পছন্দের জামাকাপড় রিকশায় উঠতে গিয়ে কিংবা ঘরের সোফার কোনায় লেগে ছিঁড়ে গেলে রিফু করতে দেওয়া হয় লন্ড্রিতে।
প্রাচীন ঢাকায় বনেদি পরিবারে নব্য আবিষ্কৃত মসলিন পরিধানের ব্যবহার ছিল আভিজাত্যের প্রমাণ। সাধারণ মানুষের পরিধান ছিল একখণ্ড নেংটি। মসলিন কাপড় অতি মূল্যবান হওয়ার কারণে এবং ধোয়ার সময় ফেঁসে বা ছিঁড়ে যাওয়ার কারণে মেরামত করতে হতো।
মসলিন কাপড় ধোলাই ও মেরামতের জন্য সেই সময় শালকার ও রিফুকার বা রিফুগার শ্রেণি গড়ে ওঠে। ঢাকায় শালকার ও রিফুকার পেশাটি একচেটিয়া মুসলমানদের দখলে ছিল। মুসলমান সমাজে এদের ছিল বাড়তি মর্যাদা। ধোয়ার সময় ক্ষতিগ্রস্ত বা ছিড়ে যাওয়া মসলিন মেরামত, ছাপমারা ও স্বর্ণ-রুপার সুতায় বন্ত্রের শিরোনাম তোলার কাজ করত এরা। দক্ষ রিফুকার সূক্ষ্ম মসলিনের সমগ্র জমিন থেকে দীর্ঘ একটি সুতা বের করে, সেখানে নতুন করে একই মানের একটি সুতা নিখুঁতভাবে চালিয়ে দিতে পারত। পেশার গোপনীয়তা রক্ষায় তারা নিজেদের মধ্যেই বিয়েশাদি করত। এই কাজ এতটাই গোপনীয় ছিল যে, তারা পরিবারের শুধু ছেলে ও ছেলের ঘরের নাতিদেরই এই কাজ শেখাত। নিজ কন্যার পুত্রসন্তানকেও শেখাত না।
ঢাকার রিফুকাররা প্রায় প্রত্যেকেই ছিল আফিমসেবী। পুরুষের পাশাপাশি ঢাকার নারীরাও ছিল এ কাজে সমান পারদর্শী। ঢাকার শালকার ও রিফুকার সংখ্যায় বেশ বড়ো দল ছিল। দক্ষ রিফুকাররা মাসিক ৮ টাকা পর্যন্ত মজুরি পেত।
তথ্যসূত্র: ঢাকার প্রাচীন পেশা ও তার বিবর্তন, ইমরান উজ জামান
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন