'ফাইট ক্লাব' সিনেমার এক দৃশ্যে টেস্টিকুলার ক্যান্সারের গ্রুপটির কথা মনে আছে যেখানে তারা একে অপরকে ধরে কেঁদে নিজেদের হালকা করে? কিংবা 'মিডসমার' সিনেমায় ফ্লোরেন্স পিউ যখন কান্না শুরু করে, তার সাথে ধীরে ধীরে যোগ দেয় আরও অনেক সহচরীরা। তাদের কান্নার গতি, সুর এগিয়ে চলে সমানতালে। ধীরে ধীরে কমে গিয়ে তা নেমে আসে বেজলাইনে।
সিনেমার কনটেক্সট আলাদা হলেও চট্টগ্রামের শিরীষতলায় এমন ঘটনারই অবতারণা হলো গত ৩০ ডিসেম্বর। সেখানে সবাই নীরব-নিস্তব্ধ হয়ে শুধু কান্নাই করেছেন। সবার জন্য উন্মুক্ত এ উৎসবে অংশগ্রহণকারীরা স্মরণ করেছেন নিজেদের পুরোনো দিনের কষ্টের কথা, বেদনাবিধুর দিনগুলোর কথা। হারানো সেসব দিনে ফিরে গিয়ে অশ্রু বিসর্জন করেছেন আপন মনে।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নগরীর সিআরবির শিরীষতলায় অনুষ্ঠিত এ কান্না উৎসবে ২৫ জন বিভিন্ন বয়সের তরুণ-তরুণী অংশ নিয়েছেন। ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগে স্নাতকোত্তর করা টুটুল চৌধুরী নামে এক যুবক এ উৎসবের আয়োজন করেছেন। টুটুল পরিবেশবাদী হিসেবেও বেশ পরিচিত।
আমাদের সমাজে কান্না করাকে এখনো দুর্বলতার প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। মেন্টাল হেলথ নিয়ে মানুষ কথা বললেও তা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে না পর্যাপ্ত। এখনো বহু মানুষ অনেক কষ্ট নিয়ে প্রতিটি দিন পার করছেন। তাদের কথা শোনার মানুষ নেই—একরকম জীবন্মৃত অবস্থায়ই বেঁচে থাকা। আর প্রত্যেকটি মানুষের ভেতরেই রয়েছে তার চেম্বার অফ সিক্রেটস। সেখানে আছে অনেক কষ্ট, হতাশা, চোখের পানি —যাকে পৃথিবীর আলো দেখানো মানা৷ এই স্টেরিওটাইপ ব্রেক করতেই টুটুলের এমন ভিন্নধর্মী আয়োজন।
টুটুল চৌধুরীকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই মেলানকোলিক আয়োজনের জন্য। চোখের পানিকে আটকে না রেখে মুক্ত করে দেখুন, ভালো থাকা খুব কঠিন কিছু নয়!
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন