যে ১০টি কারণে এক্সট্রাকশন ঢাকাকে সঠিকভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারেনি

৪২৬৪ পঠিত ... ১১:০৫, এপ্রিল ২৫, ২০২০

নেটফ্লিক্সের 'ঢাকা' বেজড (লোল) সিনেমা এক্সট্রাকশন দেখে ক্ষুব্ধ বাংলার গণমানুষ (ইউ কান্ট ব্লেম দেম!)। সিনেমাটিতে ঝামেলার বিষয় আছে আরও অনেক। তবে অনেকের কাছে বেশি আপত্তিকর লেগেছে 'ঢাকাকে সঠিকভাবে না ফুটিয়ে তুলতে পারা।' আমরা একেবারেই একমত, এই সিনেমায় ঢাকাকে একদমই ঠিকঠাক ফুটিয়ে তোলা হয় নাই। একটা-দুইটা না, আমাদের কাছে আছে গোটা দশেক যুক্তি!

১# দুর্দান্ত কার চেজ সিন
অনেকভাবে বাংলাদেশি দর্শকদের বোকা বানানো যেতে পারে। কিন্তু দ্রুতগতির পুলিশ কার দিয়ে বাংলাদেশিদের বোকা বানানো অসম্ভব। নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, ট্রাফিক জ্যামের জন্যই হোক, অথবা খুবই উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন গাড়ির জন্যই হোক, চেজ করার মতো এত দ্রুতগতির পুলিশের গাড়ি বাংলাদেশে থাকার প্রশ্নই আসে না।

২# ভীড়ের অভাব
একজন সাধারণ বাংলাদেশি মানুষ রাস্তায় যে জিনিষগুলো দেখলে পৃথিবীর সব কাজ ফেলে মজা দেখতে দাঁড়িয়ে পড়ে সেগুলোর মধ্যে প্রথম দুটি হলো বিদেশি ও গোলাগুলি। কিন্তু এখানে বন্দুক হাতে বিদেশি ধুন্ধুমার গোলাগুলি করা স্বত্বেও তাকে সাধারণ মানুষের ভীড় তো ঘিরে ধরেইনি, এমনকি কেউ সেলফি তোলার জন্য অনুরোধও করেনি তাকে।

৩# নকল গুলি
পুলিশের কাছে রাবার বুলেট ছাড়া অন্য কোনধরনের বুলেট আছে মানেই চোখ বন্ধ করে বলে দেয়া যায় এই পুলিশ ঢাকার পুলিশ নয়।

৪# শিশু সন্ত্রাস
ক্রিস হেমসওয়ার্থকে গভীর রাতে শিশু সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করলেও তার ফোন ঠ্যাক দিয়ে যখন রেখে দিতে চায়নি, তখনই বুঝবেন এই সিনেমা ঢাকার সঠিক চিত্র ফুটিয়ে তুলে না।

৫# লকডাউন
নায়ক যাতে পালাতে না পারে, তাই সমগ্র ঢাকাকে লকডাউন করে ফেলা হয়, যা সবাই রাস্তা ঘাটে গাড়ি ফেলে রেখে ঘরে ঢুকে যাওয়ার মাধ্যমে অক্ষরে অক্ষরে পালন করে। কিন্তু গত এক মাস জুড়ে ঢাকার পরিস্থিতি আমাদের বলে যে, বাংলাদেশিরা আসলে লকডাউনের থোড়াই কেয়ার করে। সো ইম্প্র্যাকটিকাল!

৬# কাদা ছোড়াছুড়ির অভাব
এত গোলাগুলি হয়ে গেলো, কিন্তু কোন নেতা সংবাদ সম্মেলন করে সব বিএনপির ষড়যন্ত্র এবং নায়ককে বিএনপির এজেন্ট বললেন না, এতেই বোঝা যায়, বাস্তবের বাংলাদেশের সাথে এই সিনেমার নূন্যতম মিল নেই।

৭# স্নাইপারের রেঞ্জ
এত উঁচু উঁচু বিল্ডিংওয়ালা ঢাকায় কর্নেল কিভাবে এত দূর হতে ব্রিজের ভিউ পেলেন... হাজারো অট্টালিকার বাঁধা ভেদ করে, এই প্রশ্নের জবাব আপনাকে কেউ দেবে না।

৮# ব্রিজ পার করার পন্থা
রণদ্বীপ হুদাকে ব্রিজ পার হবার সময় আটক করা হলেও ব্রিজ পার হবার জন্য তার কাছে ৫০০ টাকা চাওয়া হয়নি। এইটা অত্যন্ত অবাস্তব এবং অগ্রহণযোগ্য।

৯# আড়ংয়ের অভাব
ক্রিস হেমসওয়ার্থ তার বিদেশি বন্ধুর ঢাকার বাড়িতে যাওয়ার পরে দেখা যায়, সেই বিদেশির বাড়িতে আড়ং এর কোনো পণ্যই নেই। এ কেমন বাসা?

১০# ভাষা বিভ্রাট
দীর্ঘ ১৩১ মিনিট ধরে ঢাকায় কেউ কাউকে একবারের জন্যও 'মামা' ডাকেনি। মামা ডাক ছাড়া ঢাকার অস্তিত্ব থাকলেও তার কোন অর্থ নেই। সুতরাং এই সিনেমায় যে আসল ঢাকা শহর একেবারেই উঠে আসেনি, তা আপনি একেবারে নিঃসন্দেহেই বলতে পারেন।

 

আরও পড়ুন

এক্সট্রাকশন দেখে যা বুঝলাম, যা বুঝলাম না

নেটফ্লিক্স না থাকায় কল্পনায় আমি 'এক্সট্রাকশন' মুভিটা যেমন দেখলাম

৪২৬৪ পঠিত ... ১১:০৫, এপ্রিল ২৫, ২০২০

Top