বাংলাদেশে কোন বিয়া হবে আর তাতে আত্মীয়-স্বজন থাকবে না তা চিন্তাই করা যায় না। বিশেষ করে সাজুগুজু করা আন্টিরা। বিয়ের অনুষ্ঠানে গেলে এসব আন্টিদের ‘পাল্লায়’ আপনাকে কম বেশি অবশ্যই পড়তে হবে, তাদের এড়িয়ে চলা প্রায় অসম্ভব! বিয়েতে দেখা হয়ে যাওয়া এমনই কিছু আন্টিদের সাথে আবারও পরিচিত হয়ে নেই!
১# জমকালো সাজের আন্টি
বিয়ের প্রতিটি অনুষ্ঠানে এ ধরনের আন্টিদের ভারি কাজের শাড়ি আর সাথে বড় বড় গহনা পরে আসতে দেখা যায়। অনেকসময় দেখা যায়, বউয়ের চেয়ে এসব আন্টিরই গহনার পরিমান বেশি থাকে।
২# একই শাড়ি বারবার পরা আন্টি
এই আন্টিকে সেই বিশ বছর আগে থেকে সব বিয়ের অনুষ্ঠানে একই শাড়ি পরতে দেখা যাচ্ছে। সবার প্রশ্ন জাগে তাকে দেখে, আন্টির কী একটাই শাড়ি? নাকি এই শাড়ি উনি একটু বেশিই পছন্দ করেন? আবার শাড়িটা এতদিনেও পরার যোগ্য আছে কিভাবে সেটাও একটা রহস্যময় প্রশ্ন!
৩# অসামঞ্জস্যপূর্ণ মেক-আপওয়ালা আন্টি
এসব আন্টিদের একবার দেখলে চেনার উপায় নেই। বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর মনে পড়ে, এটা তো সেই আন্টিটা! মুখের অতিরিক্ত মেক-আপের জন্য তার চেহারা পাল্টে গেছে! কিন্তু গলায় আর হাতে মেক-আপ না থাকায় এসব আন্টিদের 'আসল রঙ' বোঝা যায় ।
৪# দোয়া দেয়া আন্টি
এ ধরনের আন্টির সাথে দেখা হলেই আপনাকে চিনুক আর না চিনুক, তারা অবশ্যই বলবে যে আপনি কত্ত বড় হয়ে গেছেন। এছাড়াও আপনার মাথায় হাত দিয়ে অবশ্যই দোয়া করে দেবে, যেন আপনার অতি শীঘ্রই কোনো সুপাত্র/সুপাত্রীর সঙ্গে বিয়ে হয় (এবং উনি আবারও অন্যদের দোয়া দিতে আসতে পারেন!)।
৫# খুঁতখুঁতানি আন্টি
এই আন্টিরা সবকিছুতেই খুঁত খুঁজে পান, কিংবা বের করেন। বউয়ের সাজ ভালো হয় নাই, বউয়ের গহনা সুন্দর না, বরের হাসি খারাপ ইত্যাদি থেকে শুরু করে কাচ্চিতে এলাচ বেশি, সবকিছুতেই তারা শুধু খুঁত দেখবেন। কোন কিছু দিয়ে উনাদের খুশি করা একেবারেই অসাধ্য কাজ।
৬# নিজের ঢোল পিটানো আন্টি
যে যেই কথাই বলুক না কেন, তার মধ্যে এই আন্টি অবশ্যই এসে নিজের ঢোল পিটিয়ে যাবেন। যে কোন কথার মধ্যে তিনি মনে করিয়ে দেবেন, তার ছেলে বিদেশে অনেক টাকা বেতনের চাকরি করছে আর মেয়ের মেডিকেলে পড়া প্রায় শেষ।
৭# গল্পবাজ আন্টি
এই আন্টিরা আশেপাশের কে কি করছে সব জানেন বা নিজের মতো গল্প বানিয়ে নেন। এরপর সবার সাথে তা আলোচনা করেন। কার বাসার অবস্থা কেমন, কার ছেলে কার মেয়ের সাথে প্রেম করছে, এই আন্টির কাছে গেলে কম বেশি সব খবরই পাওয়া যায়।
৮# উপদেশ দেয়া আন্টি
উনারা কথার মাঝখানে আপনাকে অনেকগুলো উপদেশ দিবেন আর আপনাকে একটু ফাঁকে পেলেই সে বিষয়ে লম্বা আলোচনা করবেন। তাই এসব আন্টিদের সাথে কথা বলতে গেলে সাবধান। তাদের সাথে কথা বলার আগে খেয়ে আসাটা ভালো। নাহলে আবার উপদেশ শুনতে শুনতে খাওয়াটা মিস হয়ে যেতে পারে।
৯# খাদক আন্টি
জিলাপি, ফুচকার ব্যবস্থা থাকলে এই আন্টির বাটি কখনও খালি দেখা যাবে না। আবার খাবার টেবিলেও এই আন্টিকে সবার আগে বসতে দেখা যাবে। তিনি নিজে তো খাবেনই আবার আশেপাশের মানুষদেরও বলবেন কোনটা খেতে হবে।
১০# ঝগড়াটে আন্টি
উনি বিয়ে বাড়িতে আসবেনই ঝগড়া বাধানোর জন্য। পান থেকে চুন খসতে না খসতেই উনি ঝগড়া বাধিয়ে বসবেন। এরপর তাকে শান্ত করতে সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়বেন। সবাই জানে তিনি ঝগড়া বাধান কিন্তু আত্মীয়তার খাতিরে তাকে দাওয়াত দেওয়াই লাগে।
১১# মাতব্বর আন্টি
বিয়ের কাউকে ঘনিষ্ঠভাবে চিনুক আর না চিনুক, এই আন্টি এগিয়ে আসবেন যেকোন পরিস্থিতিতে। সব কিছুতে মাতব্বরি করাই তার কাজ। কোন কাজ করতে নিলেই তিনি বলবেন 'এভাবে না ওইভাবে করো তাহলে ভালো হবে'।
১২# নাচুনি আন্টি:
এসব আন্টিদের স্বাভাবিক মনে হলেও হলুদের অনুষ্ঠান শেষে যখন ডিজে গান বাজানো শুরু করে নাচার জন্য তখন তাদের আসল রূপ দেখা যায়। তাদের নাচের চোটে কারো আহত হওয়াও অস্বাভাবিক কিছু না।
১৩# পাহারাদার আন্টি
উনারা বিয়ের অনুষ্ঠানে তেমন একটা মজা করতে পারেন না, কারণ উনাদের সময় কাটে নিজের বরকে পাহারা দিতে দিতেই। বর কোন মেয়ের দিকে তাকালো, কোন মেয়ের কথায় হাসলো, এসব খেয়াল করার জন্যই মূলত এই আন্টিরা বিয়েতে আসেন।
১৪# ঘটক আন্টি
উনারা বিয়েতে আসেনই পাত্র-পাত্রী খুঁজতে। তাদের একমাত্র কাজ তার ছেলে/মেয়ে/আত্মীয়/পরিচিত কারো জন্য পাত্র-পাত্রী খোঁজা অথবা যুবক বা যুবতী দেখলে তার জন্য উপযুক্ত জীবনসঙ্গী খুঁজে দেয়া।
১৫# পরিচয় করানো আন্টি
এই আন্টি নিজের ছেলে-মেয়েকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিবেন ও অনুষ্ঠানে উপস্থিত মোটামুটি সবার পরিচয় জেনে নিবেন। সেই পরিচয় কী কাজে লাগে বা কী কাজে লাগে না, সে ব্যাপারে কখনো কিছু জানা যায় না।