ক্লাস টেনের এক স্টুডেন্টকে বাড়িতে গিয়ে পড়াই। সায়েন্স গ্রুপ। তিনটে সাবজেক্ট। সপ্তাহে তিনদিন, মাসে ১৫০০ টাকা।
তা আজ রাস্তায় দেখা হলো সেই স্টুডেন্টের বাবার সাথে। লকডাউন শুরু হবার পর সেই মাসের টাকা আর নেয়া হয়নি, সেটা দিয়ে দিলেন দেখা হয়ে গেলো বলে।
যদিও টাকাপয়সার ব্যাপারে সামনাসামনিই গুনে নেয়া উচিৎ, তাতে ভবিষ্যতে মনোমালিন্য হয় না। কিন্তু স্টুডেন্টদের স্যালারির ক্ষেত্রে কিছুতেই আমি সামনাসামনি টাকা গুনে নিতে পারি না। কেমন একটা লাগে। হতে পারে ক্লাস ১১-১২ এ আমাদের এক বায়োলজি টিচারের স্মৃতিই এর জন্য দায়ী। ভদ্রলোক মাইনে পেয়েই স্টুডেন্টদের সামনে যেভাবে প্রতিটা নোট গুনে নিতো তা পুরো স্কুল জুড়ে খিল্লির বিষয় ছিলো।
এখন স্টুডেন্ট বা গার্জেনদের সামনে টাকা গোনার কথা মনে হলেই সেই খিল্লির কথা মনে পড়ে যায়। যদিও টেকনিক্যালি সেটাই উচিত। তবুও সব উচিত কাজ তো সবসময়ই হয় না।
যাই হোক, বাড়িতে এসে দেখি ভদ্রলোক আমায় ২০০০ টাকা দিয়েছেন। নিশ্চয়ই ভুল করেছেন। ফোন করে বললাম যে টাকা ভুল দিয়েছেন আপনি। আমি ১৫০০ করে নিই, আপনি ২০০০ দিয়েছেন।
ভদ্রলোক ফোনের ওপাশে কয়েক মুহূর্ত চুপ থেকে, তারপর দুয়েকবার গলার মধ্যে কেমন যেন আওয়াজ করে শেষে উত্তর দিলেন,
‘ওর মা যে তবে আমার থেকে ২০০০ করেই নিতো তোমায় দেয়ার জন্য!’
লেখা: সংগৃহীত, মূল লেখককে ধরিয়ে দিন।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন