এই গরমেও মাথা ঠাণ্ডা রেখে রাজনীতিক যেভাবে নরকের প্রধান প্রহরী হলেন!

১৫১৮ পঠিত ... ২৩:৫২, মে ২৩, ২০১৭

বজ্রপাতে মৃত্যুর পর এক রাজনীতককে ঈশ্বর নরকে পাঠালেন। নিয়ম হলো নরকে যাওয়ার পর উত্তপ্ত একটা কফিনে চুপচাপ শুয়ে থাকতে হবে। কিন্তু সেই রাজনীতিক কফিনে একবার শুয়েই লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়ালেন। তার মনে হলো এমন আগুন-গরম কফিনে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকলে তিনি ছাই হয়ে যাবেন। তাই কফিন ছেড়ে উঠে তিনি পায়চারি করতে থাকলেন।

একটু পর ওই কক্ষে টহলে আসলেন নরকের প্রধান প্রহরী। কফিনগুলো ঘুরে ঘুরে পরীক্ষা করতে শুরু করলেন তিনি। দেখলেন, উত্তাপের চোটে সবাই ছটফট করছে। তাদের জিভ বের হয়ে গেছে, চোখ উল্টে গেছে।

 সন্তুষ্টচিত্তে প্রহরী গেলেন কোনায় রাখা নতুন কফিনটার কাছে। একি! কফিন তো খালি! তাহলে ব্যাটা গেল কোথায়? খুঁজতে শুরু করলেন তিনি। পেয়েও গেলেন। পায়চারি করতে করতে কক্ষের বাইরে চলে গিয়েছিলেন ওই রাজনীতিক।

পাকড়াও করে কফিন ছাড়ার কারণ জানতে চাইলেন প্রহরী। রাজনীতিক বললেন, ধুর মিয়া, কি কফিন দিছেন! এর চেয়ে কোম্পানিগঞ্জের রমিজের দোকানের চায়ের কেতলিও তো বেশি গরম ছিল।

ঘাবড়ে গেলেন প্রহরী। দ্রুত কফিনের তাপমাত্রা মাপার মিটারটা চেক করলেন। ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস দেওয়া আছে, আর্দ্রতা ৮০ শতাংশ। তিনি দুটোই ১০ করে বাড়িয়ে দিলেন। তারপর তাকে কফিনে শুয়ে থাকার কড়া আদেশ দিয়ে কক্ষ ছাড়লেন।

পরের দিন আবার টহলে এসে দেখলেন সেই রাজনীতিক এবার মেঝেতে বসে আছেন। কারণ জিজ্ঞেস করতেই বললেন, আমাদের গ্রামে চৈত্র মাসের কাঠফাটা রোদও তো এর চেয়ে বেশি গরম। বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে, তাই বলে ঠাণ্ডা কফিন দিয়ে এভাবে অপমান করবেন? ঈশ্বরের শাস্তি মাথা পেতে নিয়েছি। কিন্তু শাস্তির নামে তামাশা কেন?

এবার তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা আরো ১০ করে বাড়িয়ে দিয়ে গেলেন প্রহরী। পরের দিন এসে দেখলেন ওই রাজনীতিক মেঝেতে শুয়ে আছেন। এবার কি হয়েছে, জানতে চাইলেন প্রহরী। রাজনীতিক বললেন, বজ্রপাতের মধ্যে কি পরিমাণ তাপমাত্রা থাকে আপনার কোনো ধারণা আছে? ঠাণ্ডা কফিন না বদলানো পর্যন্ত আমি মেঝেতেই থাকব। আজ থেকেই আমার অনশন শুরু। ঈশ্বরকে জানিয়ে দেবেন।

এবার মেজাজ থারাপ হলো প্রহরীর। ব্যাটাকে শায়েস্তা করতে উল্টো পথে হাঁটলেন তিনি। তার কফিনের তাপমাত্রা কমিয়ে মাইনাস ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস করে দিলেন। তারপর রেগেমেগে বেরিয়ে গেলেন।

রাজনীতিক পুরো ব্যাপারটা খেয়াল করেলেন। তারপর কক্ষের বাইরে গিয়ে আরেক প্রহরীকে ডেকে বললেন, শোনো কাল থেকে আমি প্রধান প্রহরী হচ্ছি। তুমি চাইলে আমার সহকারী হতে পারো।

বিস্মিত প্রহরী বললেন, কিভাবে সম্ভব। নরকের ইতিহাসে এমন ঘটনা ঘটেনি। এখন যিনি প্রধান প্রহরী হিসেবে আছেন তিনি এ দায়িত্ব পালন করছেন ১৫০ বছর ধরে।

এত কথা বলো কেন? সহকারী হতে চাও কি না বলো? ধমকের সুরে বললো রাজনীতিক।

একটু ভেবে 'হ্যাঁ' উত্তর দিলো প্রহরী।

তেমন কিছু করতে হবে না। খালি ঈশ্বরের কাছে গিয়ে জানাবে, প্রধান প্রহরী তার দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করছে না। আজকাল ঘুষের বিনিময়ে সে কফিনের তাপমাত্রা কমিয়ে দিচ্ছে। প্রমাণ হিসেবে তোমার মোবাইলে আমার কফিনের তাপমাত্রার ছবি তুলে নিয়ে যাও--বললেন রাজনীতিক।

প্রহরী তার কথামতো ঈশ্বরের কাছে প্রমাণসহ নালিশ করলো।

পরের দিন থেকেই নরকের প্রধান প্রহরী নিযুক্ত হলেন সেই রাজনীতিক। আর দায়িত্বে অবহেলার কারণে বরখাস্ত করা হলো আগের প্রধান প্রহরীকে।

 

(মোরাল অব দ্য স্টোরি : এই গরমেও মাথা ঠাণ্ডা রাখুন। রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন।)

১৫১৮ পঠিত ... ২৩:৫২, মে ২৩, ২০১৭

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

রম্য

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি

স্যাটায়ার


Top