অবশেষে চলে এলো রমজান মাস। খাদ্যরসিক বাঙালির জন্য এই সিয়াম সাধনার মাস যেন দ্বিগুণ সাধনার হয়ে যায়। আজ ইফতারের বিশেষ কিছু রেসিপি নিয়ে এসেছি যা আগে কোনোদিন কেউ খায়নি। চলুন জেনে নেওয়া যাক।
খেজুরের ঘুটনি
খেজুরের ঘুটনি অত্যন্ত আন্ডাররেটেড কিন্তু উপাদেয় খাবারগুলোর একটি।
রান্নার প্রণালী: প্রথমে আধা কেজি খেজুর পানিতে ধুয়ে নিন। পানি একদম ঝরিয়ে ফেলবেন না। কড়াইয়ে তেল দিন। গরম হলে সেখানে মেথি, গরম মসলা, পেঁয়াজ, মরিচ, ধনেপাতা ছেড়ে দিন। ১৪ মিনিট কষানোর পর পানি ঝরানো খেজুর দিন। আরও দশ মিনিট নাড়তে থাকুন। ব্যস! এইতো হয়ে গেলো সুস্বাদু খেজুরের ঘুটনি।
মিষ্টি কুমড়ার বেগুনী
মিষ্টি কুমড়ার বেগুনীর কথা আমরা আগেও শুনেছি। গত রমজানের হট টপিকগুলোর মধ্যে একটি ছিলো মিষ্টি কুমড়ার বেগুনী।
প্রণালী: একটি ফ্রেশ মিষ্টি কুমড়া টুকরো টুকরো করে কেটে নিন। পরিমাণমতো ময়দা, লবণ, হলুদ, বেকিং সোডা এবং এক কাপ শাহ সিমেন্ট নিন। একসাথে মেশান। মিষ্টি কুমড়াকে ফালি ফালি করে ডুবিয়ে নিন আগেই প্রস্তুত করে রাখা ডো'তে। কড়া তেলে হালকা আঁচে ভেজে নিন। কিছুক্ষণ পরপর উলটে দিন। এইতো তৈরি হয়ে গেলো অভঙ্গুর এবং সুস্বাদু ইফতারযোগ্য মিষ্টি কুমড়ার বেগুনী।
বেগুনের জুস
সারাদিন রোজা রেখে ইফতারে কার না প্রাণ ভরে জুস খেতে মন চায়? বাজারের ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক কিংবা যত মজার বেভারেজই হোক না কেনো, এর কোনোটিই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নয়। আপনি বরং নিজেই ঘরে বসে তৈরি করতে পারেন খাদ্য গুনাগুন সমৃদ্ধ এবং ভীষণ টেস্টি বেগুণের জুস।
তৈরি করাও কিন্তু ভীষণ সহজ। জুস তৈরির জন্য প্রয়োজন হবে একটি আস্ত বেগুন, এক লিটার পানি, এক লিটার পানি, হলুদের গুড়া, মরিচের গুড়া, ম্যাজিক মসলা, এক চামচ লবণ ও দুই কাপ চিনি। এদেরকে একত্রে ব্লেন্ড করে ইফতারের ৬ ঘণ্টা আগে ফ্রিজে রাখলেই দেখবেন ম্যাজিক!
জিলাপীর ঘুটনি
ইফতারে জিলাপির সাথে আমরা কম বেশি অনেকেই পরিচিত। কেউ মুড়ির সাথে জিলাপি মাখা পছন্দ করেন, কেউবা আবার আলাদা খেতেই ভালোবাসেন। এ নিয়ে দ্বন্দ্ব অনেক আগে থেকেই চলছে। তবে এবার এমন এক আইটেমের কথা বলবো যা একবার খেলে অন্য সবকিছু ভুলে যাবেন জিলাপি লাভাররা। আর এই বিশেষ কুইজিনের নাম হলো, 'জিলাপীর ঘুটনি'
রন্ধন প্রণালী:
চুলায় এক লিটার পানি নিন। টগবগ করে ফুটে উঠলে আধা কেজি জিলাপী ছেড়ে দিন। জিলাপী নরম হয়ে গেলে বা ভেঙে ভেঙে আসলে চুলা থেকে নামিয়ে রাখুন। খেয়াল রাখবেন, জিলাপী যাতে একদম গলে না যায়। এবার ফ্রাইপ্যানে তেল নিন। কুচিকুচি করে কেটে রাখা পিঁয়াজ, মরিচ, ধনে পাতা, হলুদের গুঁড়া, মরিচের গুঁড়া মিশিয়ে কষান। কিছুক্ষণ কষানোর পর নরম হয়ে আসা জিলাপী ছেড়ে দিন। জিলাপী যে পাত্রে সেদ্ধ করেছেন সেখান থেকেই পরিমানমতো পানি দিন। একসাথে নাড়তে থাকুন। পানি কিছুটা শুকিয়ে এলে উপরে পরিমাণমতো বুন্দিয়া এবং দুটো লেবুর রস দিন। এইতো তৈরি হয়ে গেলো টক, ঝাল, মিষ্টি জিলাপীর ঘুটনি!
পাঙ্গাশ মাছের চা
চা প্রেমী নন এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া ভীষণ মুশকিল। বর্তমানে দুধ চা, লাল চা, লেবু চায়ের পাশাপাশি চল আছে হরেক রকম চায়ের। তবে আজ আমরা বলবো সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের এক চায়ের গল্প। আর তা হলো, পাঙ্গাশ মাছের চা। নাম শুনে আঁতলে উঠলেও এই চা খাবার পর কলিজা জুড়ে বয়ে যাবে শান্তির প্রবাহ।
চা তৈরির প্রণালী কিন্তু খুবই সহজ।
প্রয়োজনমতো পানিতে চা পাতা, দুধ, চিনি ছেড়ে দিন। কিছুক্ষণ জ্বাল হবার পর একটি পাঙ্গাস মাছের টুকরা আস্ত দিন। আরও কিছুক্ষণ জ্বাল দিন। পাঁচ থেকে দশ মিনিট যাবার পর পাঙ্গাস মাছের টুকরাটি তুলে নিন। ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে গরম গরম পাঙ্গাশ ফ্লেভারের চা পরিবেশন করুন!