শীতের প্রকোপ এখনও তেমনভাবে জমে বসেনি, কিন্তু ফার্মেসিগুলোতে শীতের ওষুধ কেনার জন্য ভিড় বেড়েই চলেছে। প্রতিটি এলাকায় শীতকালীন বিভিন্ন ওষুধের চাহিদা বহুগুণে বেড়ে গেছে। সকালবেলায় এক ফার্মেসির সামনে আমাদের প্রতিনিধি লক্ষ্য করেন, সেখানে ওষুধ কিনতে আসা মানুষের দীর্ঘ লাইন। কথা বললেই কেউ হাঁচি দিচ্ছেন, কেউ কাশছেন, আবার কারও নাকের পানি চোখের পানি একাকার।
ফার্মেসিতে যারা কাজ করেন তাদের সাথে কথা বলে আমাদের প্রতিনিধি প্রকৃত বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। জানা গেছে, ফার্মেসিগুলোতে মোনাস ১০-সহ শীতকালীন বিভিন্ন ওষুধের বিক্রি আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গিয়েছে। সবাই একবারে কয়েক মাসের ওষুধ মজুদ করছেন, তাই ফার্মেসি এসোসিয়েশন কড়াকড়ি আরোপ করেছে। এখন কেউ একসাথে ১০ পিসের বেশি ওষুধ কিনতে পারছেন না।
শীতকাল আমার একদম ভালো লাগে না। আমি সামার লাভার; শীত এলেই আমাকে মোনাস ১০, ফেক্সো খেয়ে দিন কাটাতে হয়। আমি চাই শীত আর না আসুক। আর আসলেও যেন আমাকে এত কষ্ট পেতে না হয়, বলছিলেন মোহাম্মদপুরের মনিরুল।
এদিকে দেশজুড়ে মোনাস ১০-এর সংকট দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি এমন যে, একেকজন মোনাস ১০ পেতে প্রতি পিসে ১০০ টাকা বেশি খরচ করতেও রাজি। একজন ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি জানান, তার এমন অবস্থা কথা বলার শক্তি নেই। তবু বলেন, কিছু একটা করতে হলে হয় শীতকালকে আটকে দিতে হবে, অথবা মোনাস ১০-কে জাতীয় ওষুধ ঘোষণা করে কম দামে অফুরন্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
মোনাস ১০-কে জাতীয় ওষুধ ঘোষণার দাবিতে সামার লাভাররা বেশ সোচ্চার। সদ্য অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে সামার লাভার এসোসিয়েশনের মুখপাত্র বলেন, মোনাস ১০ আছে বলেই আজও আমরা বেঁচে আছি। আমাদের মতো মানুষের কাছে অক্সিজেনের পরেই মোনাস ১০-এর চাহিদা। এই ওষুধ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ডিজার্ভ করে। যদিও আন্তর্জাতিক বিষয়টা আমাদের হাতে নেই, তবে দেশে অন্তত এটাকে জাতীয় ওষুধ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। তা না হলে, শীতের প্রতি আমাদের অবিচার করা হবে। তিনি আরও জানান, দরকার হলে তারা আজকেই একটি সমন্বয়ক কমিটি গঠন করবেন যার প্রধান কাজ হবে দেশে মোনাস ১০-এর সঠিক স্থান নিশ্চিত করা।