প্রিয় বাবা,
কেমন আছেন? আমি এতদিন ভালো ছিলাম না। বিষণ্ণতা, হতাশা, ক্লাস করতে না পারার বিরহ আমাকে ঝঁকে ধরেছিলো। একই ঘরে থেকেও সবসময় নিজের রুমে দরজা বন্ধ করে বসে থাকায় আপনি হয়তো বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছেন। পড়ালেখার সাথে এত লম্বা বিচ্ছেদে আমি কীভাবে ভালো থাকি বলেন। তবে আশার কথ হলো, অনলাইনে ক্লাস শুরু হওয়াতে এখন বেশ ভালো আছি। আবার ক্লাস হবে, আবার পড়ালেখা করবো- এইসব ভাবতেই বারবার উৎফুল্ল হয়ে উঠছি।
আপনি জেনে থাকবেন যে, অনলাইন ক্লাস ইন্টারনেটের মাধ্যমে হয়। ভিডিও কলে স্যারসহ আরো শিক্ষার্থীদের একসাথে দেখার জন্য শত শত টাকার মেগাবাইটের দরকার। আমি জানি, আমার পড়ালেখার জন্য এই টাকা আপনার কাছে কিছুই না। সেজন্যই পত্র লিখতে বসা।
আপনি বলবেন, বাসায় তো ইন্টারনেট আছেই। আবার কিসের আলাদা ইন্টারনেট! বাবা, আপনি তো জানেন, বাসার ওয়াইফাইয়ের কী হাল! দিনের মধ্যে অন্তত ১৪ বার রাউটার অন-অফ করতে হয়। গত ৩ দিন ক্লাস করতে গিয়ে লক্ষ্য করেছি, আমার ক্লাসের সময় কোনদিনই ইন্টারনেট থাকে না। পুরো এলাকার অনেকে একসাথে অনলাইন ক্লাস করার কারণে এমনটা হয়।
এই সমস্যা সমাধানের জন্য মোবাইল ইন্টারনেটের শরণাপন্ন হতে হবে। আমার অনেক বন্ধুরা মোবাইল ইন্টারনেট দিয়েই এখন অনলাইন ক্লাস করে। তাদের মারফত জানতে পারি, মোবাইল ইন্টারনেটেও কিছু সমস্যা আছে। মাঝে মাঝে গুরুত্বপূর্ণ লেকচারের সময় মোবাইল ইন্টারনেটও চলে যায়। সেজন্য ওরা সবাই একই সাথে ৩টা সিমে ইন্টারনেট কিনে রাখে। যাতে কোনভাবেই স্যারের গুরুত্বপূর্ণ কোন লেকচার মিস না হয়ে যায়।
এমতাবস্তায়, প্রতিদিন প্রতিটি ক্লাসের জন্য ৩টি সিমের মেগাবাইট কেনা বাবদ ৩০০০ টাকা ও ক্লাস পরবর্তী আরেকটা ভিডিও কলে বন্ধুদের সাথে গ্রুপ স্টাডির জন্য আরো ২০০০ টাকা সহ সর্বমোট ৫০০০ টাকা আমার বিকাশ একাউন্টে পাঠিয়ে দিলে আমি এই দুঃসময়েও অনলাইনে পড়ালেখা চালিয়ে নিতে পারবো।
ইতি
আপনার মেধাবী সন্তান
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন