এই দুনিয়ায় কত অদ্ভুত ব্যাপারই না ঘটে। আরজে কিবরিয়ার শো থেকে বহু বছর আগে হারিয়ে যাওয়া পরিবার/আত্মীয়স্বজনকে খুঁজে পাবার গল্প শুনে আমাদের চোখে পানি এসেছে। গল্প, উপন্যাসে এই এলিমেন্টগুলোর প্রাপ্তি আরও সহজলভ্য হলেও ভুলে গেলে চলবে না, হিস্ট্রি রিপিটস ইটসেল্ফ। নতুন ছাঁচে আসলেও ভাত এবং পায়েসের উপাদান একই থাকবে।
হারিয়ে যাওয়া পরিবার ফেরত পাবার গল্পটি বলছিলাম।
কোল্ডপ্লে'র কনসার্ট দেখতে থাইল্যান্ড যাবার বিমানে মিরাকুলাসলি পুনর্মিলন ঘটে বরগুনার জামশেদ ও ১৯৯১ সালের বন্যায় হারিয়ে যাওয়া পরিবারের। ঘটনার বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ জামশেদ, তার ছোটবোন রায়হানা, এবং তাদের বাবা-মা দু'জনই। জামশেদের বাবা বলেন, ‘১৯৯১ সালের বন্যায় আমাদের দুই বাচ্চা হারিয়ে যায়। এরপরে তাদের অনেক খুঁজেছি। পত্র-পত্রিকা থেকে শুরু করে পুলিশ পর্যন্ত হন্যে হয়ে খুঁজেছি। শেষমেষ না পেয়ে ধরেই নিয়েছি তারা আর নেই। আমার স্ত্রীর চাপাচাপিতে এবার কোল্ডপ্লে'র কনসার্ট দেখতে যাচ্ছিলাম। বিমানে একটি মেয়েকে দেখে মনের গভীরে কোথায় যেন নাড়া দেয়। পরে কথা বলে জানতে পারি এই মেয়েই আমার হারিয়ে যাওয়া পাঁচ বছরের শিশুকন্যা রায়হানা...তখন আমার মনে হচ্ছিলো জামশেদের কথা। আহারে, এভাবেই গল্পের মতো যদি ছেলেটাকেও খুঁজে পেতাম....’ এতটুকু বলে চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়তে থাকে রায়হানা-জামশেদের বাবার।
কাহিনী এখানেই শেষ নয়, কনসার্টে 'ফিক্স ইউ' গান যখন চলছিলো, সবাই যখন নস্টালজিয়ায় ভাসছিলো, ঠিক তখনই রায়হানা-জামশেদের মায়ের চোখ পড়ে দু'সিট পড়েই বসে থাকা এক যুবকের দিকে। এক নস্টালজিক ডিলেমার মধ্যে বাকি সময়টুকু তিনি লক্ষ্য করেন ওই যুবককে। যুবকের সাথে কথা বলতেই তিনি বুঝতে পারেন এই তার হারিয়ে যাওয়া জামশেদ। ১৯৯১ সালে জামশেদের বয়স ছিলো সাত বছর। তার বাবা-মার স্মৃতি রায়হানার চেয়ে আরেকটু বেশি। একইসাথে বাবা-মা-বোনকে ফিরে পেয়ে জামশেদ সেখানেই মাথা ঘুরে পড়ে যায়। জ্ঞান ফেরার পর ব্যাংকক সিটি হসপিটালের ইমার্জেন্সি অ্যান্ড ক্রিটিকাল কেয়ারে জন্ম হয় এক আবেগতাড়িত পরিবেশের।
শুধু জামশেদ-রায়হানার মতো সুন্দর স্মৃতিই নয়, থাইল্যান্ড ঘিরে তৈরি হয়ে আরও ভিন্নসব ঘটনাবহুল ইস্যু। তারিন নামের এক তরুণী বলেন, ‘বা*র কন্সার্ট। বিমানে উঠে দেখি আমার এক্স, তার বউ-বাচ্চা ১৪ গোষ্ঠী, এমনকি যে মেয়ের সাথে সে আমাকে চিট করছিলো সেই মেয়েও তার জামাই নিয়ে উপস্থিত। মেজাজটা এমন খারাপ হইলো না! কী আর বলবো। নিজেকে আর ধরে রাখতে পারি নাই। ওইখানেই স্যান্ডেল খুলে পিটাইতে নিছিলাম। বিমান থেকে নামায়ে দেওয়ার ভয়ে বিশেষকিছু করতে পারি নাই...’