গোয়েন্দা গল্পের নেশার সারা পৃথিবীকে বুঁদ করে রেখেছিলেন যে আর্থার কোনান ডয়েল, ‘শার্লক’-এর স্রষ্টা কিংবদন্তী এই লেখক একদিন নিজেই বোকা বনে গিয়েছিলেন বাস্তব এক শার্লক হোমসের মুখোমুখি হয়ে। স্কটিশ এই ভদ্রলোককে অনেকটা আধ্যাত্মিক কায়দায় বোকা বানিয়েছিলেন বস্টনের এক ট্যাক্সি ড্রাইভার। সেবার ১৮৯৪ সালে মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের এক সাহিত্য সভায় নিজের নাস্তানাবুদ হওয়ার ঘটনাটি বর্ণনা করেছিলেন তিনি, যেটি পরবর্তীতে বিভিন্ন মার্কিন এবং ব্রিটিশ পত্রিকায় ছাপা হয়। ঘটনাটি নিজের আত্মজীবনীতেও লিখেছেন তিনি।
ঘটনা অনেকটা এরকম- বস্টনে এক ট্যাক্সি ডেকে সেটাতে চেপে বসেন আর্থার কোনান ডয়েল। বলা নেই কওয়া নেই, হুট করে ঘাড় ঘুরিয়ে ট্যাক্সি ড্রাইভার গোয়েন্দা গল্প লেখককে নাম ধরে সম্বোধন করে বসেন।
আদ্যিকালে তো আর এখনকার মত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা টেলিভিশন মিডিয়া নেই যে একজন বস্টনের ট্যাক্সি ড্রাইভার আর্থার কোনান ডয়েলের মত দুঁদে গল্প লেখককে দেখে চিনতে পারবেন। ঘটনার আকস্মিকতায় বিস্মিত কোনান ডয়েল ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করে বসলেন, ‘তুমি আমাকে চিনলে কীভাবে?’
ট্যাক্সি ড্রাইভারও মুখে বেশ গাম্ভীর্য এনে বলে গেলেন, ‘আমার অনুমানের ধরনে ক্ষমা করবেন, কিন্তু আপনার পরনের কোট দেখে মনে হয়েছে অনেক নিউইয়র্ক সাংবাদিক এতে তাড়াহুড়ো করে হাতড়েছে; আপনার চুল দেখে মনে হয়েছে ফিলাডেলফিয়ার কোন সেলুন থেকে কাটানো; আপনার টুপি দেখে মনে হয়েছে শিকাগোতে অপেক্ষা করতে আপনার বেশ কষ্ট হয়েছে…’
ড্রাইভারের কথার মাঝেই তাকে থামিয়ে দিলেন বিস্মিত কোনান ডয়েল, বিস্ফারিত চোখে তিনি আনন্দে তাকিয়ে- নিঃসন্দেহে তিনি বাস্তব জীবনে তার সৃষ্টি শার্লককে পেয়ে গেছেন। ‘তারপর?’- অনেকটা প্রাণ চঞ্চল মনে ড্রাইভারকে কোনান ডয়েলের জিজ্ঞাসা।
‘তারপর, আপনার স্যুটকেসে আমি বড় সাদা অক্ষরে ‘কোনান ডয়েল’ দেখেছি’, বলেই হেসে ফেললেন সেই ট্যাক্সি ড্রাইভার।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন