বর্তমান সময়ে ইউরোপিয়ান ফুটবলের কোন দেশেরই লিগ কাপ খুব একটা গুরুত্ব পায় না ভক্তদের কাছে। ইংল্যান্ডের ‘এফএ কাপ’ কিংবা স্পেনের ‘কোপা দেল রে’ নিয়ে প্রিমিয়ার লিগ কিংবা লা লিগার মত কোন ‘আহা-উহু’ লক্ষ্য করা যায় না ভক্তদের মাঝে। তবে ১৯৮৩-৮৪ মৌসুমের কোপা দেল রে ফাইনালে যা ঘটেছিল সেটার কথা কেউ ভুলতে পারবে না। বার্সেলোনা-অ্যাটলেটিকো বিলবাওয়ের সেই ফাইনালটি কিন্তু দুর্দান্ত বা রুদ্ধশ্বাস কোন খেলার জন্য অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে না, থাকবে ম্যাচ শেষের এক হুলস্থল মারপিটের ঘটনায়। আর সেই ঘটনার নায়ক (নাকি ভিলেন? নাকি এন্টিহিরো?) ছিলেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা।
সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার, অনেকের কাছেই যিনি ফুটবলের ইশ্বর, প্রতিপক্ষের কাছে যিনি এক ভয়ংকরতম নাম, সেই ম্যারাডোনা ফুটবল এবং ফুটবলের বাইরেও খবর হয়েছেন অসংখ্যবার। বেপরোয়া যাপন, রগচটা স্বভাব অথবা আচমকা কোন বেফাঁস মন্তব্য; খেলোয়াড়, কোচ কিংবা মানুষ ম্যারাডোনা খবরে এসেছেন নানা কারণে।
ম্যারাডোনা মাঠে কতটা ক্ষিপ্র এবং কতটা অপ্রতিরোধ্য ছিলেন, তা নতুন করে বলার কিছু নেই। এতটাই অপ্রতিরোধ্য ছিলেন যে, তাকে থামানোই প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের মূল কাজ হয়ে পড়ত। আর এজন্য ম্যারাডোনাকে সইতে হয়েছে প্রচুর আঘাত। যেমন, ১৯৮৩ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর বিলবাওয়ের সাথে বার্সার ম্যাচে কুখ্যাত এক ফাউলের শিকার হন ম্যারাডোনা। আর ফাউলটি যিনি করেছিলেন, সেই গোইকোর ডাকনাম ছিল ‘বুচার অফ বিলবাও’, অর্থাৎ বিলবাওয়ের কসাই। এই ফাউলের শিকার হয়ে ক্যারিয়ারই শেষ হয়ে যেতে পারত ম্যারাডোনার। তবে ক্যারিয়ার শেষ না হলেও ক্ষত মনে পুষে রেখেছিলেন তিনি।
১৯৮৪ সালের ৫ মে, ফাইনালে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে এই বিলবাওয়েরই দেখা পায় বার্সা। আগের মৌসুমেও এই বিলবাওয়ের কাছেই ফাইনালে হেরেছিল বার্সা। এই ম্যাচটিতেও ১-০ গোলে হেরে যায় বার্সা। তবে আসল ঘটনা শুরু হয়ে ম্যাচ শেষ হবার পরপর। এই ম্যাচেও ডিফেন্ডারদের প্রধানতম লক্ষ্য স্বভাবতই ছিলেন ম্যারাডোনা। পরাজয় এবং আগের তিক্ত স্মৃতির স্মরণে তাই ম্যাচ শেষ হতেই ম্যারাডোনা প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়কে আঘাত করে বসেন। ব্যস, কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই দুই দলের খেলোয়াড়রা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। যা খুব অল্প সময়ে রূপ নেয় ভয়ানক মারামারির।
ফুটবলার ম্যারাডোনা কুংফু-কারাতেও যে ভালোই জানেন, সেটাও বোঝা যাচ্ছিল। মারামারির এক পর্যায়ে বিলবাওয়ের এক খেলোয়াড়ের মাথায় হাঁটু দিয়ে মেরে ফেলে দেন। এরপর দৌড়ে গিয়ে কয়েকটা ফ্লাইং কিক বসিয়ে দেন বিলবাওয়ের খেলোয়াড়দের উপর। তারপর কিছুক্ষণের জন্য তিনি মাঝে একলা পড়ে যান বিলবাওয়ের সেই কসাইয়ের সামনে। এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মাঝে আরেক টুকরো মারপিট হয়ে যায়।
দেখে নিন সেই বিশ্বসেরা ফুটবলার যখন কুংফু মাস্টার হয়ে যান, তখন ব্যাপারটা কেমন হয়-
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন