শেকসপিয়ার দাদা ঘুম ভেঙে শুনলেন, তিনি বাংলাদেশে জন্মেছিলেন নাকি আরবে; এই নিয়ে এক ওয়াজিউটিউবারের সাথে অন্যরা তর্ক করছে। যারা ইউটিউবে ওয়াজ করেন তারা ওয়াজিউটিউবার, এটা তাকে বলেছে কিছুদিন আগে এখানে আসা মাইকেল জ্যাকসন। ইরফান মাক্কি নামের এক গায়কের গান তার ভিডিওতে জুড়ে দিয়ে এটাও নাকি ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে যে মাইকেল মুসলমান হয়ে গিয়েছিলো। শেকসপিয়ার দাদা বললেন, ‘বহু বছর আগে মধুসূদন নামে একজন মাইকেল হয়েছিলো ও সনাতন ধর্মত্যাগ করে খ্রীস্ট ধর্মে দিক্ষিত হয়ে একাধিক বিবাহ করেছিলো বলে শুনেছি। তুমি কোন মাইকেল নিজধর্ম ত্যাগ করেছো? শুনেছি বলে মনে মনে পড়ে না।’
এরই মধ্যে বার্তা পেলেন শেকস দাদা যে মর্ত্যলোকে একটি দেশ উন্নয়নের নব দিগন্ত উন্মোচন করেছে। তারা প্রায় সবকিছুকেই হাজার বছর ধরে চলছে বলে দাবী করে। তাদের এক কবি হাজার বছর ধরে পথ হেঁটে মাত্র দু’দণ্ডের শান্তি পেয়েছিলেন বনলতা নামের এক ললনার কাছে। সেই থেকে হাজার শব্দটা বেশ জনপ্রিয় তাদের কাছে। চেয়ারম্যান মাও সাংস্কৃতিক বিপ্লব সাধন করেছিলেন। তাদের দেশে টেলিভিশন চ্যানেলের চেয়ারম্যানরা নব নব সাংস্কুতিক দ্বার উন্মোচন করছেন। তার মধ্যে অগ্রগণ্য এক কেবল চ্যানেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান। তিনি আরবী-উর্দু-হিন্দি-সিংহলি ভাষায় গান গেয়ে দেশে রুচির দূর্ভিক্ষ দূর করার চেষ্টা করেছেন। আর সেই সময় সুশীল নাট্যাভিনেতারা তাকে উদাহরণ বানিয়ে বলেছেন যে দেশে রুচির দূর্ভিক্ষ চলছে। এই নিয়ে তর্ক পাল্টা তর্কে সবাই যখন ব্যস্ত তখন আরেক চেয়ারম্যান রাফতা রাফতা গান গেয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছেন। এর আগে তিনি অনিদ্রা নিয়ে গান গেয়েছিলেন। যে গান শুনে দেশের বহু মানুষের ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছিলো। এবারো তার ব্যতিক্রম হয় নাই। রাফতা রাফতা শোনার পরে কিছু সহমতেল ভাইরা তাদের পেশাগত দায়িত্ব হাফতা হাফতা তুলতে বের হয়ে পড়েছেন বলে শোনা গেছে।
এই নব নব সাংস্কৃতিক উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে দেশটি শণৈ শণৈ গতিতে এগিয়ে চলেছে। এরই মধ্যে তারা সংস্কৃতির আরেক ক্ষেত্র খাদ্যাভ্যাসেও এনেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। জিলাপী হয়ে গেছে জালেবি। হালিম হয়েছে ডালিম। সোনা মোড়ানো আইসক্রিমের পরে তারা আবিষ্কার করেছে সোনায় মোড়ানো জালেবি বা জিলাপী। এমন সময় আসল মাইকেল, মাইকেল মধুসূদন গলা খাঁকাড়ি দিয়ে প্রবেশ করে বললেন, ‘বিষয়টা কিন্তু চিন্তার। এই দেশের পদকের সোনা চুরি হয়ে গিয়েছিলো। এই সোনা কোথায় গেলো সেটা কিছুতেই জানা না গেলেও এখন বোঝা যাচ্ছে এই সোনা তারা খেয়ে ফেলেছে । কারণ তারা সব কিছুতে সোনা দিয়ে খাচ্ছে। আইসক্রিম, জিলাপী যদি খেতে পারে তবে সোনা দিয়ে পানও চিবাতে পারে অথবা সোনা দেয়া কালাভূনা খেলেও বিস্মিত হবার উপায় নাই।’
ঔপনিবেশিক শেকসপিয়ার দা একটু বিব্রত হলেন। ‘কালাভূনা নামটা কেমন যেন রেসিস্ট। সাদাভূনা বলে কি কিছু আছে? কালাভূনা কেন কালা? অন্য কোনো নাম কি দেয়া যেতো না?’ মাইকেল বললেন, ‘আপনাদের দেশে হোয়াইট সস থাকলে এখানেও কালাভুনা থাকতে পারে। খাবারের মধ্যে এরা যেমন সোনা দেয় , পানিও দেয়। ভাতে পানি দিয়ে বলে পান্তা। এই দেশটা খুব গণতান্ত্রিক। এরা সব খায়। নানাভাবে খায়। এক কবি নাকি মানচিত্রই খেয়ে ফেলতে চেয়েছিলেন। খাওয়ার বিষয়ে অভিনবত্ব এনে তারা হাজার বছরের পান্তাভাতকেও সামনের দিনে বদলে দিতে পারে। এরই মধ্যে তারা নুডলসের পোলাও ও খিচুড়ি রান্না করেছে। সামনে তারা নুডলসের পান্তাও বানাতে পারে। এর নাম হবে পান্তাডলস।’
এই উন্নত দেশটি সবচেয়ে উন্নতি করেছে টেলিভিশন চ্যানেল ও সামাজিক মাধ্যমে। এখানে প্রায় প্রতি চল্লিশ লাখ লোকের জন্য একটা চ্যানেল আছে। আর প্রত্যেকেরই আছে একটি ইউটিউব চ্যানেল। দেশে বিদেশে এরা ছড়িয়ে পড়েছে। এইসব চ্যানেলে তারা যে যার ইচ্ছামতো যা খুশি তাই প্রচার করতে পারছে। প্রকৃতই এক ডিজিটাল বিপ্লব। প্রতি তিনদিন পরপর এখানে নতুন নতুন আলোচনা তর্ক বিতর্ক ও কুতর্ক শুরু হয়। এখানে বেজোড় সংখ্যক বুদ্ধিজীবিদের স্বাক্ষরিত বিবৃতি থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলের প্রেস বিজ্ঞপ্তি সবই সুলভে পাওয়া যায়। এই উন্নত সংস্কৃতির লোকজনের প্রধান শ্লোগান হলো ভাইরাল হও। ভাইরাল হও।
এককালে ভাইজান হলে লোকে সম্মান করে চেয়ার ছেড়ে দিতো। আজকাল ভাইরাল হলে সম্মান দেয় ও চেয়ার ছেড়ে দেয়। এই জগতে ট্রল ও গালাগাল করাকে বলে রোস্টিং। মুরগির রোস্টের চেয়েও এই রোস্ট উপাদেয়। কিছুদিন পরপর এখানে স্ক্রিনশট ও ফোনালাপের অডিও ভাইরাল হয়। তারপর সমাজের মোড়লেরা এটা নিয়ে বক্তব্য দেন। শেকসপিয়ার মাথা নেড়ে বললেন , ‘এখানেই কি সেলুকাস গিয়েছিলো?’
মাইকেল বললেন, ‘না। যায় নাই। এই জায়গার কথা শুনে আলেকজান্ডার ও সেলুকাস নদীর অন্য পাড় থেকেই ফেরত গিয়েছিলো।’ এক সহমতেল ভাই বললেন, ‘এখন হলে আর ফেরত যেতো না। আমরা দু-দু’টো সেতু ও টানেল বানিয়েছি। এখন আলেকজান্ডার এলে সোজা রোহিংগা ক্যাম্পে দেখতে যেতে পারতো। সাথে খানিকটা সাগরবেলা, পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা সাগর সৈকত।’ শেকসপিয়ার বললেন, ‘ও বুঝেছি, আমাদের লন্ডনের টাওয়ার ব্রিজের মতো কিছু কি?’ মাইকেল মাথা নাড়লেন। সহমতেল ভাই দ্বিগুন উৎসাহে বললো , ‘আপনাদের সেতুতে কয়টা পিলার আর কয়টা স্প্যান? কীসের সাথে কীসের তুলনা? কোথায় বটগাছ আর কোথায় উইলো গাছ?’
সোনা এরা যে খায় জিলাপী ও আইসক্রিমের সাথে , শুধু সেটাই নয়, এদের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা সোনার ঈগল সুশোভিত সোনার দোকানের শাটার খুলতে দুবাই চলে যায়। সেখানে তারা যার সাথে ছবি তোলে তার নাম ইন্টারপোলের তালিকায় আছে বলে শোরগোল ওঠার পরে জানা যায় সোনায় মোড়ানো ময়দার জিলাপীর মতো এই সোনার ঈগলও নাকি আসলে লোহার। এটাও জিলাপীর মতো সোনায় মোড়ানো হয়েছে। একথা শুনে সবচেয়ে লজ্জা পায় সেই সোনার দোকানের মালিক । জানা যায় সে কাউকে না বলে পালিয়ে গেছে। পলাতক হলেও কিছুদিন পরপর সে ফেসবুকে লাইভ ভিডিও দেয় ও বলে সে বহাল তবিয়তে আছে। ইন্টারপোলের লোকজন তাকে না পেলেও জুকার দাদা তাকে ঠিকই খুঁজে পায়। এসব নিয়ে ইন্টারনেটে তুমুল যুদ্ধ চলাকালীন বাহাত্তর টিভি ও অসময় টিভি প্রমাণ করে দেয়, এগুলো আর কিছু নয়, ষড়যন্ত্র! কাঁচাবাজারের মাঝখানে অবস্থিত একটি সংবাদপত্র মাছ-মাংস বিষয়ক স্বাধীনতা ও একজনের ছবিতে আরেকজনের সংলাপ কেন লিখলো এই নিয়ে মহা হুজ্জত তৈরী হলেও, একই হুজ্জতকারীরা সবাইকে মজিদ চাচা, জলিল চাচা হিসেবে মেনে নেয় ও একাধিক লোককে মজিদ ও জলিল হিসেবে মেনে নিলেও , একই গরুকে আলাদা আলাদা গরু , অথবা যমজ গরু হিসেব মানতে তাদের অসুবিধা হয় না। দেশে এত মজিদ ও জলিল আছে জানার পরে এনআইডি সার্ভার পরীক্ষা করে দেখার দরকার কিনা এটা নিয়ে আইটি বিশেষজ্ঞরা চিন্তিত হয়ে ওঠেন। এত এত মজিদ ও জলিল নামে লোক থাকলে একজনের ছবি আরেকজনের নাম বসে গেলে বিরাট সমস্যা হতে পারে। এজন্য আপাতত ইভিএম নিয়ে আলোচনাও বন্ধ হয়ে যায়। সর্বত্র এত মজিদ ও জলিল থাকলে এটা সনাক্তকারীদের জন্য একটি বিরাট ঝামেলা হয়ে উঠতে পারে।
শেকসপিয়ার বললেন, ‘এসবই দেখি আমার নাটকের মতো। কমেডি অব এররস।’ মাইকেল মাথা নাড়েন, ‘এত অল্পেই এমন বললে হবে না শেকস দাদা। আপনি কি ওটিটির জন্য নাটক লিখেছেন? আপনার নাটক কি বঙ্গভংগ প্ল্যাটফর্মে দেখায়? আপনার নাটকে কি বয়ফ্রেন্ডের হেডলাইট ভালো কিনা সেটা জেনে ডেট করার ডায়লগ আছে? রুমডেটে গেলে সেফটি প্রিকশন নিয়ে ডায়লগ আছে? লিটনের রাজপ্রাসাদ আছে? বয়ফ্রেন্ডের গাড়ি স্টার্ট দিলেই বন্ধ হয়ে যায় এমন কিছু আছে? আপনি এই উন্নত সংস্কৃতির দেশে অচল। এখানে অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অংগ-প্রত্যংগের ছোট বড় নিয়ে আলাপ হয়। এমন আলোচনা আপনি কোনদিন করতেই পারেন নাই। আপনি মধ্য গ্রীষ্মরাতের স্বপ্ন নাটকে লিখেছিলেন হেলেনার বান্ধবী ছোট হলেও সে ভয়ংকর। এরা কিন্তু ছোট কিছু পছন্দ করে না। বড় কিছু চায়। ডাক্তারের কাছে গিয়ে নাক বড় করে, থুতনি বড় করে। প্রায় সবই নাকি বড় করা যায়। পুরোনো ছবির সাথে চেহারা না মিললে বলে , এটা তাদের বংশে আছে। বয়স বিশ হলে একবার, ত্রিশ হলে একবার, চল্লিশ হলে একবার চেহারা প্রায় পুরোপুরি পাল্টে যায়। বোটক্স আর ডিটক্স এই দু’টো শব্দ আপনার নাটকেই নাই। আপনার নাটক ভরা কেবল বিষ। এসব খেয়ে রোমিও জুলিয়েটের কী অবস্থা হলো… বিষ না খেয়ে যদি বোটুলিনাম টক্সিন চামড়াতে দিতো তাহলে বোটক্স দিয়ে জুলিয়েট অকুঞ্চিত ত্বক নিয়ে বৃদ্ধা হতো। রোমিও তাকে ষাট বছরেও একই চেহারায় পেতো। উন্নয়ন হলে দেখেন , মানুষ কেবল বেশিদিন বাঁচে যে সেটাই নয়, বুড়োও হয় না।’
: এবার বলো ওটিটি কী?
: ওটিটি হলে ওভার দ্য টপ। মানে টিভির উপরে টিভি। সিনেমার উপরে সিনেমা। এখানে সব কিছুতে শুরুতেই বলা হয় গরু-ছাগল-ভেড়া-বিড়াল-কুকুরকে তারা কোনো হার্ম বা ক্ষতি করে নাই। কিন্তু তারা দেদারসে সিগারেট খায়, ,মদ খাওয়া দেখায় , ড্রাগসও দেখায়। আর লেখে স্মোকিং কিলস। মদ কিলস। ড্রাগ কিলস। গরু ছাগলের প্রতি বিশেষ মোহাব্বত থাকলেও মানুষের বিষয়ে তাদের কোন মোহাব্বত নাই্। মানুষ মারা এত কিছু দেখানোর পরেও আবার পিস্তল বন্দুক দিয়েও মানুষ মারে। তখন অবশ্য গান কিলস লেখে না।
‘তাহলে কি এই উন্নয়নে আমাদের কোন জায়গা নাই?’ দুঃখিত হয়ে বললেন শেকসপিয়ার দা।
মাইকেল বললেন, ‘আছে আছে। দেশে বাতাবী লেবুর উচ্চ ফলন ও পেয়ারা সাইজের বড়ই দেখানোর একটা চ্যানেল আছে। সেখানে সবসময় সত্য কথা বলে । কোনো মিথ্যা বলে না। এখানে কোনো উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা থাকে না। এখানে টক শো-তে সবসময় রবিন দা মানে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল ভাই এর উদ্ধৃতি দেয়া হয়। আমাকেও বিশেষ বিশেষ দিনে কিছু কবিতা দিয়ে স্মরণ করা হয়। যেমন একটা হলো “হে বংগ ভাণ্ডারে তব বিবিধ রতন।” এরা প্রায় সবকিছুতেই ছড়া লেখে। উন্নয়নের ফলে সৃষ্ট বিভিন্ন অনুভূতি নিয়ে এরা সর্বদা সচেতন থাকে। সহমতেল ভাইদের প্রায় সবাই এখানে অনুষ্ঠান করে। চতুর্থ যান্ত্রিক ও পঞ্চম যান্ত্রিক বিপ্লবের মানে ফোর্থ ও ফিফথ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভুলুশনের প্রধান যন্ত্রটা নিয়ে এরা সবসময় আলোচনা করে। এর নাম ষড়যন্ত্র।’
: তাহলে আমার কোনোকিছুই কি এই দেশে চলে না। সব অচল? দু’শ বছর আমার স্বজাতির শাসন ও শোষণ কো্নো কাজেই লাগলো না?
