গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রোববার 'ময়ূরপঙ্খী' নামক বিমান ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পর ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে। প্রায় দুই ঘণ্টার টান টান উত্তেজনার পর উড়োজাহাজ ছিনতাইচেষ্টার অবসান ঘটে, সন্ধ্যা ৭টা ২৪ মিনিটে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মাত্র আট মিনিটের কমান্ডো অভিযানে উড়োজাহাজটিতে থাকা অস্ত্রধারী তরুণ নিহত হন (প্রথম আলো)।
এই গোটা ঘটনা নিয়ে নানান সূত্র থেকে পাওয়া যাচ্ছে নানা রকম তথ্য। একের পর এক নতুন তথ্য তো আসছেই! এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, ছিনতাইকারীর কাছে ছিল খেলনা বন্দুক! অফলাইন এবং অনলাইন সব জায়গার বিশেষজ্ঞরাই দিচ্ছেন অসংখ্য তত্ব। অনেকেই বলছে, বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনা একটা নাটক।
এতসব থিওরি দেখে শুনে আমরা ভাবতে চেষ্টা করেছিলাম, 'বিমান ছিনতাই' যদি সত্যিই একটি নাটক হয়, এবং সেই নাটকে যদি অভিনয় করেন বাংলার জনপ্রিয়তম জুটি অপূর্ব-মেহজাবিন, তাহলে কেমন হয়?
নায়ক অপূর্ব প্রচুর বেকার। সে সারাদিন চাকরি খোঁজে। ওদিকে নায়িকা মেহজাবিনের প্রচুর দুঃখ। সে সারাদিন কান্নাকাটি করে। সকালে ঘুম থেকে উঠে খাওয়াদাওয়া করে অপূর্ব যখন চাকরি খুঁজতে যায়, তখন মেহজাবিন ঘুম থেকে উঠেই কান্না শুরু করে। খাওয়া-দাওয়া করে সময় এবং চোখের জল কোনোটাই নষ্ট করে না।
কিন্তু মেহজাবিন যে অপূর্ব'র দুঃখে কান্নাকাটি করে, এমনটা না। তাদের আসলে এখনো দেখাই হয়নি৷ তার কাঁদতে ভাল্লাগে, তাই সে কান্না করে।
তারপর একদিন প্লেনের মধ্যে অপূর্ব আর মেহজাবিনের দেখা হয়। মেহজাবিন নাহয় বড়লোকের মেয়ে, সে বিমানেই যাতায়াত করবে। কিন্তু অপূর্ব কেন বিমানে উঠেছে সেটা তার ডেইলি দামি শার্ট পরার মতই অমীমাংসিত এক রহস্যের জন্ম দেয়।
পাশাপাশি বিমানের দুই সিটে বসে অনেকক্ষণ চোখাচোখি হয় দুজনের। দুজন দুজনের প্রেমে পড়ে যায়৷ তারপর দুজনই কথা না বলে বিমান থেকে নেমে যায়।
সুতরাং পরদিন থেকে অপূর্ব চাকরি খোঁজার পাশাপাশি মেহজাবিনকেও খুজতে শুরু করে। আর মেহজাবিনের কান্নার একটা কারণ পাওয়া যায়, সে অপূর্বকে মিস করছে বলে কাঁদছে!
সারা ঢাকা শহর খুঁজেও দেখা না হওয়ার পর হঠাৎ একটা শপিংমলে আবার দেখা হয় দুজনের। এদিন দুইজনই সাহস করে কথা বলে। ফোন নাম্বার দেয়া-নেয়া করে। সারারাত ফোনে কথা বলে, সকালে প্রেম হয়ে যায়। বিকালে জানতে পারা যায় যে অপূর্ব বেকার। আর মেহজাবিনের বাসা থেকে বিয়ে ঠিক করেছে।
অপূর্ব এটা ভেবে খুশি হয় যে, এবার একটা পাওয়ার ব্যাংক পাওয়া যাবে। কজ তার আইফোনে চার্জ থাকে না। আবার মেহজাবিনের বিয়ে হয়ে যাবে ভেবে দুঃখও পায় মেলা। দুয়েকদিন পর রিয়েলাইজ করে, দুঃখটাই বেশি। সে মেহজাবিনকে ছাড়া থাকতে পারবে না। আর মেহজাবিনকে পাওয়ার একটাই উপায়, দ্রুত চাকরি জোগাড় করা।
অপূর্ব জানে, এই দেশে হুটহাট চাকরি পাওয়ার একটাই উপায়। সেটা হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ। সে ইতোপূর্বে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া গোপালগঞ্জের ভ্যানচালক আর প্রধানমন্ত্রীর ছবি পরিস্কার করা যুবকের চাকরি পাওয়ার ব্যাপারটা দেখেছে। তাই সে সিদ্ধান্ত নেয়, প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করার জন্য বিমান ছিনতাই করবে।
যেই ভাবা সেই কাজ। সে একটা খেলনা পিস্তল নিয়ে বিমানে উঠে যায়৷ পুলিশ খবর পেয়ে ঘিরে ধরে বিমানবন্দর। এমন সময় অপূর্বর কাছে একটা ফোন আসে। সে জানতে পারে মেহজাবিনের ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়েছে।
এখন কী করবে অপূর্ব? সে কি বিমান ছিনতাইয়ে সফল হবে? সে কি চাকরি পাবে? মেহজাবিন কি বাঁচতে পারবে? মেহজাবিনের সাথে কি অপূর্বর বিয়ে হবে?
এসব জানতে হলে আপনাকে দেখতে হবে নাটক, 'বড় ছেলের বিমান ছিনতাই।' তবে সেটা কোথায় কোন চ্যানেলে (কিংবা কোন এয়ারপোর্টে!) দেখা যাবে, আমাদের জানা নেই। কেউ যদি এই লেখা পড়ে নাটক বানিয়ে ফেলে, তাহলে অবশ্য একটা চান্স আছে...
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন