ড্রাইভারের কান পর্যন্ত গা*লি পৌঁছানোর জন্য বিশেষ প্রযুক্তি চায় দোতলা বাসের যাত্রীরা

১৬৯ পঠিত ... ১৭:১৩, জানুয়ারি ১৪, ২০২৫

17

ঢাকায় বাসের ইঞ্জিন যতটুকু না ডিজেলে চলে তার চেয়ে বেশি চলে মানুষের গালিতে। গেটলক কিংবা সিটিং সার্ভিস যাই বলে বাসে যাত্রী উঠাক না কেন চলার সময় চলবে লোকাল বাসের মতো, আর পারলে বাসের কন্ডাক্টর আর ড্রাইভার মিলে বাস থামিয়ে যাত্রীর বাসায় গিয়ে যাত্রী নিয়ে আসত। নানা কারণে সেটা সম্ভব হয় না বলে কিছুদূর গিয়ে বাস থামিয়ে বসে থাকে যেন বাসা থেকে বের হবার সময় কেউ কল দিয়েছে, তাকে রিসিভ করে বিয়ে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাস নিয়ে বের হয়েছেন দুই বন্ধু মিলে। 

বাসে ড্রাইভার আর কন্ডাকটরের গতিবিধি বুঝে যাত্রীরা নিজেদের মুখের ব্যায়াম করেন গালাগালি করে। একা গালাগালি করে খুব একটা কাজ না হলেও সম্মিলিত গালাগালিতে বাসের ইঞ্জিন দৈবভাবে স্টার্ট হয়ে যায়, তবুও সেটা কিচ্ছুক্ষণের জন্য। একটু আগালেই গালি এক্সপায়ার্ড মেডিসিনের মতো কাজ করা বন্ধ করে দেয়, আরেক দফা গালি শোনার জন্য।

একতলা বাসে নাহয় সামনাসামনি গালি দেওয়া যায়। কিন্তু দোতলা বাসের উপরের ডেকে যারা বসে থাকেন, গন্তব্যে যাওয়ার তাড়া থাকলেও উপায় নেই ড্রাইভারকে তাগাদা দেওয়ার। দোতলা বাসের পরিসর বড় হওয়াতে ড্রাইভার যেন ইচ্ছে করেই আরেকটু বেশি সময় দাঁড়াবে। পান বিড়ি সিগারেট আনার জন্য কন্ডাক্টর বাস থেকে বের হয়ে যাবে, নিচতালার যাত্রীরা গালি দিলেও দিতে পারেন না উপর তালার যাত্রীরা। বার বার নিচে নেমে এসে গালি দেওয়াও সম্ভব না সবসময়। 

দোতলা বাসে নিয়মিত যাতায়াত করেন এমন এক যাত্রী ফেসবুকে দোতলা বাসের ড্রাইভারের কান পর্যন্ত গালি পৌঁছে দেওয়ার কোনো উপায় আছে কিনা জিজ্ঞেস করে একটা ভাইরাল পোস্ট দিয়েছেন। হাজারও মানুষ সেটা শেয়ার দিয়ে লিখেছেন, বাসের ড্রাইভার কানের পাশে একটা মাইক লাগানো হোক বাসগুলোয়, উপর তলায় থাকা মাইক থেকে সরাসরি গালি ডেলিভার হবে ড্রাইভারের কানে। 

দেশে বেকারত্বের হার এত বেড়ে গেছে যে কেউ কেউ ফ্রিল্যান্স ভিত্তিতে ড্রাইভারকে গালি দিতে চান বলে জানিয়েছেন। আদের মতে অল্প কিছু টাকা দিলেই তারা দিনভর বাসে বসে থাকবেন, স্ট্যান্ড ছাড়া অন্য কোথাও বাস থামালেই গালাগালি করবেন তারা, এর বিনিময়ে যাত্রীরা একটা নির্দিষ্ট অঙ্কের ভাতা দিলেই তারা রাজি।

এদিকে যাত্রীদের মধ্যে কেউ কেউ প্রস্তাব দিয়েছেন, গালি দেওয়ার দক্ষতা বাড়ানো হলে নিচ তালার যাত্রীদের গালিতেই কাজ হবে, সেজন্য তারা চান গালিবিষয়ক আলাদা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করা হোক। যাতে যাত্রীরা সঠিক ছন্দ ও টোনে গালি দিতে পারেন। এই প্রস্তাবে ব্যাপক সাড়া পড়ে গেছে। 

এখন শুধু অপেক্ষা, কবে এসব প্রস্তাব বাস্তবে রূপ নেবে আর দেশের দোতলা বাসের যাত্রীরা ড্রাইভারকে তাদের শুভেচ্ছা—ওহ, মানে গালি—সঠিকভাবে পৌঁছে দিতে পারবেন। শেষমেশ, এই উদ্যোগটা সারা বিশ্বে বাস চালানোর ‘গালি টেকনোলজি’ নামে প্রতিষ্টিত হবে কিনা, সেটাই দেখার বিষয়!

 

১৬৯ পঠিত ... ১৭:১৩, জানুয়ারি ১৪, ২০২৫

Top