মাইকেল হেসে বললেন, ‘কাজে লেগেছে। এই উন্নত দেশে শত শত ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল। এরা রবিকে রাভি বলে। খরবায়ুকে খোর্বায়ু বলে। আর এই যে আমি মাইকেল হয়েছি। এদের আইন-কানুন প্রায় সবই বৃটিশ আমলের। নিজেরা কিছু আইন বানায় বটে, কিন্তু সেটা নিয়ে অনেক আন্তর্জাতিক শোরগোল হয়। যেমন, ডিজিটাল আইন। আর এরা প্রায় সবকিছুতেই বৃটিশ আমলের নিয়মে চললেও, বৃটিশ গণতন্ত্র বিষয়টা এদের কাছে খুব একটা পছন্দের না। এরা ধীরে ধীরে কানাডাকে কলোনি বানিয়ে ফেলছে। সেখানে জমি বাড়ী গাড়ী কিনছে। সিংগাপুর, দুবাই, মালয়েশিয়া বাদ দিচ্ছে না। আর নির্বিচারে ব্যাংকের টাকা মেরে দিয়ে সবাই শাইলককে পথে বসিয়ে দিচ্ছে। ধার নিলে আর ধার শোধ করছে না।
ডিজিটাল ব্যবসার নামে মোটরসাইকেল আর গাড়ীর ছবি দেখিয়ে হাজার কোটি টাকা লোপাট করছে। এদের জীবনে ডিসকাউন্ট হলো সবচেয়ে প্রিয় শব্দ। আলেকজান্ডার দ্যুমা বেঁচে থাকলে এদের জন্য ডিসকাউন্ট অব মন্টক্রিস্টো লিখতেন।’
: তাহলে? আমি আজ অপাঙক্তেয়? আরো বিষন্ন হলেন শেকস দাদা।
‘আপনার একটা লাই্ন কিন্তু সবখানে কাজে লাগে।’ মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন মাইকেল। “জগতের রংগমঞ্চে সবাই নটরাজ। অভিনেতা অভিনেত্রী। এখানে প্রায় সবাই যা নয় সেটার ভান করে। সবাই অভিনেতা।“
: মাইকেল, ছোটভাই আমার। তোমার কোনো লাইন কি এদের নিয়ে বলা যায়? বিষন্ন বদনে বলেন শেকসপিয়ার।
মাইকেল বলেন, ‘নিশ্চয়ই বলা যায়।
অলীক কুনাট্য রঙ্গে
মজে লোকে রাঢ়ে বঙ্গে
নিরখিয়া প্রাণে নাহে সয়
সুধারস অনাদরে
বিষবারি পান করে
তাহে হয় তনু মনঃক্ষয়
প্রাণে নাহি সয়।
এরা এমনি ভণ্ড হয়েছে যে নিজেরাই নিজেদের ঠকিয়ে সবকিছুর বারোটা বাজাচ্ছে।’
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন