ছাত্রজীবনে টিউশন করান না বা করাননি, এমন মানুষ কমই আছে। পড়াতে গিয়ে যেসব সমস্যার সম্মুখীন প্রায়ই হতে হয় তার একটি হলো, মাস শেষ হয়ে গেলেও ছাত্র কিংবা অভিভাবক টাকা দেওয়ার ব্যাপারে মাথা ঘামান না। টাকা ভীষণ দরকার হলেও চাইতে গেলে লজ্জা করে, আবার পরিস্থিতিও সামাল দেওয়া যায় না।
eআরকির ইনবক্সে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানতে চেয়েছেন কিভাবে সরাসরি টাকার কথা না বলে কিভাবে বুঝাবেন আপনার টাকা দরকার। আর দেরি না করে চলুন ঝটপট জেনে নিন আমাদের জীবনমুখী টিপস!
১# প্রতিদিন একই জামা পড়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন। যাতে ছাত্র এবং ছাত্রের অভিভাবকের ধারণা হয় আপনার অর্থনৈতিক অবস্থা প্রতিকূলে এবং শীঘ্রই আপনাকে টাকা দেওয়া উচিত। তবে এই পদ্ধতি কেবল স্টুডেন্ট মেয়ে, এবং টিচার ছেলে হলে প্রযোজ্য। ছেলে হয়ে ছেলে স্টুডেন্টের নজরে পড়ার আশা করবেন না।
২# পড়ানোর মাঝে মাঝে জিজ্ঞেস করতে পারেন, 'এই মাসে আমরা কী কী পড়লাম? চলো একটু দেখে আসি...'! খেয়াল রাখবেন যেন অভিভাবকদের কেউ শোনে এবং তার মনে পড়ে যায় যে মাস শেষ!
৩# মাস শেষ হওয়ার কিছুদিন আগেই বলতে পারেন, সামনের মাসে ট্যুর আছে। এছাড়া পড়ানোর সময় ছাত্রের সাথে প্রায়ই ট্যুরের কথা শেয়ার করবেন।
৪# পড়ানোর সময় প্রায়ই কাশতে পারেন, এবং অসুস্থতার ভাব করতে পারেন৷ ওপাশ থেকে নিশ্চয়ই তখন আপনার স্টুডেন্ট কিংবা স্টুডেন্টের অভিভাবক ডাক্তার দেখানোর কথা বলবে। আপনি তখন নরম কন্ঠে বলবেন, 'মাস শেষ হোক...'
৫# মাস শেষে পরীক্ষা নিন। মাস শেষ হওয়ার আগে বারবার আসন্ন পরীক্ষার কথা স্টুডেন্ট এবং অভিভাবককে মনে করিয়ে দিন। সেই সাথে বেতনের কথাও আপনা আপনিই মনে পড়ে যাবে..
৬# স্টুডেন্টের বাসায় খাবার দিলে গোগ্রাসে খান, যাতে আপনাকে দেখে ক্ষুধার্ত মনে হয়। মাসের শেষের দিকে প্রতিদিন গোগ্রাসে খেতে দেখলেই আপনার প্রতি কিছু এক্সট্রা সহানুভূতি যোগ হতে পারে!
৭# স্টুডেন্ট ছাত্রী হলে তার সাথে আপনি শেয়ার করতে পারেন যে, আপনার টাকা পয়সার কেমন মন্দা চলছে এবং আগামী দিনের প্ল্যানের কথা যেগুলো টাকার অভাবে করতে পারছেন না। শেয়ার করার পর তাকে শক্তভাবে বলে দিন, কোনোভাবেই যেন তা অভিভাবকের কানে না যায়। শুধুমাত্র ছাত্রীকে ক্লোজ ভাবেন দেখেই তা তাকে বলা হয়েছে। নিশ্চিন্ত মনে বাসায় ফেরত যান, পরের দিন টাকা না পেলে বুদ্ধি ফেরত!
৮# আপনার স্টুডেন্ট যদি ছাত্র হয়, তবে এক বালতি সমবেদনা। টাকা আগেভাগে দেওয়া তো দূরে থাক, এরা টিচারের টাকা মারার অপেক্ষায় থাকে। সেক্ষেত্রে চেষ্টা করবেন সরাসরি অভিভাবকের সাথে যোগাযোগ রাখার।
৯# আপনার ছাত্র-ছাত্রীর বন্ধুর প্রশংসা করতে পারেন। 'তোমার ওই ফ্রেন্ডটা এত ভালো, ওর প্যারেন্টসরাও জোস, মাসের শেষ দিনেই বেতন দিয়ে দেয়...'
১০# পরিশেষে, মুখে বলতে লজ্জা লজ্জা ভাব থাকলে বাসায় গিয়ে টেক্সট দিতে পারেন। টেক্সট দিয়ে একবার ফোন দিবেন, 'আন্টি/আংকেল, আমার টেক্সটটা পেয়েছেন তো?'