সুদীর্ঘ লেখকজীবনে নানান কিছু নিয়ে লিখেছেন হুমায়ূন আহমেদ। কিন্তু পেঁয়াজ নিয়ে লিখেছেন কি? আমাদের জানা নেই! তাই হুমায়ূন আহমেদ যদি পেঁয়াজ নিয়ে বই লিখতেন তবে তা কেমন হতো, আমাদেরকেই ভাবতে হলো!
১#
বাবা নির্দেশ দিয়েছেন, আজ থেকে সব রান্না পেঁয়াজ ছাড়াই হবে। এদিকে মেয়ে নীরু পেঁয়াজ ছাড়া খেতেই পারে না। সে তার মধ্যবিত্ত বেকার প্রেমিককে বলে পেঁয়াজ নিয়মিত কিনে দিতে। একদিকে বাবা-মেয়ের পারিবারিক টানাপোড়েন, অন্যদিকে প্রেমে পেঁয়াজ-সংঘাত, সব মিলিয়ে একটি সামাজিক উপন্যাস চক্ষে আমার পেঁয়াজ।
উপন্যাসটির কিছু অংশ এমন-
'আমি পেয়াজ কাটছিলাম। ও পাশেই ছিলো। হঠাৎ অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম, ওর চোখে অশ্রু টলমল করছে। আমি সংশয়ে পড়ে গেলাম। এই অশ্রুসজল নয়ন কি পেয়াজের ঝাঁঝের কারণে নাকি এতগুলো টাকার পেয়াজ কাটছি সে কারণে?
কে জানে! প্রকৃতি বড়ই রহস্যময়।'
২#
পারভেজ সাহেবের বাসা থেকে প্রতিদিনই পেঁয়াজ হারিয়ে যাচ্ছে। দারোয়ান, বুয়া, কেউই পেঁয়াজ চুরি করেনি। তাহলে কোথায় যাচ্ছে পেঁয়াজ? তিনি কি অবচেতন মনে নিজেই পেঁয়াজ খেয়ে ফেলছেন?
এমন জটিল রহস্য সমাধানে এগিয়ে আসেন মিসির আলী। তিনি কি পারবেন হারানো পেঁয়াজ খুঁজে বের করতে? উপন্যাসটি পড়লেই জানা যাবে (যদি লেখা হয়!)...
৩#
পেঁয়াজের দাম বাড়তে বাড়তে একসময় হাজার টাকা কেজিতে পরিণত হলো। এক সময় দেখা গেল, পেঁয়াজ আদৌ পাওয়া যাচ্ছে না। মজুতদারদের এই দুরভিসন্ধির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেন একজন, বাকের ভাই। গুন্ডা কিংবা বখাটে হিসেবে পরিচিত বাকেরের সংগ্রাম শুরু হলো, মজুতদারদের বিরুদ্ধে। এই গল্পে কে ফাঁসিতে ঝুলবে, বাকের ভাই নাকি পেঁয়াজ? আমাদের জানা নেই।
৪#
অটিজমে ভোগা এক শিশুর লুকিয়ে চুরিয়ে পেঁয়াজ খাওয়ার গল্প। সেই শিশুর সঙ্গে পরিচয় হয় কবি নদ্দিউ নতিমের, যে নিজেও ছোটবেলায় এভাবেই লুকিয়ে লুকিয়ে পেঁয়াজ খেত। পেঁয়াজ কাটার সময় হৃদয়ছোয়া এই উপন্যাসটি পড়লে চোখের পানি কোনোভাবেই আটকাতে পারবেন না।
৫#
আনিস পেঁয়াজ ছাড়া তরকারি খায় না। এমনকি তরকারিতে পেঁয়াজ না থাকলে ভাতের সঙ্গে কাঁচা পেঁয়াজ হলেও, পেঁয়াজ তার খেতেই হবে। অন্যদিকে তার স্ত্রী নবনী পেঁয়াজের গন্ধ সহ্যই করতে পারে না। এক পেঁয়াজের কারণে দোদুল্যমান অবস্থায় তাদের ভালোবাসা, তাদের সংসার। গল্পে মতি মিয়া নামক এক পেঁয়াজ কারবারিকেও (আসলে পেঁয়াজচোর) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যায়।
৬#
হুট করে একদিন ঘুম থেকে উঠে একজন জানতে পারে, কোনো এক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তার নামে পেঁয়াজের একটা বিশাল ক্ষেত লিখে দিয়েছে। চাকরি খুঁজতে থাকা বেকার সেই যুবক রাস্তার ফকির থেকে একদিনেই হয়ে উঠলেন কোটিপতি। কিন্তু এরপর? 'আমার আছে পেঁয়াজ' উপন্যাসটি পড়তে পারলে হয়তো উত্তর জানা যেত।
৭#
দুই টাইম ফ্রেমের দুইটি ইউনিভার্সের গল্প এটি। এখানে দেখা যায়, ভবিষ্যতের একটি ইউনিভার্সে পেঁয়াজের দাম হাজার টাকা কেজি। কিছু বিপথগামী বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করছে অতীতের পুরো সভ্যতাকে সেই ইউনিভার্সে নিয়ে যেতে। সেই ইউনিভার্স থেকেই অতীতে, মানে বিংশ শতাব্দীতে আসেন একজন দূত। তার একমাত্র চেষ্টা, পেঁয়াজের দাম বেশিওয়ালা সেই সময়ের দিকে এগিয়ে যাওয়া থেকে অতীতকে ঠেকানো। এমনই গল্প নিয়ে সাইন্স ফিকশন থ্রিলার, অনিয়ন পয়েন্ট!