞ্চায়িত করতে হয়েছিল জঙ্গীদমনের নাটক। নারী-শিশু হত্যার রিসংসায় মেতে উঠেছিল ছোট মাথার খুলি, ঠোঁট সাদা মনিরুল। চব্বিশের চেতনার আদু ভাই ইউটিউবারেরা ইন্ডিভিজুয়ালিজমের বিমারিতে আমিত্ব জাহিরে যে পুতুল নাচের ইতিকথা চুইংগামের মতো টেনে লম্বা করছে; এইসব গরুমারা বুদ্ধিতে যদি বীণা সিক্রি ঠিক সেই প্রণব মুখার্জির মতো লাল ঘোড়া পুষে ঢাকার জলপাই বনে পাঠায়; তাহলে কিন্তু প্রশ্ন উঠবে জোনাকি তুমি কার!

বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও ইসকন প্ল্যাকার্ড বানাতে দিয়েছে; হোয়াইট হাউজের সামনে ‘হিন্দু জেনোসাইড ইন বাংলাদেশ’ ব্যানার টাঙ্গিয়ে ট্রাম্প দেবতার চরণে নারকেল ভাঙ্গতে প্রস্তুত তারা। আওয়ামীলীগের হনুমান দেবতারা সেইখানে ‘কাঁদো বাঙালি কাঁদো’ বলে হাজির হবে। মোদি দেবতা কখন বাইরে বেরিয়ে ভিক্টরি সাইন দেখাবে এই অপেক্ষায় শিবব্রত দাদা, সহমত ভাই, ললিতাদিদি, আনারকলি আপা। ঠিক এই ডিএনএগুলো বৃটিশের তৈরি রেললাইনের ধারে প্রাত:ক্রিয়ার সময় বৃটিশ ঈশ্বর কি এক আশীর্বাদ নিয়ে এলেন; সেই রুপকথার গল্প ফাঁদতো। হোয়াইট হাউজের সামনে ট্রাম্পের পুলিশের মৃদু লাঠিচার্জে বৃটিশ পুলিশের মৃদু লাঠিচার্জের পুলকের জীনগত স্মৃতিতে খিলখিল করে হাসবে ওয়েটিং ফর গোডোর বিজেপি ও আওয়ামীলীগ।

আগামী একুশ বছর এইসব শাখামৃগদের আশার ছলনে ভুলি ধারাবাহিক খলবলি দেখে কাটাতে হবে বাংলাদেশের মানুষকে। ট্রাম্প ফুরিয়ে যাবে, মোদির কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে; শেখ হাসিনা লুটিয়েন্স পিরামিডে মমি হবে, কিন্তু আওয়ামী কালচারাল ইন্ড্রাস্ট্রি তো অনন্ত যৌবনা; তার এই সুদীর্ঘ আশুরার কান্না, আশা ও আশাভঙ্গের দিন, গেরুয়া কুঁচকুঁচানি, ডিএনএ-তে ক্রিয়াশীল বিদ্বেষ ও বিভাজনের বিষই বাংলাদেশের নেমেসিস।

 

৬৩ পঠিত ... ৩ ঘন্টা ৩০ মিনিট আগে

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

রম্য

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি


Top