সাধারণ হিসাবে জিনিসপত্র কিনতে যেমন টাকা লাগে, সরকারি হিসেবে কিন্তু একেবারেই তেমন না। তুচ্ছাতিতুচ্ছ জিনিসপত্র কিনতে সরকারি হিসেবে খরচ হতে পারে কোটি কোটি টাকা। সাম্প্রতিক সময়ে জানেনই তো, বালিশ কিনতে এত হাজার টাকা, বালিশ তুলতে অত হাজার টাকা, পর্দা কিনতে অত লাখ টাকা... এসব খবরের স্রোত থামছেই না। রূপপুরের বালিশ, ফরিদপুর মেডিকেলের পর্দা ও মেডিকেল সরঞ্জাম... অমুক জায়গার বই, তমুক জায়গার বইয়ের কভার, কত দামি দামি জিনিস যে কেনা হচ্ছে। অতি সম্প্রতি ময়মনসিংহের এক সড়কে প্রতিটি নাকি লাইট লাগাতে খবর হয়েছে ৫০ হাজার টাকার বেশি! সে যাই হোক, সামনের দিনগুলোতে এরকম সরকারি কেনাকাটা আর হিসেবজনিত আর কী কী খবর দেখা যেতে পারে, কে জানে! রূপপুরের বালিশে মাথা রেখে শুয়ে তা ভেবে বের করেছে আমাদের 'ঘুমে থাকি হিসাব থাকে না' গবেষক দল!
১# সিলেটের সরকারি খাদ্য গুদামে তের কোটি টাকার আড়াইশো টন চিনি গায়েব। পিপড়া খেয়ে ফেলেছে, দাবি গুদাম পরিচালকের।
২# নাটোরে জেলা প্রশাসকের চুল কামানো বাবদ প্রতিদিন ব্যয় সত্তর লাখ টাকা। ব্লেড খরচ আরো এগারো লাখ।
৩# যশোর জেলা ভূমি অফিসারের পোষা বেড়াল মাছ খাচ্ছে সরকারি টাকায়। এক মাসে আড়াই মন ইলিশ লাগছে বেড়ালটির, খরচ নব্বই লাখ টাকা।
৪# মাগুরা সদর হাসপাতালের এক জ্বরের রোগীকে এক রাতে সাড়ে ছয় কোটি টাকার সাপোজিটার প্রদান করা হয়েছে বলে খরচ দেখিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন। প্যারাসিটামল খাওয়ানো হয়েছে আরো তিন কোটি টাকার।
৫# কুমিল্লা বিভাগীয় কমিশনারের আন্ডারওয়্যার ছিড়ে যাওয়ায় সেলাই বাবদ ব্যয় একুশ লক্ষ টাকা। সূচ কেনা হয়েছে দুইটি। সূচ প্রতি খরচ ধরা হয়েছে আট লাখ টাকা করে।
৬# ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে কোনো কারণ ছাড়া খরচ হয়েছে একচল্লিশ কোটি টাকা। কারণ খুঁজে বের করতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন৷ তদন্ত কমিটি তদন্ত ব্যয় হিসাবে খরচ দেখিয়েছে বিয়াল্লিশ কোটি টাকা।
৭# সাতক্ষীরায় বিভিন্ন সরকারি প্রজেক্টে বিল করার দায়িত্বে নিয়োগ পেয়েছেন মনিরুল ইসলাম নামের এক সরকারি কর্মকর্তা। বিল গেটসকে টপকে বিশ্বের এক নাম্বার ধনী এখন মনিরুল ইসলাম, ফোর্বস ম্যাগাজিনে প্রকাশ৷
৮# দিনাজপুর রেজিস্ট্রি অফিসে ক্রীড়া ও বিনোদন ব্যয় হিসাবে খরচ আশি কোটি টাকা। প্রতিটা লুডো গুটির ক্রয়মূল্য দেখানো হয়েছে তিন কোটি টাকা।
৯# পঞ্চগড়ে নদী ভাঙ্গন রোধে তিন লাখ টাকা খরচে বাধ স্থাপন৷ বাধ দেখাশোনার জন্য সরকারি অফিসারের চশমা ক্রয়ের খরচ ধরা হয়েছে আরো আট কোটি টাকা।
১০# খুলনা ফায়ার সার্ভিস অফিসের কর্মকর্তাদের মধ্যে যেমন খুশি তেমন খরচ প্রতিযোগিতা। বিরতিতে নাস্তা হিসাবে দেয়া প্রতিটা সিঙ্গাড়া বাবদ খরচ একশ ত্রিশ টাকা। প্রত্যেক কর্মকর্তা এক বেলাতেই সিঙ্গাড়া খেয়েছে এক কোটি আঠারো লাখ টাকার।